ম. আমিনুল হক চুন্নু
পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছেই। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন হিস্ট্রির তথ্য অনুযায়ী, দুই হাজার বছর আগে পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল মাত্র ১৭০ মিলিয়ন। ১৯৯৯ সালে ৭.৭ বিলিয়ন। আর ২২ শতকের মধ্যে ১০ বিলিয়নে পৌঁছে যাবে। ১১ জুলাই ২০১৯ বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে জাতিসংঘ পৃথিবীর জনবহুল ২০ শহরকে চিহ্নিত করেছে।
আধুনিক নাগরিক জীবনের সুবিধা পেতে লাখ লাখ মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। জাতিসংঘের এক তালিকায় উঠে এসেছে পৃথিবীর সর্বাধিক জনবহুল শহরগুলো। প্রথম টোকিও, জাপান। দ্বিতীয় দিল্লি, ভারত। তৃতীয় সাংহাই, চীন। চতুর্থ সাও পাওলো, ব্রাজিল। পঞ্চম সেকো সিটি, মেকো। ষষ্ঠ কায়রো, মিসর। সপ্তম ঢাকা, বাংলাদেশ। অষ্টম মুম্বাই, ভারত। নবম মোহসিনা, লাইজু। দশম ওসাকা, জাপান। এগারোতম করাচি, পাকিস্তান। বারোতম চংকিং, চীন। তেরোতম বুয়েন্স আয়ারস, আর্জেন্টিনা। চতুর্দশতম ইস্তাম্বুল, তুরস্ক। পনেরোতম কলকাতা, ভারত। ষোলোতম লাগোস, নাইজেরিয়া। সতেরোতম ম্যানিলা, ফিলিপাইন। আঠারোতম তিয়ানজিন, চীন। উনিশতম রেওডি, জেনিরো, ব্রাজিল এবং বিশতম গুয়াংজু, চীন।

বর্তমানে ঢাকার জনসংখ্যা ২ কোটি ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫২। দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার লোকসংখ্যা। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহরের তালিকায় সপ্তম স্থানটি দখল করেছে ঢাকা। প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৩ হাজার মানুষ বসবাস করছে। তা ছাড়া ২০০০ লোক প্রতিদিন নগরে বসবাসের জন্য আসছে। ২০১৪ সালে শহরটির জনসংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখের বেশি ছিল। ১৯৯০ সালে এর জনসংখ্যা ছিল ৯৮ লাখের মতো। ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর গ্লোবাল সিটিস ইনস্টিটিউশন পরিচালিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ ঢাকা হবে বিশ্বের তৃতীয় জনসংখ্যাবহুল শহর। ওই সময় এর জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৩ কোটি ৫২ লাখ। এই শহরের এক-চতুর্থাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে এবং ৩ মিলিয়ন মানুষ বস্তিবাসী। তবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান তার এক বক্তব্যে বলেছিলেন, বিশেষ করে ঢাকা নগরের দারিদ্র্যের হার কমানোর জন্য স্বল্পমূল্যে বাসস্থান সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এটিকে সামাজিক নিরাপত্তা হিসেবে না দেখে বিনিয়োগ হিসেবে দেখলে নগরের দরিদ্রদের বাসস্থান ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
বাংলাদেশে যানজটের কারণ অনেক, তা সবারই জানা। এই সংকট নিরসনে স্বল্প মেয়াদে, কম খরচে কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়া অতীতে কাজ করা হয়েছে। তবে তা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। প্রধান প্রধান সড়কে ফুটপাত যদি দখলমুক্ত করা যায় আর অবৈধ পার্কিং যদি বন্ধ করা যায়, তাহলে যানজট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসবে। কিন্তু এখন উল্টো ঘটনা ঘটছে। ফুটপাত ও সড়কে বাজার বসানো হচ্ছে। কলম্বিয়ার মতো দেশের অবস্থা আমাদের দেশের চেয়েও খারাপ ছিল। কিন্তু তারা শুধু ফুটপাত দখলমুক্ত এবং অবৈধ পার্কিং বন্ধ করে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়েছে। আমাদের এখানে সবাই ভাবে মেগা প্রকল্প নিয়ে, এতে হয়তো অনেক লাভ আছে। তবে সাধারণ মানুষের কথা ভাবার মতো মানুষ নেই। অন্যদিকে