ঈদে নির্বাচনী প্রস্তুতি সেরে নিল আ’লীগ

নিজস্ব প্রতিনিধি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ উদ্্যাপন করেন। অনেকেই ঈদের আগে-পরে এলাকায় অবস্থান করেন, চালান গণসংযোগও। মূলত তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ধাপে ধাপে এই কার্যক্রম আরও জোরালো ভিত্তিতে চালানো হবে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, দলটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, থানা, মহানগর ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ঈদকেন্দ্রিক নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে, সামনে আরও ধাপে ধাপে ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন, নির্বাচনের বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিদেশীয় সফর শেষে দেশে ফিরলে জেলা ও বিভাগীয় নেতাদের ডেকে আরও নির্দেশনা দেবেন। এভাবে ধাপে ধাপে নির্বাচনী কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে। একপর্যায়ে ব্যাপকভিত্তিক নির্বাচনী কার্যক্রম চালাবে আওয়ামী লীগ।
সূত্র আরো জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারাবাহিকতা তুলে ধরে বিগত দিনে সরকার দেশের মানুষের জন্য যেসব কল্যাণকর ও উন্নয়নমূলক কাজ করেছে, তা জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে। একইভাবে তাদের ভাষায় বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, নিপীড়ন-নির্যাতন, জ্বালাও-পোড়াও, আন্দোলন-সংগ্রামের নামে বিরোধী দলগুলো অগ্নিসন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ব্যবহার করে অপরাজনীতির যে অশুভ তৎপরতা শুরু করেছে, এ বিষয়গুলোও মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে। যাতে বিএনপি জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব লক্ষ্যে তারা নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে, পর্যায়ক্রমে এই কার্যক্রম আরও বাড়বে।
জানা গেছে, এবারের ঈদে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে জনগণকে আওয়ামী লীগের পক্ষে নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয় দলীয় প্রধানের পক্ষ থেকে। তাই প্রতিটি জেলার নির্বাচনী আসনগুলোতে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা ঈদকেন্দ্রিক এলাকায় আসেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরেন এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চালান। বর্তমানে ঈদের আমেজ প্রায় শেষ। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। শিগগিরই প্রতিটি জেলায় বড় ধরনের সমাবেশ হবে। এসব সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু হবে। দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হবে, দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী খেলার মাঠে নামার জন্য আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। শিডিউল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় যাব। এখন চলছে অনানুষ্ঠানিক কার্যক্রম। তিনি বলেন, আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি, জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছি, নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছি। সবাই এলাকায় যাচ্ছেন, আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য কথা বলছি। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, কীভাবে নির্বাচনে প্রচারণা চালানো হবে, ভোটারদের কীভাবে দলীয় বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে, এসব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে গেছে। তফসিল ঘোষণার পর ব্যাপক ভিত্তিতে প্রচারে মাঠে নামা হবে।