ফিরোজ হুমায়ুন :
দশ বছর আগে :
লেখাপড়া করিনি, করিনি পাস বিএ কিংবা এমএ,
তাই বলে জীবনযুদ্ধে থাকব নাকো থেমে।
আমি রাজনীতি করব, এমপি হব, মন্ত্রী হব,
তখন আমি তোমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাব।
তোমরা যারা বলছ আমায় গরু কিংবা গাধা,
তাদের তখন খবর হবে বলে দিলাম দাদা।
লেখাপড়ায় অষ্টরম্ভা কিন্তু বুদ্ধি আমার সরু,
বুদ্ধিমান বন্ধুরা সব হবে আমার গোয়ালের গরু ॥
চাপাটাকে শক্ত করছি খাই কাঁচা চিড়া দুই বেলা
মিথ্যা বলায় পটু আমি ধারেকাছে নাই কোনো শালা।
নামীদামি চড়ব গাড়ি
দশতলা প্রাসাদোপম হবে বাড়ি
অর্থ উপার্জন কাঁড়ি কাঁড়ি
ন্যায়-নীতির গুল্লি মারি।
এমপি হব মন্ত্রী হব, নেতা হব আমি
তাতেই আমার কপাল খুলবে অন্তর্যামী।
দেশের ভালো বলে বলে তুলব মুখে ফেনা
স্যুট-কোট পরলে আমায় যাবে নাকো চেনা।
দশ বছর পর :
আমি এখন বড় নেতা, মন্ত্রী একজন বড়,
আমার সামনে কথা বলার সাহস নাইকো কারো।
এখন আমি জনগণকে রাতদিন দিই উপদেশ
আমার সেই উপদেশের প্রশংসার নাই শেষ।
সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আছে আমার ডলার কাঁড়ি কাঁড়ি
বেগমপাড়ায় আছে আমার দশ-দশটা বাড়ি।
বারিধারায় আছে গার্লফ্রেন্ড দুই নারী,
নীতি কথা বলি অনেক, কিন্তু জীবনে তার ধার না ধারি।
বেহায়া সব বুদ্ধিজীবী আমায় তৈল মর্দন করে,
ভুয়া ভুয়া সাংবাদিকরা সব আমার জুতা চাটে।
তার উপরে আছে আমার ক্লিকবাজি মাথায়,
নতুন নতুন কথা বলি জনতা যা খেতে চায়।
এমনি করে জনতার মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাই,
তাই মনে হয় এখন আমি বেহেশতে আছি ভাই ॥