স্পোর্টস রিপোর্ট : বঙ্গবন্ধু কাপ ফুটবল এশিয়ান গেমস ফুটবল, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবল দল খেলেছে। কিন্তু তাদের খেলায় সৌন্দর্যটা সেভাবে ফুটে উঠেনি। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েদের খেলাটা ছেলেদের চেয়েও দর্শক মন ভরিয়ে দিয়েছে। এত সুন্দর ফুটবল নৈপুণ্য ছিল অপ্রত্যাশিত। মেয়েদের ফুটবল খেলা দেখে মুগ্ধ বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। তিনি মেয়েদের ফুটবলে উন্নতি দেখছেন। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় পর্বের বাছাইয়ে উঠায় মারিয়া মান্ডা, মনিকা, তহুরা, আঁখিদের অভিনন্দন জানাতে ডেকেছিলেন। সব খেলোয়াড়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তোমাদের সব খেলা দেখেছি। বুঝা যায় তোমরা অনেক পরিশ্রম করছ। পরিশ্রম ছাড়া উন্নতি করা সম্ভব না।’ উদাহরণ দিয়ে সালাউদ্দিন, ‘ফুটবল পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ট্রেনিং করে রোনালদো। দলের অনুশীলন শেষ হয়ে গেলেও আরও এক ঘণ্টা অনুশীলন করে। কমপক্ষে ৫০ বার ফ্রিকিকের অনুশীলন করে। রোনালদোর পরে আছেন মেসি। যদি পরিশ্রম কর তাহলে তোমরাও অনেক দূর যেতে পারবে। কষ্ট ছাড়া কোনো কিছুই করতে পারবে না।’
বাফুফে সভাপতি মেয়েদের ফুটবল স্কিল, বল কন্ট্রোল দেখে অবাক হয়ে বলেছেন, ‘আমি ওদের বল কন্ট্রোল দেখেছি। ফিটনেস দেখেছি। মানসিক ফিটনেস, বল রিসিভিং, আদান-প্রদান, সবই দেখেছি। তোমাদের ফুটবল স্টাইল দেখেছি, ছেলেরাও এটা পারবে না।’
বাংলাদেশের মেয়েরা শারীরিক উচ্চতায় পিছিয়ে রয়েছে। সালাহউদ্দিন স্ট্রাইকার তহুরাকে দেখিয়ে বললেন, ‘ওর পায়ের কাজ দারুণ। খুব সাহসী। তহুরার সাহস দেখে আমি বোকা বনে গিয়েছি। আমাদের সমস্যা আমরা শারীরিকভাবে পিছিয়ে। আমাদের আরও লম্বা হতে হবে। তাগড়া হতে হবে। কারণ এখন দ্বিতীয় রাউন্ডে আরও শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে হবে।’
অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের প্রতিটা মেয়ে দারুণ ফুটবল খেলেছেন। আঁখি, তহুরা, মারিয়া, মণিকা, নাজমা, সাজেদা, আনাইচিং মগিনি, আনুচিং মগিনি, রিতুসসহ সব ফুটবলারের খেলা অন্য রকম মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠান শেষে আঁখি বলছিলেন, আমরা যদি হেরে যেতাম তাহলে মন খারাপ হয়ে যেত। কারণ দিনরাত অনুশীলন করেছি। দ্বিতীয় পর্বে চীন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলা পড়লেও ওদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে।’
অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা বলছিলেন, ‘আমরা শুনেছি চীন, অস্ট্রেলিয়া, ইরান, লাওস দ্বিতীয় পর্বে খেলবে। আমরা আমাদের শক্তি দিয়ে চেষ্টা করব। আমাদের সমস্যা হলো নার্ভাস হয়ে গেলে খেলতে পারি না। সাহস রাখতে হবে।’ আর মণিকা বললেন, ‘এখন যে খেলাটা খেলেছি তার চেয়েও বেশি ভালো খেলতে হবে দ্বিতীয় পর্বে।’
মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল দল ভুটান যাবে। সেখানে সাফের খেলা রয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল দলের ১১ জন সেখানে যাবেন। ফুটবল ক্যাম্পে এখন জাতীয় মহিলা দল, অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল দলের ৩৯ জন খেলোয়াড় ক্যাম্পে রয়েছেন। সবাইকে একটা পরিবার আখ্যা দিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেছেন ভুটান থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসতে পারলে আরও পুরস্কার দেয়া হবে।