অক্টোবরের ৬ দিনে দেশে রেমিট্যান্স গেলো ৩৫ কোটি ডলার

ঠিকানা অনলাইন : দেশে চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ছয় দিনে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স গেছে ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ (৩৫৭ মিলিয়ন) ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৩ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ১৮০ কোটি ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

অক্টোবর প্রথম ছয় দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ কোটি ৪৬ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩ লাখ মার্কিন ডলার আর বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৫৮ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচিত সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৮ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এরপর সোনালী ব্যাংকে ২ কোটি ৩১ লাখ, অগ্রণী ব্যাংকে ২ কোটি ২৫ লাখ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ২ কোটি ২১ লাখ এবং ডাচ্–বাংলা ব্যাংকে ১ কোটি ৯৪ লাখ প্রবাসী আয় এসেছে।

আলোচিত সময়ে সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কর্মাসিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বিভিন্ন ছাড় দেওয়ার পরও রেমিট্যান্সে গতি কম দেখা যাচ্ছে। ২০২২-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে ১৫৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই অংক গত ৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১৪৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
শুধু তাই নয়, প্রবাসী আয়ের এ অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার বা ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার।

চলতি অর্থবছরের টানা দুই মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স বৈধ পথে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত আগস্ট মাসে ২০৩ কো‌টি ৭৮ লাখ (২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। তার আগের মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। জুলাই মাসে পবিত্র ঈদুল আজহার কারণে দেশে বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছিল। তবে আগস্টে বড় উৎসব ছিল না, তারপরও প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়ায়।

চলতি বছরের প্রথম আট মাসের মধ্যে তিন মাস প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলারের বেশি ছিল। তবে সেপ্টেম্বরে এসে এই উল্লম্ফ হোঁচট খেয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে প্রায় ৫০ কোটি ডলার কমে গেছে।
প্রণোদনা ও ডলারের দাম বাড়ার পরও ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে বড় পতন হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এখন বিদেশ থেকে যেকোনো পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগে না। আবার প্রবাসী আয়ের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। ডলারের সংকট নিরসন ও প্রবাসী আয় বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেরাই বসে ডলারের দাম নির্ধারণ করছে। ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) যৌথ সভায় এ দাম নির্ধারণ করা হয়।

ঠিকানা/এম