অনিয়ম নিয়ে এটর্নী জেনারেলের কাছে ৯ অভিযোগ

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন নিয়ে আরো অনিশ্চয়তা

ঠিকানা রিপোর্ট : আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়লো প্রবাসের মাদার সংগঠন হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন। বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী গত ২১ অক্টোবর নির্বাচন হবার কথা ছিলো। কিন্তু নয়ন- আলী প্যানেলের ২ জন সদস্য জে চৌধুরী, আকবর আলী ও সাধারণ সদস্য সফিকুল ইসলাম এবং সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওসমান চৌধুরীর মামলার কারণে মাননীয় আদালত সোসাইটির নির্বাচন স্থগিত করেন। ওসমান চৌধুরীর মামলায় নির্বাচন বন্ধে প্রভাব না পড়লেও নয়ন- আলী প্যানেলের ২ সদস্য ও ১ জন সাধারণ সদস্যের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত করা হয় নির্বাচনের মাত্র ৪ দিন আগে অর্থাৎ ১৮ অক্টোবর। নির্বাচন স্থগিতের কারণে নির্বাচন কমিশনের
মোটা অংকের ক্ষতিও হয়। কারণ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি তার আগেই সম্পন্ন করেছিলো। অসম্পূর্ণ মনোনয়ন পত্রের কারণে নির্বাচন কমিশন নয়ন- আলী প্যানেলের ২ জন সদস্যের মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করে। তারা তাদের মনোনয়ন পত্রের বৈধতা দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার সর্বশেষ শুনানী অনুষ্ঠিত হয় গত ৮ জানুয়ারি। শুনানীতে মাননীয় আদালত ৬০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির দিন ধার্য করে। অন্যদিকে ওসমান চৌধুরীর মামলাটিও চলছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানী আগামী ১৯ মার্চ।
এদিকে ওসমান চৌধুরী বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ এনে নিউইয়র্কের এটর্নী জেনারেল ল্যাটেশিয়া জেমসের অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন গত ৭ মার্চ দুপুরে। ওসমান চৌধুরী ঠিকানাকে বলেন, আমি সুনির্দিষ্টভাবে ৯টি অভিযোগ দাখিল করেছি। এটর্নী জেনারেল ল্যাটেশিয়া জেমসের সাথে আমার কথা হয়েছে। তার পরামর্শ অনুযায়ীই আমি অভিযোগ দাখিল করি। এ সব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে সোসাইটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সংবিধান লংঘন করে ভোটার বানানোর প্রক্রিয়া, বাংলাদেশ সোসাইটি হচ্ছে একটি অলাভজন সংগঠন। অলাভজনক সংগঠন অর্থ দিয়ে ভোটার বানাতে এবং প্রার্থীদের মনোনয়ন ফি ধার্য করতে পারে না। এ ছাড়াও নির্বাচনী প্রতিদ্ব›দ্বী রব- রুহুল, নয়ন- আলী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রব মিয়া, রুহুল আমিন সিদ্দিকী, কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, মোহাম্মদ আলী, স্বতন্ত্র সভাপতি প্রার্থী জয়নাল আবেদীন, বাংলাদেশ সোসাইটি এবং নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন কালীন সময়ের তিন মাসের ব্যাংক এস্টেটমেন্ট চাওয়া হয়েছে।

ওসমান চৌধুরী আরো বলেন, আমি লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টও এটর্নী জেনারেল অফিসে জমা দিয়েছি। যার মধ্যে রয়েছে একাধিক ভোটারের বিষয়টি, অর্থ না দিয়েও ভোটার হবার বিষয়টি। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট লোকজনের অভিযোগও দাখিল করা হয়ছে। ঠিকানার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটর্নী জেনারেল এই বিষয়ে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, এটর্নী জেনারেলের অফিস থেকে এ সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তেরও আশ্বাস দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ্এ সব অভিযোগের কারণে আমি যে মামলা করেছি, সেই মামলার নম্বরও এটর্নী অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলার রায় কি হবে তা আমি জানি না। তবে এটর্নী জেনারেলের অফিসে এই অভিযোগের কারণে সোসাইটির নির্বাচন আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়লো। কারণ এটর্নী জেনারেল অফিস তদন্তে নামলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। নির্বাচনে অনিয়ম নিয়েই যেহেতু অভিযোগ সেহেতু অভিযোগের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে বলে আমার মনে হয় না। তিনি বলেন, নির্বাচনের পূর্বেই আমি এ সব অভিযোগের কথা সোসাইটির কার্যকরি কমিটি এবং নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। কিস্তু সোসাইটির কর্মকর্তা এবং নির্বাচন কমিশন আমার চিঠির কোন উত্তর দেননি। সেই সময় আমি বলেছিলাম, আমার চিঠির উত্তর না দিলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সেই অনুযায়ীই আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমি সিদ্দিকী বলেন, এটর্নী জেনারেলের অফিসে অভিযোগের কথা শুনেছি। তবে কোন কাগজপত্র পাইনি। তিনি বলেন, সোসাইটির যে কোন সদস্য তার চোখে যদি অনিয়ম দেখা দেয় সে মামলা করতে পারে। সোসাইটির কর্মকর্তা হিসাবে সেই মামলা বা অভিযোগ আমরা আইনগতভাবে মোকাবিলা করবো।