যারা ব্যবহার করেন, তারা যদি নিজেরাই ট্রাফিক আইন মেনে চলেন, তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পথচারীরাও এখন বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা যত্রতত্র সড়ক পার হওয়ায় রাস্তার গতি কমে যাচ্ছে অধিকাংশ সময়। রাজধানীর গণপরিবহন-ব্যবস্থা সত্যিকার অর্থে গড়ে ওঠেনি। বাস কোম্পানিগুলো যাত্রী পেতে প্রতিযোগিতা করে। তারা সড়ক আটকে যাত্রী পাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে চলাচলই বন্ধ করে দেয়। তা ছাড়া ঢাকা শহরে যানজটের কারণে প্রতিদিন ৯ হাজার কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এই যানজটে বছরে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলার; যা টাকার অঙ্কে সাড়ে ৪২ হাজার কোটি টাকা বলে বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায় প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ট্রাফিক জ্যামের কারণে রাজধানীতে ঘণ্টায় গড়ে গাড়ির গতি ৬.৪ কিলোমিটার এবং হাঁটার গতি ৫ কিলোমিটার। আর বিশ্বের কাছে ঢাকা হলো রিকশার রাজধানী। যেখানে আট লাখের বেশি রিকশা আছে। এ বিষয়ে এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, শুধু যাতায়াতে নষ্ট হওয়া কর্মঘণ্টা বাঁচাতে পারলে ঢাকাকে আরো উন্নত করা সম্ভব। কর্তৃপক্ষেরও কিছু দুর্বলতা রয়েছে, যেমন মানুষের ধারণক্ষমতা, গাড়ি পার্কিং, রাস্তার প্রশস্ততাসহ অন্যান্য সম্ভাব্যতা যাচাই না করেই অনেক বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া। সুষ্ঠুভাবে যান চলাচল নিশ্চিত করতে একটি নগরীর মোট আয়তনের ২০ শতাংশ রাস্তা থাকা প্রয়োজন। অথচ ঢাকা মেগা সিটিতে সড়কের পরিমাণ রয়েছে ৭-৮ শতাংশের কাছাকাছি। রাস্তার পরিমাণ বাড়াতে পারলে তা হতে পারত যানজট সমস্যা সমাধানের অন্যতম উত্তম পদক্ষেপ। অবশ্য এর জন্য বিভিন্ন সংস্থা ও দফতরের মধ্যে সমন্বয়হীনতাও দায়ী। ঢাকাকে উন্নত ও বাসযোগ্য করতে হলে সমন্বয় ও সুশাসন প্রয়োজন বলে বিভিন্ন সিটির মেয়ররা মনে করেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা দেশে এবং বিশ্ব মিডিয়ার নজর কেড়েছে। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী হয়রানি, চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, বিমান হাইজ্যাক, ভিক্ষুকদের অত্যাচারে পর্যটকদের ভ্রমণে অনীহা, ঢাকা যেন তারের শহর, কবর নিয়ে বাণিজ্যÑএসব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা প্রাচীন ঢাকা নগরীর ঐতিহ্য হারাচ্ছে বলে অনেক পরিবেশ বিজ্ঞানীসহ গবেষক ও প্রবাসীদের অভিমত। তারা বলেন, বিমানবন্দরে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ২৬ লাখ ৭৩ হাজার ৮৬১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি বিশ্বের আনাচ-কানাচে বসবাস করছেন। প্রবাসীরা দেশে ফেরত আসার সময় প্রতিনিয়ত বিমানবন্দরে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তার অসদাচরণ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অসংখ্য অভিযোগ, বছরের পর বছর সংবাদ প্রকাশ, মন্ত্রিপর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সিভিল এভিয়েশনের কড়া তদারকি, প্রশাসনিক নজরদারিসহ গোয়েন্দা বিভাগগুলোর নানামুখী তৎপরতার পরও বন্ধ হচ্ছে না হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী হয়রানি।
