ঠিকানা রিপোর্ট : দীর্ঘ ৫ বছর পর তদন্ত ও বিচার কাজ শেষে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজমুল ইসলাম (হিরণ) হত্যা মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। হত্যার দায়ে নেস্টও রডরিগুয়েজ (২৫) নামে একজনকে ১৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ড শেষ হওয়ার পর আরও ৫ বছর কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরে রাখা হবে।

উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সালের ৯ জুলাই ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিউইয়র্কের ওজনপার্কে ৭৬ স্ট্রিটের আটলান্টিক এভিনিউয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজমুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং তার পকেটে থাকা সবকিছু নিয়ে যায় দুই ব্যক্তি।
কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি রিচার্ড এ ব্রাউনের দপ্তর থেকে জানা গেছে, নেস্টও রডরিগুয়েজ উডহ্যাভেন সেকশনের ৯০ স্ট্রিটের বাসিন্দা। গত জানুয়ারিতে কুইন্স সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ব্যারি সুয়ার্টেজের আদালতে সে দোষ স্বীকার করে। পরে আদালত গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই কারাদণ্ড প্রদান করে। এ হত্যাকাণ্ডের অপর আসামি কার্লোস জিনো এখন কারাগারে রয়েছে। আগামী ২২ মার্চ তার বিচার শুরু হবে।

প্রকাশ থাকে যে, এর আগে বিশিষ্ট ফুটবলার আব্দুল আহাদকে ১৯৯২ সালের ৬ আগস্ট ওজনপার্কের ৮১ স্ট্রিট ও লিবার্টি এভিনিউয়ের ওপর, ২০০১ সালের ১১ আগস্ট লিবার্টি এভিনিউ ও ফরবেল স্ট্রিটের কর্ণারে সাংবাদিক মিজানকে, ওজনপার্কের ড্রিউ স্ট্রিটে শিবলী, ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট, ইমাম আকুঞ্জি ও মুসল্লি তারা মিয়াকে ৭৮ ও ৮০ স্ট্রিট লিবার্টি এভিনিউর কর্ণারে দুষ্কৃতিকারীরা হত্যা করে।
নজমুল ইসলাম (হিরণ) যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন ১৯৮৫ সালে
সিলেটের বিয়ানিবাজারের চন্দ্রগ্রামের প্রয়াত ব্যবসায়ী তোফাজ্জল ইসলামের একমাত্র পুত্র নজমুল ইসলাম ওরফে হিরন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন ১৯৮৫ সালে। তার মা জয়গুন বেগম রয়েছেন নিউইয়র্কে। রয়েছেন আরো ৩ বোন। অপর বোন আছেন লন্ডনে। নজমুলের একমাত্র পুত্র-কন্যাও শোকে পাথর। স্ত্রী সালমা এ্যানীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ায় অনেকদিন আগে থেকে নিজেই পুত্র-কন্যাকে আগলে রেখেছিলেন।

জানা যায়, নিউইয়র্কে আগমনের পর ১৯৮৭-৮৮ সালে গঠিত যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হন নজমুল। সে কমিটির সেক্রেটারী ছিলেন গনিউর রহমান। ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের কাউন্সিল অধিবেশনে নজমুল ইসলাম সাংগঠনিক সম্পাদক হন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগেরও সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং ২০১২ সালে গঠিত কমিটিতে সহ-সভাপতির পদ লাভ করেন। সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় নজমুলকে কয়েক মাস আগে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করতে হয়। নজমুল ইসলাম রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেন। তার অমায়িক ব্যবহারের জন্য তিনি সকলের প্রিয়ভাজন ছিলেন।