ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ হারল বাংলাদেশ

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : তিন ফরম‌্যাটের ক্রিকেটে বাংলাদেশ একমাত্র ওয়ানডে ক্রিকেটে বলার মতো যা কিছু অর্জন করেছে। সেই অর্জনের অন‌্যতম ছিল ঘরের মাঠে বাঘ হয়ে ওঠা। একের পর এক অতিথিদের ‘বধ’ করা। এভাবে অতিথি বধ করতে করতে বাংলাদেশ পার করে দেয় সাতটি সিরিজ। হয়ে ওঠে অপরাজেয়। একে একে হার মানায় জিম্বাবুয়ে ও উইন্ডিজকে দুবার করে এবং শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও ভারতকে একবার করে। সর্বশেষ শিকার ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারত।

এবার সেটিকে দুই হালিতে পূর্ণ করতে চেয়েছিল ইংল‌্যান্ডকে হারিয়ে। কিন্তু সেই আশা আর পূর্ণ হয়নি। হারানো সম্ভব হয়নি ইংল‌্যান্ডকে। উল্টো দ্বিতীয় ম‌্যাচ ১৩২ রানে হেরে নিজেরাই হেরে গেছে সিরিজ। প্রথম ম‌্যাচ বাংলাদেশ হেরেছিল ৩ উইকেটে। এই ইংল‌্যান্ডের কাছেই বাংলাদেশ সর্বশেষ সিরিজ হেরেছিল ২০১৬ সালে ২-১ ব‌্যবধানে। তাদের কাছেই হারাতে হলো সাত সিরিজ জেতার রেকর্ডও।

প্রথম ম‌্যাচে বাংলাদেশ মাত্র ২০৯ রান করেও লড়াই করে হেরেছিল। হারের আগে ইংল‌্যান্ডকে বেশ চেপে ধরে ম‌্যাচের চিত্রনাট‌্য বদল করার পরিস্থিতিও সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু আজ শুক্রবার (৩ মার্চ) সিরিজ বাঁচানোর ম‌্যাচে তারা লড়াই-ই করতে পারেনি। ইংল‌্যান্ডের ৭ উইকেটে করা ৩২৬ রানের জবাব দিতেই পারেনি তামিমের দল। ৪৪.৪ ওভারে ১৯৪ রান করে অলআউট হয়ে যায়। বাংলাদেশের এমন বাজে হারে চট্টগ্রামে ৬ মার্চ সিরিজের শেষ ম‌্যাচ শুধুই আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হলো। বাংলাদেশ জিতলে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়ে ব‌্যবধান কমাতে পারবে।

প্রথম ম‌্যাচে টস জিতে তামিম ইকবাল ব‌্যাটিং নিয়ে ফায়দা তুলে নিতে পারেননি। এই ম‌্যাচেও টস জিতেছিলেন। কিন্তু আগে আর ব‌্যাটিং নেননি। বোলারদের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন। তারাও ফায়দা নিতে পারেননি। ফলে ইংল‌্যান্ড জেসন রয়ের ১৩২ ও অধিনায়ক বাটলারের ৭৬ রানে ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানের ম‌্যাচ জেতার মতো সংগ্রহ দাঁড় করায়।

বিশাল রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ শুরুতেই বিপদে পড়ে ১৪ বলে ৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় স‌্যাম কারানের প্রথম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত নিজ নিজ প্রথম বল খেলেই ফিরে যান।

স‌্যামের পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে ফিরে যান মুশফিক। তিনি অবশ‌্য লিটন ও শান্তর মতো শূন্য রানে ফিরে যাননি। ৪ রান করেন।

ম‌্যাচ জয়ের আশা সেখানেই ডুবে যায়। বাকি থাকে হারটা কীভাবে হচ্ছে তা-ই দেখা। লজ্জার হার, না মানসম্মত হার। নাকি কেউ দাঁড়িয়ে গিয়ে প্রতিরোধের দেয়াল তুলে হুংকার দিয়ে হার।

এর কোনোটিই হয়নি। তবে দলের এমন বিপর্যয়ে সাকিব-তামিম দাঁড়িয়ে যান। সাকিব-তামিম তা মিথ‌্যে প্রমাণ করে ২২ গজে বারবার কথা বলে যান। তাদের কথা বলার কারণ ছিল দুজনই উইকেটে টিকে গিয়েছিলেন। যে কারণে কথা বলার ক্ষেত্র তৈরি হয়। দুজন ১৮.২ ওভারে ৭৯ রান যোগ করেন। এই রান আরও বাড়তে পারত, যদি তামিম উইকেট বিলিয়ে দিয়ে না আসতেন।

ব‌্যক্তিগত ৩৫ রানে মঈন আলীর বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅফে জেমস ভিন্সের হাতে ধরা পড়েন তামিম। তার ৬৫ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চারের মার। তিনি আউট হলেও সাকিব ৫৯ বলে ৫ চারে তুলে নেন ক‌্যারিয়ারের ৫১তম হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি করার পর তিনি আর বেশি সময় টিকতে পারেননি। আদিল রশিদের বল খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলেন। মিডঅফে ক‌্যাচ ধরেন স‌্যাম কারান।

এরপর বাংলাদেশের ইনিংস ১৯৫ পর্যন্ত গেছে মাহমুদউল্লাহ ৩২, আফিফ ২৩ ও তাসকিন ২১ রান করলে। স্যাম কারান ২৯ ও আদিল রশিদ ৪০ রানে নেন ৪টি করে উইকেট। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন জেসন রয়।

ঠিকানা/এনআই