কিন্তু বিমান হাইজ্যাকের ঘটনা তো অন্য রকম এবং কেন সরকারি ভাষ্যে এমন গরমিল, কেন এমন বৈপরীত্য? এসব বিপরীতমুখী ভাষ্যের উল্লেখ করে একজন সাংবাদিক লিখেছেন, একটা ঘটনার এত ভার্সন হয়? কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছি না। সব তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। যারা এই বিমান উদ্ধার অভিযানে সম্পৃক্ত ছিলেন, কমান্ডো বাহিনী এবং তাদের পেছনের কর্মকর্তারা যে যার মতো করে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। ফলে তাদের তথ্যগুলো বিভিন্ন ধরনের হয়ে গেছে। তাদের তথ্যে ছিনতাইকারীর নাম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে। তার অনেকগুলো নাম পাওয়া গেলেও বিমানের টিকিটে কী নাম ছিল, তা কেউ নিশ্চিত করেননি। কেউ বলেছেন, বিমানের ভেতরে গুলির শব্দ শোনা গেছে কিন্তু অভিযান পরিচালনাকারীরা এ তথ্য নাকচ করে দিয়েছেন। আর বেশি উদাহরণের দরকার নেই। কর্তৃপক্ষীয় মহলের এ ধরনের কথাবার্তাকে দায়িত্বহীন বা অসংলগ্ন অভিহিত করাই মনে হয় যথেষ্ট নয়। একই ঘটনায় এসব পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দেশের প্রশাসনের দক্ষতাকে যে দারুণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, এ সত্য অস্বীকার করার আর উপায় নেই। অন্যদিকে গভীর রাতে (২০ ফেব্রুয়ারি ১৯) পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনে প্রাণ হারাল ৮১ জন। লোভ আর অব্যবস্থাপনার শিকার এরা সবাই। তা ছাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়েছে, ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি গলিতে পানির স্বল্পতা, যন্ত্রপাতি নিয়ে যেতে না পারা ইত্যাদি কারণে এত প্রাণহানি। তবে চকবাজারে এমন ভয়াবহ আগুন কীভাবে লাগল, কীভাবে তা বিস্তার লাভ করল ইত্যাদি বিষয়ে কর্তৃপক্ষীয় দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। তবে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা যখন বলেছেন আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে ইদ্রিছ ভবনের নিচতলায় থাকা দাহ্য রাসায়নিক দ্রব্য থেকে, তখন সরকারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ওই ভবনে কোনো রাসায়নিক দ্রব্য ছিল না। আগুনের সূত্রপাত হয়েছে ভবনের বাইরে একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে। যাহোক, এ ব্যাপারে সরকার একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। দেখা যাক তারা কী বলে!
রাজধানী ঢাকা ঝুলন্ত তারে জ্বলন্ত জঞ্জাল। হায় রে তার! ঢাকা যেন তারের শহর, তারের গলি, তারের মেলা। ফুটপাত বা রাস্তা ঘেঁষে বিদ্যুতের খুঁটি বা ল্যাম্পপোস্টে তার ঝুলতে দেখা যায়। তারের মেলা এত বেশি। তাই সেখানে বাসা বেঁধেছে কাক। তারের জঞ্জাল কাকের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হলেও এই তার গোটা শহরের সৌন্দর্যকে ম্লান করেছে, তেমনি বাড়াচ্ছে নিরাপত্তাঝুঁকিও। যদিও তার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরকারি পর্যায়ে আছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিহিত করারও প্রস্তুতি। কিন্তু এর বাস্তবায়ন দেখা মিলছে না। তবে ফকিরাপুল, আরামবাগ, মতিঝিলসহ আশপাশের সব ঘিঞ্জি এলাকায় এ রকম চিত্র দেখা গেছে। মনে হয়, গোটা নাগরিক জীবন ঘেরা তারে। বিশ্বের উন্নত শহরগুলো যখন তারবিহীন কার্যক্রম পরিচালনায় যুগের পর যুগ অতিক্রম করছে, তখন আমাদের প্রস্তুতি পর্বই শেষ হচ্ছে না। প্রশ্ন হলো, মাটির ওপর এত কিসের তার? অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনুমোদনশীল তারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যে যার ইচ্ছামতো বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় তার ঝুলিয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে নগর কর্তৃপক্ষসহ কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।
