আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি অভিভূত

চিটাগাং এসোসিয়েশন ও সমিতির সভায় উপমন্ত্রী নওফেল

ঠিকনা রিপোর্ট : আপনাদের সংগঠন চিটাগাং এসোসিয়েশনের কথা বাবার কাছে শুনেছি। বাবা যখনই আমেরিকায় আসতেন তখনই চিটাগাং এসোসিয়েশনের কোন কিছু সাথে নিয়ে যেতেন। আমি দেখতাম। আজকে আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি আনন্দিত এবং অভিভূত। গত ১৬ মার্চ সন্ধ্যায় চিটাগাং এসোসিয়েশন আয়োজিত সংগঠনের নিজস্ব ভবনে অনুষ্ঠিত মতবিনিমিয় সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ কথা বলেন।

নিউ ইয়র্ক : কনস্যুলেটে কর্মকর্তাদের সাথে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল। ছবি-ঠিকানা।

চিটাগাং এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল হাই জিয়ার সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন লিটনের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যন মোহাম্মদ হানিফ। অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরী, সহ সভাপতি মাসুদ হোসেন সিরাজি, কোষাধ্যক্ষ মতিউর চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাহাবুদ্দিন চৌধুরী লিটন, আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া, সংগঠনের আজীবন সদস্য এনাম চৌধুরী।

নিউ ইয়র্ক : কনস্যুলেটে একজন প্রবাসীর হাতে পাসপোর্ট তুলে দিচ্ছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, শফি শিকদার, এ টি এম নাজির, তৌহিদুল আলম, নবী চৌধুরী, সরোয়ারুজ্জামান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শামসুদ্দিন আজাদ, লুৎফুল করিম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চন্দন দত্ত, যুক্তরষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা আর আমিন, নজরুল ইসলাম, জাকির হোসেন প্রমুখ।

নিউ ইয়র্ক : অনুষ্ঠানে সুধীর একাংশ। ছবি-ঠিকানা।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমি জাতিসংঘের একটি অধিবেশনে যোগ দিতে এসেছি। সেখানে কাজ শেষ করেই আপনাদের এখানে এসেছি। অমেরিকায় এটি আমার প্রথম সফর। তবে আপনাদের সংগঠন চিটাগাং এসোসিয়েশনের কথা বাবার কাছে শুনেছি। বাবা যখনই আমেরিকায় আসতেন তখনই চিটাগাং এসোসিয়েশনের কোন কিছু সাথে নিয়ে যেতেন। আমি দেখতাম। আজকে আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি আনন্দিত এবং অভিভূত। তিনি বলেন, আমি লেখাপড়া করতে ১৬ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে চলে যাই।

নিউ ইয়র্ক : বক্তব্য রাখছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল। ছবি-ঠিকানা।

আমেরিকায় এসে এবং আপনাদের দেখে আমার মনে হয়েছে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশীদের চেয়ে আপনারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজ কর্মগুণে প্রতিষ্ঠিত। আপনারা আমেরিকার মত দেশে একটি ইউনিক সমাজে বসবাস করছেন। নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করে তুলছেন। আপনারা বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। আপনাদের অর্থে বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি পরির্তন হচ্ছে, সমাজ পরিবর্তন হচ্ছে, দেশ প্রশাসনিক ভিত্তির উপর দাঁড়াচ্ছেন। পরির্তিত এই বিশ্বে আপনাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে প্রবাসে জন্ম নেয়া নতুন প্রজন্মকে শেকড়ের সন্ধান দেয়া। আপনারা যেভাবে অর্থ দিয়ে দেশকে সাহার্য করছেন, আমরা চাই নতুন প্রজন্ম জ্ঞান দিয়ে বাংলাদেশকে সাহায্য করবে। যে কাজটি করছে ভারত ও চীনের ইমিগ্র্যান্টরা। তিনি বলেন, আমাদের দেশে টেকনিক্যাল স্কুলে শিক্ষিকের অভাব রয়েছে। এখানে যারা শিক্ষকতা পেশায় রয়েছেন তাদের অমরা খন্ডকালীন সময়ের জন্য বাংলাদেশে নিয়ে যাবো প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য। এর জন্য আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।

