রাজনৈতিক ডেস্ক : জনগণকে সুসংগঠিত করে পাঁচ দফা দাবি আদায় এবং লক্ষ্য বাস্তবায়নে শান্তিপূর্ণ ও অহিংস গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে চায় বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। গতানুগতিক হরতাল, অবরোধ ও ঘেরাও কর্মসূচির পরিবর্তে সম্প্রতি গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের কোটা ও নিরাপদ সড়ক চাই-এর আদলে আন্দোলন করতে চান ঐক্যের নেতারা। ব্যাপক পরিমাণ জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথ দখলে নিতে চান। আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের বৈঠকের পর যুগপৎ আন্দোলনের এমন কর্মসূচি নির্ধারণ হতে পারে বলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত নাগরিক ঐক্যের সিনিয়র এক নেতা এ তথ্য জানান।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত বিভিন্ন দলের নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নাগরিক সমাবেশ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা, ইভিএম ব্যবহার বাতিল ও বর্তমান সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি মেনে না নিলে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে নামতে চায় বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। এর আগে সমমনা আরও কিছু দলকে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে জোর প্রচেষ্টা চালাবেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
সূত্রমতে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করে আসছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ (খালেকুজ্জামান), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (পীর চরমোনাই), হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফী বাদে এই জোটের সঙ্গে অধিকাংশ শরিক ইসলামি দল। এসব দলকে সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনে মাঠে নামানোরও জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা। এরই অংশ হিসেবে বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম শরিক গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, হেফাজতের অন্যতম শরিক মাওলানা নূর মোহাম্মদ কাসেমীর নেতৃত্বাধীন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও শরিয়া আন্দোলন নামের ইসলামি দল জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে যোগ দেয়। আগামী সিপিবি, বাসদ (খালেকুজ্জামান) ও ইসলামী আন্দোলন সমাবেশে যোগ না দিলেও সরকারবিরোধী যুগপথ আন্দোলনের জন্য দলগুলোর শীর্ষনেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপিসহ বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর গণফোরামের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে জাতীয় ঐক্য জেলা, উপজেলা, গ্রামপর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃৃত করার জন্য আহ্বান জানান তিনি। ড. কামাল বলেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বর্তমানে সারা দেশে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে। এই ঐক্য তৃণমূলের সর্বস্তরে পৌঁছে দিতে হবে।