এদিকে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে কবর নিয়ে চলছে বাণিজ্য। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে কবরের চাহিদা বাড়ার সুযোগে নিয়ম না মেনেই লাশ দাফনের জন্য নেওয়া হচ্ছে বাড়তি টাকা। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রায় ৩০৬ বর্গমাইল এলাকায় বাস করে এক কোটির বেশি মানুষ। নগরীগুলোর হিসাবে, প্রতিদিন মারা যায় ৯০ জন মানুষ। তাদের রয়েছে ৬টি কবরস্থান। সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দাফনের ফি নেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। শুধু লাশ দাফনই নয়, কবর পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণের নামেও চাওয়া হয় বাড়তি টাকা। রাজধানীর আজিমপুর ও মিরপুর কবরস্থান ঘুরে একজন প্রত্যক্ষদর্শী তার অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, কবরস্থানগুলোতে সিটি করপোরেশনগুলোর কর্মী নন, এমন অনেকে কাজ করছে। কেউ কবর খুঁড়ছে, আবার কেউ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে। প্রতিটি কবরস্থানের জন্য কর্তৃপক্ষ ১৫ থেকে ২০ জন কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকলেও সিন্ডিকেটের সদস্য রয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জন। নগর কর্তৃপক্ষ নিয়োগ না দিলেও তারা নিজেদের সহায়ক কর্মী বলে দাবি করে। নীতিমালা থাকলেও চলছে অনিয়ম।
অন্যদিকে ভিক্ষাবৃত্তি একটি দেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। ভিক্ষাবৃত্তির ফলে বিমানবন্দর এবং নগরীর ভিআইপি এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং দেশে পর্যটক আসা প্রতিবছর হ্রাস পাচ্ছে। তবে বেসরকারি হিসাবে সারা দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখেরও বেশি। কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তির মতো অমর্যাদাকর পেশা থেকে এই জনগোষ্ঠীকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে ঢাকা নগর কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে, ঢাকাকে ভিক্ষুকমুক্ত করার পাশাপাশি ভিক্ষাবৃত্তি থেকে দেশকে মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১০ সালে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। গত ১০ বছরেও এই প্রকল্প থেকে কাক্সিক্ষত ফল আসেনি। বাংলাদেশের সংসদ সদস্যরা (এমপি) তাদের কর্তৃত্ব হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কায় শহরের বিকেন্দ্রীকরণে বাধা দিচ্ছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে লন্ডনের এক প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ পত্রিকাটির এশিয়া সংস্করণে ‘লাইক আফটার ঢাকা’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭৪ সালে মাত্র ৯ শতাংশ বাংলাদেশি নগর বা শহরে বাস করতেন। বর্তমানে দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৩৭ শতাংশ মানুষ শহুরে। আগামী কয়েক দশকে দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ শহরে বাস করবে। রাজধানী ঢাকা বেশির ভাগ গ্রামীণ অভিবাসীকে আকৃষ্ট করে। ১৯৮০ সালে ৩০ লাখ, বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ। এটি ‘ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণোন্মুখ’ বলে একজন গবেষক মন্তব্য করেছেন। অন্যদিকে ঢাকায় শ্রমিকের চাপ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছে। গত এক দশক ধরে বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ। দেশের মোট জিডিপির ৩৫ শতাংশই ঢাকার অবদান। ক্রমবর্ধিষ্ণু গার্মেন্ট শিল্প থেকেই আসছে ১১ শতাংশ জিডিপি। গার্মেন্ট বিপুলসংখ্যক অভ্যন্তরীণ অভিবাসীকে ধারণ করছে। তবে প্রবৃদ্ধি এসেছে একটি চড়া দামে।
