
ঠিকানা রিপোর্ট ; দিন যত যাচ্ছে মানুষের কাছে ইবি-৩ ভিসার বিষয়টি তত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই ক্যাটাগরিতে স্কিলড এবং নন-স্কিলড দুই ধরনের মানুষের জন্য আবেদন করা যেতে পারে। যারা বিভিন্ন বিষয়ে স্কিলড তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এটি করতে সব মিলিয়ে ৩-৪ বছর সময় লেগে যায়। ইবি-৩ ভিসার নিয়ম হচ্ছে যার জন্য আবেদন করা হবে, তার জন্য অবশ্যই কোম্পানির মালিককে বা কোম্পানির সিগনেটরি অথরিটি, যিনি তার কোম্পানিতে লোক নিয়োগ করবেন, তিনি আবেদন করবেন। এ ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থী আবেদন করতে পারবেন না। তার জন্য আবেদন করা থেকে শুরু করে সবকিছু করতে হবে কোম্পানি থেকে একজন আইনজীবীর মাধ্যমে। এসব কথা বলছিলেন অ্যাটর্নি জান্নাতুল রুমা।
তিনি বলেন, অনেকেই এখন ইবি-৩ ক্যাটাগরিতে ইমিগ্র্যান্ট হতে চাইছেন। এ জন্য আবেদন করার আগে বেশ কিছু বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান যেমন থাকতে হবে, তেমনি অবশ্যই প্রয়োজনীয় নথিপত্র থাকতে হবে। যারা স্কিলড তাদের অভিজ্ঞতার কাগজগুলো কাজে লাগবে। নন-স্কিলড হলে তাদের জন্য অত কিছু লাগে না।
অ্যাটর্নি রুমা বলেন, আমরা ইবি-৩ এর ফাইল করা শুরু করেছি। যার জন্য আবেদন করা হবে, তার জন্য একটি কোম্পানিকে এটা ঠিক করতে হবে যে তিনি তাকে হায়ার করতে চান। যার জন্য আবেদন করা হবে, তার জন্য লেবার সার্টিফিকেশন লাগবে। লেবার সার্টিফিকেশনের জন্য লেবার ডিপার্টমেন্টে আবেদন করতে হবে। সেখান থেকে সার্টিফিকেট আসবে। সেখানে লেখাও থাকবে তার বেতন কত হবে এবং তিনি কী কী সুবিধা পাবেন।
লেবার ডিপার্টমেন্ট থেকে সার্টিফিকেশন এলে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আইনজীবীর মাধ্যমে নিয়োগকর্তা সবকিছু করবেন। এখানে যাকে নিয়োগ করা হচ্ছে, তিনি আইনজীবী নিলে হবে না। নিয়োগকর্তাকেই নিতে হবে। তিনি সব নথিপত্র দেওয়ার পর ইমিগ্রেশনে সংশ্লিষ্ট ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে হবে। এটি অ্যাপ্রুভ হলে গ্রিনকার্ড, ওয়ার্ক পারমিট সোশ্যাল, ট্রাভেল ডকুমেন্টসহ সবকিছুর জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর সব প্রক্রিয়া শুরু হবে। যদি কেউ এখানে থেকে আবেদন করেন, তারা যে ক্যাটাগরিতেই থাকেন না কেন, তাদের বৈধ স্ট্যাটাস ধরে রাখতে হবে। কেউ যদি এখানে থেকে স্ট্যাটাস অ্যাডজাস্ট করেন, তাহলে তাকে এখানে পুরো পরিবার নিয়ে এসে থাকলে স্ট্যাটাস অ্যাডজাস্ট করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আবেদন করতে দেরি হলে সবার স্ট্যাটাসই চলে যাবে। কেউ যদি মনে করেন, তিনি এখানে ইবি-৩ এর মাধ্যমে আসবেন, তাহলে তার জন্য আবেদন করা হলে তিনি দেশেও থাকতে পারেন। কনস্যুলেটের মাধ্যমে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর এখানে আসতে পারেন। আবার যুক্তরাষ্ট্রে এসে আবেদন করলে স্ট্যাটাস ধরে রাখার জন্য ভিসার ক্যাটাগরি চেঞ্জ করে এফ-১-এ গিয়ে লেখাপড়াও করা যাবে। তবে ভিসার ক্যাটাগরি এখানে চেঞ্জ করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
অ্যাটর্নি রুমা বলেন, সাধারণত এই ক্যাটাগরিতে ১০ বছরের জন্য গ্রিনকার্ড দেওয়া হয়ে থাকে। যাদের গ্রিনকার্ডের মেয়াদ পাঁচ বছর হয়ে যায়, তারা পাঁচ বছর পর সিটিজেন হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। সিটিজেন না হলেও গ্রিনকার্ড দিয়েই এখানে থাকা যায়। ১০ বছর পর চাইলে গ্রিনকার্ড নবায়ন করা যাবে।
অ্যাটর্নি রুমা বলেন, আমরা সবাইকে সাজেশন দিই, চাকরি নিতে চাইলে এমন প্রতিষ্ঠানে নিতে হবে, যাতে তিন বছর চাকরি করা যায়। কারণ তিন বছর চাকরি করার পর কেউ অন্য কোথাও চলে গেলেও সমস্যা নেই। নিয়ম হচ্ছে তিন বছর কাজ করার পর তাকে প্রপারলি বেতন-ভাতাসহ সব দিতে হবে। আসলে কেউ কোনো কোম্পানির স্পন্সর দ্বারা চাকরি পেলে তাকে টার্ম অ্যান্ড কন্ডিশন পূরণ করতে হবে। এখানে দু’পক্ষকেই সমঝোতার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। ইবি-৩ ক্যাটাগরিতে কেউ আসতে পারলে এবং কাজ করার সুযোগ পেলে তিনি তার ২১ বছরের নিচের সকল বাচ্চার জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং গ্রিনকার্ড পাবেন এবং সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাও পাবেন।
রুমা আরও বলেন, যাদের এ ধরনের অফার পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তারা কোনোভাবে আমেরিকায় এলেও স্ট্যাটাস হারাবেন না। কারও ভিসার মেয়াদ না থাকলে তার দেশে চলে যাওয়াই উচিত। কারও যদি এখানে ছয় মাসের বেশি থাকার মতো স্ট্যাটাস না থাকে, তাহলে তাকে এখান থেকে চলে যাওয়া উচিত। পরে প্রয়োজনে আবার আসতে পারবেন কিন্তু স্ট্যাটাস হারানো যাবে না।