নিউ ইয়র্ক : কলম্বিয়ান প্রতিনিধির সাথে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল। ছবি-ঠিকানা।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মোডলে পরিণত হয়েছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। তিনি আসলে উদার মানসিকতার একজন মানুষ। তার মন সমুদ্রের মত বিশাল। যে কারণে তিনি সবাইকে নিয়ে কাজ করে বাংলদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি তার সাথে মিশে এটা বুঝতে পেরেছি। তিনি বলেন, আমার বাবা যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন আমি তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিয়ে যাই। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থ দিয়েছিলেন। আমি বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, সারা জীবন দেশ এবং মানুষের সেবা করেছেন আজকে আপনাকে অন্যের সেবা নিতে হচ্ছে, ইচ্ছে করলেতো আপনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারতেন। তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি যে দেশের জন্য কাজ করেছি, সেই দেশ আমার পাশে দাঁড়িয়েছে এটাই আমার প্রাপ্তি।

তিনি এক বক্তার বক্তব্যের জবাবে বলেন, বাংলাদেশে কোথায় এবং কীভাবে ইনভেস্ট করছেন তা ইনভেস্ট করার আগে চিন্তা করবেন। ইনভেস্ট করার আগে বা জমি ক্রয় করার আগে কনসালটেন্ট নিয়োগ করবেন। আত্মীয়- স্বজনদের কথার ইনভেস্ট বা জমি ক্রয় করে সমস্যায় পড়বেন না। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পাশ হয়েছে। আমি আসার আগে সবার সাথে বৈঠক করেছি। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে আমরা কাজ করছি। তবে একটি কথা বলে রাখতে চাই, আর সেটি হলো আমাদের মধ্যে ইগোর সমস্যা আছে, যে কারণে কাজ করতে গেলে সমস্যা হয় এবং কম্যুনিটি বা সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নিউ ইয়র্ক : চিটাগাং সমিতির সভায় সুধীর একাংশ। ছবি-ঠিকানা।

মোহাম্মদ হানিফ চট্টগ্রামের মেয়র প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা প্রবাসীরা তার কাছে ঋণী। কারণ তিনি আমাদের তিনশত প্লট দিয়েছিলেন।

নিউ ইয়র্ক : শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলকে চিটাগাং সমিতির ফুলেল শুভেচ্ছা। ছবি-ঠিকানা।

সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং চিটাগাং এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য পদ দেয়া হয়। প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী, স্বাধীন যুদ্ধে যে সব মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছেন এবং নিউজিল্যান্ডের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন মোহাম্মদ নাদের এবং গীতা পাঠ করেন স্বরূপ চৌধুরী।

নিউ ইয়র্ক : শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলকে চিটাগাং সমিতির সদস্য পদ প্রদান। ছবি-ঠিকানা।

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার নওফেলের সাথে চট্টগ্রাম সমিতির মত বিনিময়
নিউ ইয়র্ক : গত ১৬ মার্চ শনিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জাতিসংঘে সফর কালে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী চট্টগ্রাম বাসীর উপস্থিতিতে সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই জিয়ার সভাপত্বিতে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী খান লিটনের পরিচালনায় চট্টগ্রাম সমিতি ভবন ৫৪৫ ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউ, ব্রুকলিনে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছাড়াও প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সমিতির ট্রাস্টি র্বোডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হানিফ। মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরী, সহ সভাপতি মাসুদ হোসেন সিরাজী।

নিউ ইয়র্ক : শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলকে ফুলেল শুভেচ্ছা। ছবি-ঠিকানা।

এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহ সভাপতি পরিমল কান্তি নাথ, ভারপ্রাপ্ত অর্থ সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহাবউদ্দীন চৌধুরী লিটন, সদস্য শফিউলআজম শিকদার। এতে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সমিতির আজীবন সদস্য এনাম চৌধুরী, এটিএম নাজির হোসেন, হাজী তোহিদুল আলম, আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, নবী চৌধুরী, সিপিএ সারেয়ার জামান চৌধুরী, কাজী নয়ন, ইঞ্জি: জাহাঙ্গীর আলম, আইটি ইঞ্জিনিয়ার আবু আহমেদ, স্বীকৃতি বড়–য়া, শুসান্ত দত্ত, মোহাম্মদ আবুল কাশেম, বদিউল আলম, মাকসুদুল হক চৌধুরী, আবুল কাশেম, মো: আজিজ হিরু, জাহাঙ্গীর আলম টিপু, সরুপ দাস, নুরুল ইসলাম, ওমর ফারুক, মাস্টার নাছির উদ্দিন, জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ নাদের, রমেশ নাথ, সজল নাথ, মো: আলী, মো: আলী (লিটন), মো: সালাউদ্দিন, মো: শফি, মো: আজম, হাজী শফিউল আলম, আব্দুল মান্নান চট্টগ্রামের গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গসহ নিউইয়র্ক এর বিভিন্ন সংগঠনের গুরুত্বপূর্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শুরুতে মন্ত্রীকে চট্টগ্রাম সমিতির কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এবং ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান মন্ত্রীকে চট্টগ্রাম সমিতির পক্ষ থেকে অনারারী আজীবন সদস্য পদের সার্টিফিকেট তুলে দেন। পরিশেষে আপ্যায়নের মাধ্যমে সভাপতি সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

নিউ ইয়র্ক: জাহিসংঘে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল। ছবি-ঠিকানা।

জাতিসংঘে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল
গত ১৩ মার্চ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কমিশন অন দ্যা স্টাটাস অব উইমেন (সিএসডব্লিউ) -এর ৬৩তম সেশনের সাধারণ আলোচনায় দেশ পর্যায়ের ভাষণে অংশ নিয়ে নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনা সরকার গৃহীত পদক্ষেপসমূহকে এগিয়ে নেয়া এবং নারী উন্নয়নের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, “বিগত এক দশক ধরে নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ গৃহীত এসকল পদক্ষেপকে আরও ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে এখাতে বিনিয়োগ ও সক্ষমতা বিনির্মাণের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন, মানব পাচার, সন্ত্রাস ও সহিংস উগ্রবাদের মতো চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও এগিয়ে আসতে হবে”। এছাড়া চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রাক্কালে উন্নয়নশীল দেশসমূহে নারী উন্নয়নে সৃষ্ট বাধাসমূহ অতিক্রম করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

উপমন্ত্রী বলেন, “সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই বাংলাদেশে প্রথম নারীর মর্যাদা উচ্চতর স্থানে তুলে ধরার প্রক্রিয়া শুরু করেন। জাতির পিতার পথ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স অনুযায়ী পর পর তিন বছর বাংলাদেশ লিঙ্গ-সমতার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ স্থান ধরে রেখেছে। আর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ইনডেক্স’ অনুযায়ী আমরা বিশ্বের সর্বোচ্চ পাঁচটি দেশের একটি”।

নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বহুবিধ পদক্ষেপের কথা প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে তুলে ধরেন। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীর ব্যাপকভিত্তিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জেন্ডার রেস্পন্সিভ বিনিয়োগ ও বাজেট প্রণয়ন করছে মর্মে উল্লেখ করেন উপমন্ত্রী। উঠে আসে, সরকার গৃহীত পদক্ষেপসমূহ যেমন: নারী উন্নয়ন সংক্রান্ত নীতিগত নির্দেশিকা প্রণয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সৃষ্টি, জীবনমূখী প্রশিক্ষণ প্রদান, ক্ষুদ্র-ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ ও নারী বান্ধব ব্যাংকিং ব্যবস্থা, নারী উদ্যোক্তাদের জামানত বিহীন ঋণ সুবিধা, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সৃষ্টির মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সম-মজুরী এবং মেয়েদের সুরক্ষা ও এগিয়ে নেওয়ার প্রকল্পের কথা।

এছাড়া তিনি ‘আশ্রায়ণ’, ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ ও ‘জয়িতা’সহ বাংলাদেশে নারীদের সহযোগিতা, উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদানে বিভিন্ন প্রকল্প/পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন। শিশু বিবাহ, যৌন নির্যাতন ও সহিংসতা রোধে এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পুলিশী ও অন্যান্য সেবা পেতে ‘জয় মোবাইল অ্যাপস্’ এর কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নারী নেতৃত্ব রয়েছে। মোট সংসদ সদস্যের ২০ ভাগ নারী। শিক্ষাখাতের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ লিঙ্গ-সমতা অর্জন করেছে এবং নারী শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা-সহায়তা তহবিল থেকে ছাত্রীদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে ”।

