ঠিকানা অনলাইন : পৃথিবীতে কত অদ্ভুত কাণ্ডই না ঘটে। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর সুবাদে আমরা এ ধরনের ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে জেনেও যাই। এসব ঘটনার কোনোটি চমকপ্রদ, কোনোটি বিস্ময়কর, কোনোটি আজব, কোনোটি গুজব, কোনোটি হাস্যকর, কোনোটি লজ্জাকর, কোনোটি সুখপ্রদ, কোনোটি বেদনাদায়ক, কোনোটি মর্মস্পর্শী আবার কোনোটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক থেকে সাসু নামের এক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এমনই এক চমকপ্রদ, বিস্ময়কর ও ব্যতিক্রমী মিছিলের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। ‘সমগ্র সিঙ্গেল নারী সমাজের’ ব্যানারে ‘এই শীতেই জামাই চাই’ শিরোনামের ব্যানার নিয়ে বেশ কয়েকজন অবিবাহিত নারী রাজপথে মিছিল করছেন। এ সময় তারা ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’, ‘সিঙ্গেলদের আর্তনাদ, শুনতে হবে শুনতে হবে’সহ নানা স্লোগান দিচ্ছিলেন। ওই নারীরা জামাই পাওয়ার সময়সীমাও বেঁধে দেন। ব্যানারটিতে দেখা যায়, সেই সীমা চলতি বছরের ২০ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর।
এমন একটি মিছিলের ছবি পোস্ট করে সাসু নামের ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্টধারী তার মন্তব্যে লেখেন, করোনাকালেই মানে ‘সমগ্র সিঙ্গেল নারী সমাজ’-এর একটিই দাবি। ‘এই শীতেই জামাই চাই।’ আমি শতভাগ এনাদের পক্ষে। কারণ ‘করোনাকালে’ বিয়ে-শাদিতে খরচ কম। বড় পার্টি বা অলিমাখানা আয়োজনের অনুমতি নেই। মারীকাল বলে বেশি কেনাকাটার ধুমও নেই। হলুদ, আইবুড়ো ভাত ইত্যাদি এড়ানো সম্ভব। তাছাড়া করোনা সংক্রমণের ভয়ে অতিথিরা যোগদানে অনাগ্রহী। হবু পাত্রবৃন্দ সুযোগটি নিতে পারেন। দীর্ঘ-নিঃসঙ্গতা বা ঘর-বন্দিত্বকালের একাকীত্ব ঘোচাতে বধূসঙ্গই মহাবিকল্প! দেশে-বিদেশে করোনাকালে রেকর্ডসংখ্যক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। একজন পাত্র বলেছেন, ‘করোনায় মরি-বাঁচি ঠিক নাই। তাই মাত্র একলাফে বিবাহকর্মটির মজা নিয়ে ফেললাম…!’ তিনি আরও যা বললেন, তা অবশ্য ভীষণ চিন্তার। বললেন, ‘এত সস্তায়, ভাবতেছি শরিয়তমতো আরো ২-৩ টা… ’
পোস্টটি দেওয়ার পর প্রখ্যাত কবি সালেম সুলেরীসহ অনেকেই এটি শেয়ার করেন। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় এটি। বয়ে যায় কমেন্টের বন্যা।
এমদাদুল হক নামের একজন কমেন্ট করেন, ‘আহ্বানটা ভালো। যদি মিলত মনের মতো একখান। তাতেই হতাম তৃপ্ত। আপনার কথায় পেলাম সাহস, পাই বিয়ে করার শক্তি। এখন পাত্রী পেলেই হলো কিংবা তিনার বাবা রাজি…।’
ড. নজরুল আমিন পলাশ নামের আরেকজন লেখেন, ‘এটিই সম্ভবত করোনাকালে সবচেয়ে মজার ত্রবং আশ্বস্তের খবর। ধন্যবাদ সাসু ভাই এমন একটি খবর দেবার জন্য।’
সৈয়দ মাহমুদ তাসলিম নামের আরেকজন কমেন্ট করেন, ‘কেয়ামত আসার পূর্বে নাকি নারী সম্প্রদায় এভাবে রাজপথে জামাই খুঁজবে—হেফাজতে ইসলাম, চরমোনাই।’
মনজুর আলম নামের আরেকজনের প্রত্যাশা, ‘চমৎকার উপস্থাপনা! পূর্ণ হোক সিঙ্গেলদের বাসনা।’
রাইসুল হক নামের আরেকজনের ভাষ্য, ‘আর কী দেখার বাকি আছে ভেবেই আত্মহারা।’
কবি জাকারিয়া ছন্দে ছন্দে লেখেন, ‘পূরণ হলে দাবি, কেউ হবে ভাবী।’
পারুল কর্মকার আবার ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘আমার কাছে একজন পাত্রের ঠিকানা আছে…লাগলে দিতে পারি…’
শহিদুল সরকারের মন্তব্য, ‘ভাগ্যে থাকলে এই শীতেই শিকা ছিঁড়বে ! শুভকামনা রইল সকলের জন্য।’
ঠিকানা/এনআই