আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে : সিলেটের মেয়র আরিফ

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র, বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, ‘সিসিক নির্বাচন সামনে রেখে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে। এরই অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে আমার বাসার নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার বাহিনীর ছয় সদস্যকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সিলেটে নতুন যোগদান করা আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার। মৌখিক বা লিখিত- কোনোভাবে আমাকে বা সিসিকের কাউকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। অথচ গত ছয় বছর ধরে মাসিক বেতনের বিনিময়ে আনসার বাহিনীর ২৪ সদস্যকে নগর ভবন ও আমার (মেয়রের) বাসার অফিসসহ সিসিকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে আমার বাসা ও বাসা-সংলগ্ন অফিসের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছয়জনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এতে আমার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।’

১৭ মে বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন মেয়র আরিফ। মঙ্গলবার রাতে তার বাসার নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্যদের প্রত্যাহারের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র আরিফ বলেন, ‘আমি আমার দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলব।’

আসন্ন সিসিক নির্বাচনে আরিফুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। আগামী ২০ মে সিলেটে সমাবেশ করে তিনি তার সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আরিফ আরও বলেন, ‘২০১৩ সালে প্রথম মেয়াদে মেয়র থাকাকালীন আমাকে সরকার থেকে দুজন গানম্যান দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরের মেয়াদে তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর নগরবাসীর ট্যাক্সের টাকায় মাসিক চুক্তিতে আনসার বাহিনীর ২৪ সদস্যকে সিসিকের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা হয়। শিডিউল করে সিসিকের পানি শোধনাগার ও যান্ত্রিক শাখাসহ (যেখানে সিসিকের বিভিন্ন গাড়ি ও মেশিন রাখা হয়) গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা দিয়ে আসছেন তারা। তাদের মধ্য থেকে ছয়জনকে আমার বাসা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাখা হয়েছে। কিন্তু গত (মঙ্গলবার) রাতে হঠাৎ করে এ ছয়জনকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

আরিফ বলেন, ‘এটা অতি উৎসাহী হয়ে এই বাহিনীর পক্ষ থেকে করা হয়েছে বলে আমি মনে করি।’

‘প্রশাসনের অতি উৎসাহী কতিপয় কর্মকর্তার কর্মকাণ্ড’ খোদ সরকারকেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সিসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র আরিফুল হক বলেন, ‘সম্প্রতি আমি মহানগরের যেখানে যাচ্ছি এবং আমার সঙ্গে যারা ছবি পর্যন্ত তুলছেন, দেখা যাচ্ছে রাতের বেলা তাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কাউকে রিমান্ডে পর্যন্ত নিচ্ছে। আমি তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শপথ করিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের অতি উৎসাহী কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা এমন একজন জনপ্রতিনিধিকে কীভাবে মূল্যায়ন করতে হয়, সেটিও সম্ভবত ভুলে গেছেন।’

মেয়র আরিফ প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমার বাসায় যদি এভাবে নিরাপত্তা দেওয়া আইনসিদ্ধ না হয়, তবে দীর্ঘ ছয় বছর তারা কোথায় ছিলেন? আমি দেখছি- নগরবাসী থেকে আমাকে দূরে রাখার সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি নগরবাসীর কাছে দোয়া চাই।’

ঠিকানা/এনআই