আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের নৌ-ভ্রমণ

নিউইয়র্ক : আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পঞ্চম নৌ-ভ্রমণ অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ১৪ জুলাই। নিউইয়র্কের মিডিয়া ও সংস্কৃতি কর্মী, কমিউনিটি নেতা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী-সুধীজন এই নৌ-ভ্রমণে অংশ নিয়েছিলেন। নৌ-ভ্রমণে ছিল আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আলোচনার বিষয় ছিল-বাংলাদেশ সোসাইটির নেতৃত্ব কেমন চাই। এই বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে একাধিক বক্তা নেতৃত্ব সৃষ্টির নেপথ্য কারণ নিয়ে বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্য রাখেন। অধিকাংশ বক্তা বলেছেন-নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশীদের আমব্রেলা সংগঠন-বাংলাদেশ সোসাইটি হোক সকলের মিলনকেন্দ্র। এ ছাড়া প্রবাসীদের মধ্যে ঐক্য, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য রচনায় সোসাইটির নেতারা যেন অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। বক্তারা কমিউনিটির স্বার্থে বাংলাদেশ সোসাইটির আসন্ন নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করার দাবিও জানান।
আলোচনা সভা পরিচালনা করেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি দর্পণ কবীর এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান রচি ও রিভার ক্রুজ উদযাপন কমিটির আহবায়ক বেলাল আহমেদ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সামসুন্নাহার নিম্মি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও পরিচয় পত্রিকার সম্পাদক নাজমুল আহসান, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি প্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোহাম্মদ আলী, টাইম টিভির সিইও ও বাংলা পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের, এনওয়াই ইন্স্যুরেন্সের সিইও এবং প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, প্রবাস পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ পারভেজ সাজ্জাদ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আসাদুল বারী আসাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
আলোচনা সভার পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন তনিমা হাদী, রোকসানা মির্জা, রানো নেওয়াজ ও সজীব। কী-বোর্ডে ছিলেন পার্থ, গীটারে মাহফুজ ও অক্টোপ্যাডে রিচার্ড।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে আমরা এতো বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারতাম না। দেশের কথা সকলকে স্মরণে রাখতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষে থাকতে হবে। যারা বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন, তারা যেন নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতি ও কৃষ্টির চর্চা অবগত রাখার এবং প্রত্যেক পরিবারে ছড়িয়ে দিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন।
বাংলাদেশ সোসাইটির নেতৃত্ব কেমন চাই-এ প্রসঙ্গে আলোকপাত করতে গিয়ে নিজের প্যানেলের পক্ষে কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন বলেন, শুধু কথার প্রতিশ্রুতি নয়, আমরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবো। বাংলাদেশ সোসাইটিকে আরো বড় পরিসরে দেখতে চাই। এবার রেকর্ডসংখ্যক ভোটার নিবন্ধিত হয়েছে। এর অর্থ সোসাইটির প্রতি প্রবাসীদের আগ্রহ বাড়ছে। তিনি আরো বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে বাংলাদেশ সোসাইটিতে একটি ডেস্ক খুলবেন যা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। এই ডেস্ক খোলা হবে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য। বিপদগ্রস্থ অভিবাসীদের পাশে দাঁড়াতে আমরা এই পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। মূলধারার বিভিন্ন উৎস থেকে অনুদান সংগ্রহ করার উদ্যোগ গ্রহণ করার কথাও বলেন তিনি।
পারভেজ সাজ্জাদ বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটির নেতৃত্ব সম্পর্কে ভোটারদের প্রতি হুশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, অযোগ্য ব্যক্তিরা কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে ভোটার বানাচ্ছে। এতে কেউ ভাববেন না নির্বাচনে জয়ী হয়ে যাবেন।
নাজমুল আহসান বলেন, সোসাইটির সদস্য বাড়ছে। এই সংগঠনের নেতৃত্ব বিকাশে সদস্য বা ভোটারদের সচেতন হতে হবে। ভোটাররা সচেতন হলে যোগ্য নেতৃত্বও তৈরি হবে।
আবু তাহের বলেন, বাংলাদেশে সোসাইটির নেতৃত্বে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন এলে প্রার্থীরা অনেক কথাই বলেন। প্রতিশ্রুতি দেন। ভোটারদের ভাবতে হবে কোন প্রার্থী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন।
আসাদুল বারী আসাদ বলেন, নিজে অর্থ খরচ করে প্রার্থীরা ভোটার বানাচ্ছেন, এর পরিবর্তন আনতে হবে। নিজের অর্থে ভোটার হবেন-এদের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
শাহ নেওয়াজ বলেন, আসুন, সকলে মিলে সুন্দর কমিউনিটি গড়ি। ঐক্যবদ্ধ থাকি।
মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে শুধু কথার ফুলঝুড়ি ছড়াতে চাই না। ফটোসেশন করে সময় কাটাতে চাই না। আমরা কাজ করতে চাই। এই সোসাইটিকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, সোসাইটির ভোটারদের উচিত যোগ্য প্রার্থীদের ভোট দেয়া। যে কোন প্যানেলের প্রার্থী হোক, প্রার্থী যোগ্য হলে তাকে নির্বাচিত করা একজন সচেতন ভোটারের দায়িত্ব।
নৌ-ভ্রমণে ছিল বিনা মূল্যে র‌্যাফেল ড্র। লটারীতে ভাগ্যবান হিসাবে ৫৫ ইঞ্চি টিভি পেয়েছেন আব্দুল মান্নান।