আমেরিকান পোয়েট্রি মান্থে বহুবচনের নান্দনিক আয়োজন

ছন্দা বিনতে সুলতান : কবিতা জীবনের কথা বলে, দ্রোহের কথা বলে, বিরহের কথা বলে, প্রেমের কথা বলে, শান্তির কথা বলে। কবিতা থাক পকেটে, কবিতা থাক হৃদয়ে। তাইতো কবিতার বাণী সর্বত্র পৌঁছে দিতে আমেরিকায় জাতীয় কবিতা মাস উপলক্ষে গত ৭ এপ্রিল জ্যামাইকার হিল সাইডের স্মার্ট একাডেমিয়ায় বহুবচনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো একটি অনবদ্য কবিতা সন্ধ্যা। বহুবচনের এবারের আয়োজন কোনো ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে সীমিত ছিল না। ছিল দেশি এবং ভিনদেশী কবি, সাহিত্যিক আর আবৃত্তিকারকদের এক মেলা, তার ওপর বাড়তি পাওনা ছিল নতুন প্রজন্মের আবৃত্তি ও স্বরচিত কতিা পাঠ। ছিল বইয়ের ওপর আলোচনা। সবকিছু মিলিয়ে নিউ ইয়র্কের সংস্কৃতি মনষ্ক মানুষ প্রাণভরে উপভোগ করে এই প্রাণবন্ত আয়োজন। তাইতো অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরও কারো মাঝে ফেরার তাড়না ছিল না। এ যেন ছোটগল্পের মতো ‘হইয়াও হইলো না শেষ’Ñ রেশটুকুন লেগেছিল সবার মাঝে।
অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে কবি ও লেখক ড. হুমায়ুন কবীরের পারস্য পরবাসে বইটি নিয়ে আলোচনা করেন নাট্যব্যক্তিত্ব মুজিব বিন হক। অত্যন্ত সুরেলা কণ্ঠে দেশাত্ববোধক গান করেন কবি শামস আল মমীনের স্ত্রী লোপা। তার সাথে কণ্ঠ মেলান সকলে। এরপর শুরু হয় স্বরচিত কবিতাপাঠ। এ পর্বটি পরিচালনা করেন কবি সেলিম আনোয়ার। স্বরচিত কবিতা পাঠে অংশ নেন, কবি ফকির ইলিয়াস, শামস আল মমীন, মিশুক সেলিম, ছন্দা বিনতে সুলতান, লিয়াকত আলী, ফারহানা ইলিয়াছ তুলি, আহমেদ বাবু, মুজিব বিন হক, জুই ইসলাম, স্বরচিত কবিতার ফাঁকে মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী প্রিয় ভাষিনীর জীবনের ওপর আলোকপাত করে তার জীবনী পাঠ করেন আজিজুল হক মুন্না। ইংরেজি কবিতা পর্বে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি হাসান আল আব্দুল্লাহ, আবীর হক এবং মারিয়া হ্যানেন্ড। ইংরেজি কবিতা আবৃত্তি করেন মার্চ ওয়েইন বার্গ, সেমন্তি ওয়াহেদ, নাদিয়া মমীন। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন এই প্রজন্মের জনম সাহা। ইংরেজি কবিতা পর্বটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন কবি শামস আল মমীন। কবি এবিএম সালেহ উদ্দীন, কবি জুলি রহমানের বইয়ের ওপর আলোচনা করেন। তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে কবি জুলি রহমানকে দর্শকের সামনে তুলে ধরেন। এরপর শুরু হয় আবৃত্তি পর্ব। যাতে অংশগ্রহণ করেন প্রবাসের বিখ্যাত আবৃত্তিকাররা। এই পর্বটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন কবি ছন্দা বিনতে সুলতান। আবৃত্তিতে অংশ নেন জনপ্রিয় নাট্যশিল্পী লুৎফুন নাহার লতা, গোপন সাহা, কবির কিরণ, মিজানুর রহমান বিপ্লব, শিবলী সাদেক।
অনুষ্ঠানের সর্বশেষ আকর্ষণ ছিল লেখক আবু রায়হানের পুঁথিপাঠ। আগত দর্শক প্রাণভরে তার সুরেলা কণ্ঠের পুুঁথিপাঠ উপভোগ করেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দর্শক প্রাণভরে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে স্মৃতির খাতায় সংযোজন করে একটি অনবদ্য প্রাণজল সন্ধ্যার।