উপমন্ত্রী তার বক্তব্যে চলমান রোহিঙ্গা সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, “বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই সঙ্কট মোকাবিলায় আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে”। সাধারণ পরিষদে দেশ পর্যায়ের ভাষণ শেষে শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ব্রিটেনের কমনওয়েলথ ও জাতিসংঘ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমদ এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া ১৩ মার্চ সকালে ৬৩তম সিএসডব্লিউ উপলক্ষে ওআইসি আয়োজিত একটি উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রী পর্যায়ের ইভেন্টেও যোগ দেন উপমন্ত্রী।

এর আগে ১২ মার্চ উপ-মন্ত্রী চলতি ৬৩তম সিএসডব্লিউ অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী তুরস্ক, আয়ারল্যান্ড ও কলম্বিয়ার প্রতিনিধিদলের সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন। তুরস্কের জনশক্তি বিষয়ক মন্ত্রী জেহ্রা জুমরুট সেলকুক, আয়ারল্যান্ডের অভিবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডেভিড স্টানটোন, কলম্বিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্থা লুসিয়া রামিরেজ, এবং কলম্বিয়ার জেন্ডার বিষয়ক প্রেসিডেন্সিয়াল হাই-কমিশনার অ্যানা মারিয়া ট্রিবিনো এসকল বৈঠকে স্ব স্ব দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। বৈঠকগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত দশকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, কর্মসংস্থানসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে তা বিদেশী প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গসমতাসহ নারী উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরও কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয় এসকল দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে।

এদিকে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন্নাহার ১২ মার্চ সকালে ‘লিঙ্গ ও কিশোরী সংবেদনশীল সামাজিক সুরক্ষা, বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্টে যোগ দেন। ২০১৪ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত প্রথম গার্লস্ সামিটে অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু বিবাহ নিরোধে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন অগ্রগতি তিনি ইভেন্টটিতে তুলে ধরেন।

৬৩তম সিএসডব্লিউ-এর বিভিন্ন ইভেন্টে যোগদানকৃত বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের মধ্যে আরো রয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন্নাহার, ক্যাবিনেট ডিভিশনের সমন্বয় ও সংস্কার বিষয়ক সচিব ড. মো: শামসুল আরেফিন, বৈদেশিক কল্যাণ ও কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রওনাক জাহান ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুন্নেছা।

নিউ ইয়র্ক : তার্কি প্রতিনিধির সাথে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল। ছবি-ঠিকানা।

শিক্ষা উপমন্ত্রীর কনস্যুলেট অফিস পরিদর্শন
বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি গত ১৩ মার্চ নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিস পরিদর্শন করেন। কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ তাকে স্বাগত জানান।

কনস্যুলেটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময়কালে উপমন্ত্রী প্রবাসীদের কনস্যুলার সেবা ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা উলে¬খ করেন। কনস্যুলেট এর আওতাধীন বিপূলসংখ্যক প্রবাসীদের কনস্যুলেট কর্তৃক আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান এর কথা উলে¬খ করে উপমন্ত্রী কনস্যুলেট কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন যে কনস্যুলেট কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ দেশের সুনাম বৃদ্ধি করেন। জনাব চৌধুরী পরে কনস্যুলেট এর বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন এবং কনস্যুলার সেবাপ্রার্থী অপেক্ষমান প্রবাসীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন। এ সময় সেবাপ্রার্থী প্রবাসীরা সাম্প্রতিককালে কনস্যুলার সেবা প্রদান মানের ব্যাপক উন্নতির কথা উপমন্ত্রীকে জানান। বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ এর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য উপমন্ত্রী কনস্যুলেটে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের আহবান জানান। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে এটাই ছিল বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের কোন মন্ত্রীর প্রথম বারের মত কনস্যুলেট জেনারেল পরিদর্শন।

কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়েজুননেসা কনস্যুলেট এর কার্যক্রম পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন।

নিউ ইয়র্ক : মহিবুল হাসান চৌধুরীর সাথে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল। ছবি-ঠিকানা।

এ সময় মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও পুনর্গঠন বিভাগের সচিব ড. শামসুল আরেফীন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম কামরুন নাহার, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম রওনক জাহান, জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং উচ্চ পদস্থ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, উপমন্ত্রী জাতিসংঘে গুরুত্বপূর্ণ সরকারী কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।