বিশ্বচরাচর ডেস্ক : বিশ্বমন্দার এক দশক পর বিশ্ব অর্থনীতিতে আবার অস্থিরতা দেখা দিয়েছে বলে মনে করে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আঙ্কটাড। সংস্থাটির বার্ষিক বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক প্রতিবেদনে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এমন হতাশার কথা বলেছে সংস্থাটি।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে সংস্থার অন্যতম প্রতিবেদন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট ২০১৮ পাওয়ার, প্ল্যাটফর্মস অ্যান্ড দ্য ফ্রি ট্রেড ডিলিউশন গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের শুরুতে বিশ্ব অর্থনীতি গতি ফিরে পেতে শুরু করে। যদিও প্রবৃদ্ধির হার ছিল অনিয়মিত এবং অনেক দেশ তাদের সম্ভাবনার চেয়ে ভালো করতে পারেনি। অন্য দিকে, বাণিজ্যযুদ্ধের দামামায় বিশ্ব অর্থনীতির যেভাবে কাজ করার কথা ছিল, তা করতে পারেনি। বার্ষিক বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক এ প্রতিবেদন বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান প্রবণতা ও প্রধান আন্তর্জাতিক নীতি বিশ্লেষণ করে এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সুপারিশ করে থাকে।
চলতি বছরের প্রতিবেদনে বড় অর্থনৈতিক শক্তিগুলো কিভাবে অল্পসংখ্যক বৃহৎ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীভূত হওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করেছে। একই সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতায় তা কিভাবে প্রভাব ফেলছে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে কিভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি নতুন প্রযুক্তি ও ডিজিটাল বিপ্লব থেকে কিভাবে উপকৃত হচ্ছে, তা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
আঙ্কটাডের মহাসচিব মুখিসা কিটুয়ি বলেন, আবারও বিশ্ব অর্থনীতি চাপের মধ্যে পড়েছে। শুল্ক বিষয়ে শুরু বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে দ্রুত সবার ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে আর্থিক খাতে অস্থিরতাও এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। তবে এ দুটি বিষয়ের চেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো ২০০৮ সালের মন্দা থেকে উত্তরণের মাধ্যমে বিশ্বের বৈষম্য ও ভারসাম্য বজায় রাখতে না পারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালের পর থেকে অনেক উন্নত দেশ প্রবৃদ্ধির জন্য অভ্যন্তরীণ উৎসকে বেছে নেওয়ার বদলে বাইরের উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে দেয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে আর্থিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকির কারণে প্রবৃদ্ধি বেশি বাধাগ্রস্ত হয়। এমনকি উন্নত দেশগুলোও বিশ্ব অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। ১৯৩০ সালের মতো অবস্থা এড়াতে এবং একই ভুল না করতে আঙ্কটাডের এ প্রতিবেদনে হাভানা চার্টারে ফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ চুক্তির মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ বহুজাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা স্থাপনের প্রাথমিক চেষ্টা করা হয়। একই সঙ্গে তিনটি কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পূর্ণ কর্মসংস্থান ও মজুরি বৃদ্ধি এবং এসডিজির লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য দেশগুলোর মধ্যে নীতি পালনের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।