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ইনডেক্স অনুসারে, ট্রাফিক জ্যাম ও দূষণের জন্য কুখ্যাত ঢাকা। বিশ্বের বাস অযোগ্য শহরের তালিকায় তৃতীয়। জাতিসংঘের বিজ্ঞানীদের একটি প্যানেল হুঁশিয়ার করেছে, মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের পরিণতিতে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে দ্রুত সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে এবং বরফ গলছে। মেরু অঞ্চলে বরফের আচ্ছাদন বিলীন হওয়ার কারণে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। আবাসস্থল বদলাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তুর। এই শতকের শেষ ভাগে যদি বিশ্বের তাপমাত্রা ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়, তার পরিণতি কী হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, কোনো সন্দেহ নেই, সাগর-মহাসাগরের উচ্চতা ১৯৭০ সাল থেকে অব্যাহতভাবে বাড়ছে। মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের ফলে পরিবেশে যে বাড়তি তাপ তৈরি হচ্ছে, তার ৯০ শতাংশই শুষে নিচ্ছে সাগর। ১৯৯৩ সাল থেকে শুষে নেওয়ার তাপমাত্রা দ্বিগুণ হয়েছে। সেই সঙ্গে গলছে গ্রিনল্যান্ড এবং অ্যান্টার্কটিকার বরফ, বেড়েছে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে হারে অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলছে, আগের ১০ বছরের তুলনায় তা তিনগুণ। বিশেষ করে, আন্দিজ, মধ্য ইউরোপ এবং উত্তর এশিয়ায় যেসব হিমবাহ রয়েছে, সেগুলোর বরফ ২১০০ সাল নাগাদ ৮০ শতাংশ গলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর বরফ গলা এই পানি গিয়ে পড়ছে সাগরে। ফলে আগামী দশকগুলোয় সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা আরও বাড়বে। আইপিসিসির নতুন এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২১০০ সাল নাগাদ সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা ১১ মিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে, যা আগের ধারণার চেয়ে অন্তত ১০ সেন্টিমিটার বেশি। এতে ঢাকাসহ মহাঝুঁকির মুখে পড়বে বিশ্বের বেশির ভাগ বড় বড় শহর।
বাংলাদেশে নারী ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েছে। একটু বেশিই বেড়েছে। ধর্ষকদের চরম শাস্তি দেওয়ার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ইত্যাদি চলছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফেনীর নুসরাত হত্যাকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করেছেন। মাদ্রাসার ধর্ষক প্রিন্সিপালসহ তার সহযোগীদের বিচারে ফাঁসির আদেশ হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে রাস্তায় অসতর্কভাবে পেয়ে এক মাদকাসক্ত সিরিয়াল রেপিস্ট ধর্ষণ করেছে। ওই ঘটনার পরপরই ঢাকার ধামরাই উপজেলায় বাসে মমতা আখতার নামের ১৯ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রাস্তায় তার লাশ ফেলে রাখা হয়। অন্যদিকে দেখা যায়, উন্নত পশ্চিমা দেশগুলোতেও ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, শিশুর ওপর যৌন নির্যাতন বেড়েছে ব্যাপকহারে। শিশু নির্যাতনের ব্যাপারে বিখ্যাত লোকেরা অভিযুক্ত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে এমপি, আদালতের বিচারপতিরাও রয়েছেন। সম্প্রতি এক সিরিয়াল রেপিস্টকে ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমনকি অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজের ছাত্রছাত্রীদের ওপর যৌন হয়রানি, যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এটাকে বলা হয় ‘ডেট রেপ’। যার অর্থ ডেটিং করার নামে সহপাঠিনীকে ভুলিয়ে এনে তার পানীয়তে মাদকদ্রব্য মিশিয়ে, তাকে অর্ধচেতন করে ধর্ষণ করা। