ঠিকানা রিপোর্ট : বিশ্বকাপ ফুটবলে নেই বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বকাপে দুই ধারায় বিভক্ত, একটি ব্রাজিল, অন্যটি আর্জেন্টিনা। কোয়ার্টার ফাইনালে
বিদায়ে ব্রাজিল সমর্থকেরা চুপসে গিয়েছিলেন। কিন্তু আর্জেন্টিনার ফাইনালে ওঠায় বাংলাদেশটাই যেন আর্জেন্টিনায় পরিণত হয়েছিল। আর চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় উল্লাসে কেঁপে উঠেছিল পুরো দেশটাই। আর এর ছাপ পড়েছিল প্রবাসেও। আর্জেন্টিনার বিজয়ে প্রবাসীরাও ফেটে পড়েছিলেন উল্লাসে।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ১৯৮৬ সালের পর থেকে প্রতীক্ষায় ছিলেন দীর্ঘ ৩৬ বছর। ফুটবল জাদুকর ম্যারাডোনার হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের পর কোনোভাবেই আর সেই কাপের দেখা মিলছিল না আর্জেন্টিনার। শিরোপা জয়- লক্ষ্যকে সামনে রেখেই নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে চলছিলেন ম্যারডোনার যোগ্য উত্তরসূরি ফুটবল যাদুকর লিওনেল মেসি। তার হাত ধরেই বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। এরই সাথে জীবনের শেষ বিশ্বকাপের ম্যাচ খেললেন মেসি! তাই ইতিহাসে আজীবন অমর হয়ে থাকবেন এই গ্রেট!
গত ১৮ ডিসেম্বর রোববার রাতে কাতারের রাজধানী দোহার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ইতিহাসের অন্যতম রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বসেরার মুকুট জিতেছে আলবিসেলেস্তারা। এরই সাথে শুধু মেসিদের নয়, পৃথিবীর শত কোটি মানুষের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। মানুষ অপেক্ষায় ছিলো মেসির হাতেই উঠুক এবারের বিশ্ব ফুটবলের সেরাটা। ফ্রান্সকে পরাজিত করে সেই কাক্সিক্ষত অর্জনটা নিয়েই ফুটবলপ্রেমীদের মুখে হাসি ফুটিয়ে দেন মেসিরা।
গত ১৮ ডিসেম্বর রোববার বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার জন্য নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কস, কুইন্সের জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, ওজোনপার্ক ও এস্টারিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ছিল নানা আয়োজন। বেশ কয়েকটি স্থানে ছিল বড় পর্দায় খেলার আয়োজন। ফুটবলপ্রেমী প্রবাসীরা আর্জেন্টিনার বিজয়ে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন। অনেক জায়গায় বিজয় উৎসবের। ছিল ভুড়িভোজের আয়োজন।
ব্রঙ্কসের খলিল বিরিয়ানিতে বড় টিভি স্ক্রিনে বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখার জন্য জড়ো হয়েছিলেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। তাদের সঙ্গে ছিলেন খলিল ফুডস ফাউন্ডেশনের কর্ণধার ও শেফ খলিলুর রহমান। তিনি জানান, সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে খেলা দেখার আনন্দই আলাদা।
কুইন্সের জ্যামাইকার একটি রেস্টুরেন্টে টিভি স্ত্রিনে খেলা দেখেছেন বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নূরুল আজিম। তিনি জানান, অনেক মানুষ মিলে একসঙ্গে খেলা উপভোগ করেছি।
এদিকে নিউইয়র্কের বাইরে বিভিন্ন স্টেটে বসবাসরত বাংলাদেশিরা নানাভাবে বিশ্বকাপ খেলা উপভোগ করেছেন। ম্যারিল্যান্ডের বাসিন্দা সাংবাদিক ফকির সেলিম জানান, ১৮ ডিসেম্বর রোববার আমার বাসাটি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে পরিণত হয়েছিল। আমরা ৮-১০টি পরিবার একসঙ্গে খেলা দেখেছি। সবাই আমরা আর্জেন্টিনার সমর্থক ছিলাম। খেলায় যেমন শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি ছিল, তেমনি উপভোগও করেছি। তিনি বলেন, এদিন আমার বাসায় ঈদের আনন্দ ছিল।