ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষের মুখে ৫২ লাখ শিশু

বিশ্বচরাচর ডেস্ক : যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেনের ৫২ লাখ শিশু নতুন করে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়েছে। পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, ক্ষুধায় কাঁদতেও ভুলে গেছে ওইসব শিশু। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসনের কারণে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এই দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এভাবে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে একটি প্রজন্মকেই শেষ করে দেয়া হচ্ছে। যুদ্ধাবস্থার কারণে রসদ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় খাদ্যাভাব নজিরবিহীন পর্যায়ে চলে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এ খবর দিয়েছে আলজাজিরা।

২০১৫ সাল থেকে সরকারবিরোধী হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। এতে ইয়েমেনজুড়ে লড়াই ছড়িয়ে পড়ে। দেশটির বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকাগুলোতে পাঠানো ত্রাণের অধিকাংশই প্রধান সমুদ্রবন্দর হুদেইদাহের মধ্য দিয়ে ওই এলাকাগুলোতে যায়। কিন্তু হুদেইদাহের চারপাশে চলা লড়াইয়ের কারণে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সরবরাহ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এতে বিদ্যমান পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী, লোহিত সাগরের হুদেইদাহ বন্দর থেকে রসদ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় দেশটিতে খাদ্যাভাব নজিরবিহীন পর্যায়ে চলে যেতে পারে। বিবিসি জানিয়েছে, যুদ্ধের কারণে বাড়তে থাকা খাদ্যমূল্য ও ইয়েমেনি মুদ্রার অব্যাহত দরপতনে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকির মধ্যে পড়া পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চলতি মাসের প্রথম দিকে সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই ৩৬ লাখেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বেসরকারি এ সংস্থাটি। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী হেল থর্নিং-শ্মিট জানিয়েছেন, ‘লাখ লাখ শিশু জানে না, এরপর তারা কখন খাবার পাবে অথবা আদতেও খাবার পাবে কি না। উত্তর ইয়েমেনের (বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত) একটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম, সেখানে শিশুদের কান্না করারও শক্তি নেই, ক্ষুধায় তাদের দেহ অবসন্ন হয়ে গেছে। হেল থর্নিং-শ্মিট আরও বলেন, এতে ইয়েমেনি শিশুদের পুরো এক প্রজন্মকে ধ্বংসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, যারা বোমা থেকে শুরু করে ক্ষুধা ও প্রতিরোধযোগ্য রোগ, যেমন কলেরার মতো বহুমাত্রিক হুমকির সম্মুখীন।