ঠিকানা অনলাইন : ভিডিও শেয়ারিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। তবে এ প্ল্যাটফর্মে কনটেন্ট ক্রিয়েটরের চেয়ে দর্শকের সংখ্যা বেশি। অর্থাৎ যত মানুষ দেখত, সে তুলনায় কনটেন্ট তৈরিতে অবদান রাখছে খুব কম মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এ প্রবণতাকে বিশ্লেষকরা সব সময়ই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে আসছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার সেই দুর্বলতা দূর করতেই নতুন ধরনের আইডিয়া নিয়ে হাজির হয়েছে লন্ডনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ইউআরঅন (YurOn)। নতুন কৌশলটি যে বেশ কার্যকর, প্ল্যাটফর্মটির দ্রুত প্রবৃদ্ধিই তার প্রমাণ। সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্ত বলছে, একেবারে নতুন হলেও ইউআরঅনের প্রবৃদ্ধি এ মুহূর্তে ইউটিউবের একই সময়ের অবস্থার চেয়ে বেশি।
নতুন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে মূলত থ্রেডেড কনভারসেশন কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরুর পর সেই থ্রেডে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের ভিডিও পোস্ট করতে পারেন। বিষয়টি অনেকটা নলেজ বেইজড প্ল্যাটফর্মের মতো।
ইউআরঅনের উদ্যোক্তারা বলছেন, নিরবচ্ছিন্নভাবে স্ক্রল করে যাওয়া, লাইক-শেয়ার পাওয়ার জন্য পোস্ট করার প্রবণতা, নাম-পরিচয় গোপন রাখা আর ভিডিওতে পরিচয় গোপন করে যা-তা মন্তব্য করার মতো হালের চর্চা থেকে বেরিয়ে আসতেই তাদের এ উদ্যোগ।
চলতি বছরের শুরুর দিকে যাত্রা করে ইউআরঅন। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে এটির ব্যবহারকারী পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। টুইটারের ব্যবহারকারীরা দৈনিক গড়ে যে সময় ব্যয় করেন, ইউআরঅনের ব্যবহারকারীরা এ প্ল্যাটফর্মে তার চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছেন। এর মধ্যেই পাঁচ হাজারের বেশি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে, দেখা হয়েছে এক লাখের বেশি। প্রবৃদ্ধি হিসাব করলে ইউটিউব যখন এ অবস্থায় ছিল, এটি তার চেয়ে বেশিই।
ইউআরঅন প্ল্যাটফর্মে কোনো বিষয়ে জানতে প্রশ্ন পোস্ট করা যায়, সেই সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যেতে পারে একটি ভিডিও ক্লিপ। প্ল্যাটফর্মে লগইন করা যে কেউ সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন। ‘আমাকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন’ এমন পোস্টও দেওয়া যেতে পারে।
প্ল্যাটফর্মটি বর্তমানে গণতহবিল সংগ্রহ করছে। সাড়ে ৩ লাখ পাউন্ড তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে তারা ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। ইউআরঅনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৭৩ জন বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে ২ লাখ ১৭ হাজার ৪৩১ পাউন্ড সংগৃহীত হয়েছে। মাত্র ১০ ডলার দিয়ে যে কেউ এ উদ্যোগের অংশীদার হতে পারেন।
ইউআরঅন বর্তমানে আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। এ প্ল্যাটফর্মে ইউটিউবের মতো উপার্জনের সুযোগও থাকছে। ব্যবহারকারী চাইলে নিজের অ্যাকাউন্টে কোনো তৃতীয় পক্ষের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। আবার তার পরামর্শ বা কাজ দেখার জন্যও তিনি চার্জ নিতে পারেন। আবার কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান টাকা দিয়ে কোনো দক্ষ বা বিশেষজ্ঞ ব্যবহারকারীর কনটেন্ট দেখতে বা যাচাই করতে পারবে।
ইউআরঅনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেরিন ম্যালিনসন বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের শোচনীয় অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সেখানে ইউআরঅন এ সমস্যার একটি মলম। আমরা কমিউনিটির কৌতূহলকে উৎসাহিত করছি। সূত্র : জিডিনেট
ঠিকানা/এনআই