স্পোর্টস রিপোর্ট : হাসপাতাল রোডের খালেকুজ্জামান সড়কের মোড়ে বিশাল সাইজের কংক্রিটের তৈরি ফুটবল, কক্সবাজার ঢুকলেই চোখে পড়বে। সাদাকালো রঙয়ের ফুটবলটি কক্সবাজারের শোভা বাড়িয়েছে। প্রথম দেখায় বোঝা যায় এই শহরে ফুটবল উৎসবের ছোঁয়া লেগেছে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল সিলেট হয়ে এখন সমুদ্র সৈকতের শহরে। টুর্নামেন্টের দুটি সেমিফাইনাল আগামী ৯ এবং ১০ অক্টোবর। ফিলিপাইন ও তাজিকিস্তান এবং বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিন, চার দেশ এখন এক সঙ্গে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকতের পাড়ে।
কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে জড়িতরা জানাচ্ছেন এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবলে পুরুষদের লড়াইয়ের খেলা হতে যাচ্ছে। এর আগে ২০১০ সালে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছিল এই মাঠে। যে মাঠে গত ৯ অক্টোবর ফিলিপাইন ও তাজিকিস্তান প্রথম সেমিফাইনাল এবং ১০ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিন দ্বিতীয় সেমিফাইনাল হবে।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামটি নতুন সাজে সাজানো হচ্ছে। রঙ করা হয়েছে। স্টেডিয়ামে পা রাখলেই চকচকে নতুর রঙের গন্ধ ছড়াবে। দুই বছর আগে গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে। এখনো আছে সেই পুরনো ভাঙা গ্যালারিও। ভয় আছে দর্শক চাপ নিয়ে। ধারণক্ষমতা মাত্র ৯ হাজার। ২০১০ সালে মেয়েদের খেলায় হাজার হাজার দর্শক ঢুকতে পারেনি বলে আক্ষেপ আছে তাদের। সাধারণ গ্যালারি ১০০ চেয়ার ২০০ টাকা করে টিকিট করা হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর বিকেলে স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা গেল তরুণ দর্শকরা টিকিট কিনছেন। বঙ্গবন্ধু ছবি সংবলিত ভ্রাম্যমাণ গাড়ি শহর ঘুরে ঘুরে জানাচ্ছে টুর্নামেন্টের কথা।
সমুদ্র থেকে খুব বেশি দূরে নয় স্টেডিয়াম। হাঁটার পথ। স্টেডিয়ামের চার দিকে মনোরম পরিবেশ। সমুদ্র পাড়ের গোধূলি লগ্নে উঁকি দেয়া শীতের স্নিগ্ধ বাতাস মুগ্ধ করে। ফুটবলাররাও ঘুরে ঘুরে উপভোগ করছেন এমন পরিবেশ। কক্সবাজারের ফুটবল অনুরাগীরা তাদের লড়াই দেখার অপেক্ষায় মুখিয়ে আছেন।
স্টেডিয়ামে জোরেশোরে প্রস্তুতি চলছে। কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, বিজন বড়ুয়াসহ অন্য কর্মকর্তারা মাত্র ১০-১২ দিনের নোটিশে মাঠ প্রস্তুত করাসহ সব কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। সাবেক ফুটবলার মোহমেডানের বিজন বড়ুয়া, সাবেক ফুটবলার ভিক্টোরিয়ার জসিম উদ্দিনসহ অন্যান্য কর্তারা দর্শকদের উদ্দেশে বিনীত স্বরে বললেন, ‘ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন। এত স্বল্পসময়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলের প্রস্তুতি হয় না।’
বাফুফের মাঠ কর্মী চাঁন মিয়া জানালেন সিলেটের মাঠের চেয়ে কক্সবাজারের মাঠ অনেক ভালো। পানি জমে না। সিলেটের মতো কাদা হয় না। এই মাঠে এক সময় আসলাম, পাকির আলী, কায়সার হামিদরা খেলেছেন। কক্সসিটি এফসির সভাপতি, কক্সবাজার জেলা ফুটবলের প্রথম অধিনায়ক ইকবাল মাহমুদ শামসুল হুদা বললেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রায় সব খেলোয়াড় এ মাঠে খেলে গেছেন। বর্তমান জাতীয় দলের তৌহিদুল আলম সবুজ, সুশান্ত ত্রিপুরা, ইব্রাহিম এবং গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো খেলছেন।
১৯৫৬ সালে নির্মিত এই স্টেডিয়াম এখনো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উপেক্ষায়। বিশাল সমুদ্র সৈকতকে পুঁজি করে আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ এবং ফ্লাড লাইট স্থাপন করে আন্তর্জাতিক খেলা দেয়া হলে বিদেশিদেরও আগ্রহ বাড়বে। এমন মত দিলেন স্থানীয়রা।