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তো হরহামেশা এই ‘ডেট রেপিংয়ের’ অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহুদিন এই ডেট রেপিংয়ের ব্যাপারে উদাসীন ছিল। এখন ছাত্রীদের সংঘবদ্ধ আন্দোলনের ফলে এবং ডেট রেপিংয়ের সংখ্যা বাড়ায় তারা কড়া হতে বাধ্য হয়েছেন। এমন অভিযোগও শোনা যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একশ্রেণির শিক্ষকদের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হন অনেক ছাত্রী। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের ফার্স্ট ক্লাস দেওয়া হবে না অথবা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবেÑএই ভয় দেখিয়ে শিক্ষক মহোদয় তার যৌন কামনা পূরণ করেন। শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী নিপীড়নের এক ঘটনায় ঢাকার ভিকারুননিসা নুন স্কুলে কিছুদিন আগে তো রীতিমতো ঝড় উঠেছিল। অনেকে বলেন, সামাজিক ব্যবস্থার এই অবক্ষয় দূর করার জন্য রাজনীতিকদের তৎপর হওয়া উচিত। এর জবাব হচ্ছে, যে সরষের দ্বারা ভূত তাড়ানো হবে, সেই সরষের মধ্যে ভূত ঢুকলে তা তাড়াবে কে? তাই আমার কথা, শুধু কঠোর আইন করে, ধর্ষকদের ফাঁসি দিয়ে এই অপরাধ দমানো যাবে না। ধর্ষণ সামাজিক অবক্ষয়ের ঘৃণ্য বহিঃপ্রকাশ। এর থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হলে সমাজের দূষণ মুক্তি দরকার এবং নারীকে সম্মান জানাতে হবে। তার ব্যক্তি অধিকারের সীমানা লঙ্ঘন করা চলবে না। এসব কথা শুধু কাগজেই লেখা থাকলে চলবে না। এই নৈতিক শক্তির পুনর্জাগরণ ঘটাতে হবে। ছাত্র ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হারানো নৈতিক শক্তি ফিরিয়ে আনতে হবে।
সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আসছে, জয়ীও হয়েছে। চূড়ান্তভাবে জয়ী হয়েছে বলা যায় না। প্রকৃতিও সুযোগ পেলে মানুষের ওপর আঘাত হানে। মানুষের সামনে অসহায় পৃথিবীর আবহাওয়া ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে দ্রুত। নিত্যনতুন রোগজীবাণু জন্ম নিচ্ছে, উন্নত-অনুন্নত নির্বিশেষে দেশগুলোয় একেকটা ভয়ংকর রোগের মহামারি দেখা দিচ্ছে। এখন সারা বিশ্ব আতঙ্কিত চীন থেকে আসা করোনাভাইরাসের প্রকোপে। মৃত্যুদূতের মতো এই ভাইরাস সর্বত্র ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশ এতকাল ধরে পরিচিত ঝড়-বন্যার দেশ হিসেবে। ব্রিটেন পরিচিত ঠান্ডার দেশ, বরফ ও তুষারপাত এবং তুষার ঝড়ের দেশ হিসেবে। এখন প্রকৃতি ও আবহাওয়া বদলাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিজ্ঞানী ও আবহাওয়াবিশারদেরা ভয় করছিলেন। বাংলাদেশে এবার ব্রিটেনের মতো বরফ পড়েছে কোনো কোনো স্থানে। শীতে মানুষ মারা গেছে। আর ব্রিটেনে গত তিন-চার বছর ধরে বাংলাদেশের মতো ঝড়-বৃষ্টি-প্লাবন শুরু হয়েছে। লন্ডন ও আমেরিকায় দেখেছি, সামারে ঘরে ঘরে ইলেকট্রিক ফ্যান চালাতে হয়। ওরা এই সামারকে নাম দিয়েছে ইন্ডিয়ান সামার। ব্রিটেন ও ফান্সে এখন অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং বন্যা লেগেই আছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ভূতত্ত্ববিদদের কেউ কেউ বলেছেন, বাংলাদেশের বহু এলাকায় নিচ থেকে মাটির স্তর সরে যাচ্ছে। নদী তার অদৃশ্য এলাকা বাড়াচ্ছে। এই সতর্কবাণী যে উপেক্ষা করার মতো নয়, তার একটা বড় প্রমাণ কিছুকাল আগে চাঁদপুর শহরে এক-এক করে তিনটি ভবন হঠাৎ মাটির নিচে তলিয়ে যেতে থাকে। এর কিছুকাল পর ঢাকা শহরেও অনুরূপ ঘটনা ঘটে। বাড়ি হেলে পড়তে থাকে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরের তলদেশ থেকেও মাটির স্তর সরে যাওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে বলে কোনো কোনো ভূ-বিশেষজ্ঞ বলেছেন। প্রকৃতি দূষণের আরও একটা বিপজ্জনক দিক হলো পুরোনো রোগ ও নতুন রোগের মহামারি আকারের প্রাদুর্ভাব। এখন আণবিক বোমার চাইতেও যে ভয়ানক শত্রু বিশ্বের উন্নত-উন্নয়নশীল নির্বিশেষে বহু দেশের দুয়ারে এসে দাঁড়িয়েছে, তার নাম করোনাভাইরাস। চীনের একটি প্রদেশ থেকে তার উৎপত্তি। এখন বিশ্বের প্রায় সব দেশেই তা ছড়িয়েছে। বাংলাদেশের ঢাকায়ই বেশি রোগী আক্রান্ত হচ্ছে এবং ডাক্তাররা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। যথেষ্ট সচেতনতার অভাব রয়েছে বলে জানা যায়। তবে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া সম্পর্কে সারা বিশ্বে সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে। আণবিক বোমার চাইতেও এই করোনাভাইরাসকে ভয়ংকর বললাম এ জন্য যে, এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা জরুরি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তা ছাড়া সারা বিশ্বের পরিবেশ ও আবহাওয়া এমনভাবে দূষিত হচ্ছে যে এখনই তার প্রতিকার ব্যবস্থা না হলে সারা বিশ্বে বিপর্যয় দেখা দেবে। ঢাকা বিশ্বের ঘনবসতিতম শহর, ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় সবচেয়ে বেশি। ঢাকা ভূমিকম্প-ভবনধস-অগ্নিকাণ্ড-জলাবদ্ধতার মতো প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের লীলাভূমি হওয়ার সঙ্গে এ শহরের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতারও যোগাযোগ আছে। ঢাকার পানির স্তর যত নেমে যাচ্ছে, ততই এই শহর পরিত্যক্ত অবস্থার দিকে গড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্পদের অভাব নয়, সম্পদের ভুল ও স্বার্থতাড়িত ব্যবহারই ঢাকার দুর্ভাগ্যের জন্য দায়ী। ঢাকা নগরায়ণের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সঠিকভাবে মোকাবিলা না করা গেলে তা বিশ্বের জন্য অর্থনৈতিক ও মানবিক হুমকি সৃষ্টির কারণ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক পরিষদের বৈশ্বিক স্বাস্থ্যবিষয়ক অধ্যাপক থমাস বলিকি জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নগরায়ণ দ্রুত হারে বাড়ছে। গত ১০ বছরে ঢাকায় গড়ে প্রতিবছর আবাসন গড়ে তুলছে ৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। বিশ্বের সবচেয়ে অনিরাপদ শহরের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা (সেপ্টেম্বর ২০১৯, ঠিকানা)। ঔপনিবেশিক সরকার মনে করেছিল, একদিন তারা চলে গেলে উপমহাদেশের মানুষ ব্রিটেনের মতো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশ চালাবে। সে জন্য তারা দেশবাসীকে গণতন্ত্র শিখিয়ে স্বশাসিত স্থানীয় সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে। ইউনিয়ন বোর্ড ও মিউনিসিপ্যালিটিতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। কিন্তু দেখেন তাদের সে আশায় গুড়ে বালি। কোনো অগ্রগতি নেই। ১৯১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলার গভর্নর তার প্রতিবেদনে বলেন, পৌরসভাগুলোতে ৩০ বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এখন আমরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া স্বশাসিত স্থানীয় সরকারব্যবস্থায় নাগরিকেরা কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। নির্বাচিত কমিটির সদস্যরা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন তার আত্মা এসে দেখে যাক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে কি না।
লেখক : গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, নূরজাহান মেমোরিয়াল মহিলা ডিগ্রি কলেজ, সিলেট। (পিএইচডি ফেলো)