মুহম্মদ ফজলুর রহমান
ফেব্রুয়ারি মাস এলে বাঙালিমাত্রই সবার মনে গুণ গুণ করে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি’- এই গানটি। ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের জীবনে বহুমাত্রিক অনুভবের মাস। আমরা কেউ বলি ফেব্রুয়ারি ভাষার মাস। ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার মাস। কেউবা মনে করেন বাঙালিদের জন্য ফেব্রুয়ারি মাস প্রথম রক্ত দিয়ে আত্মজাগরণের মাস। রফিক, শফিক, সালাম, জব্বার, বরকত নিজেদের রক্ত দিয়ে বাংলাভাষায় কথা বলার অধিকারই কেবল প্রতিষ্ঠা করে যাননি, একটি ঘুমিয়ে থাকা জাতিসত্ত্বার কীভাবে ঘুম ভাঙাতে হয়, বাঙালিদের সে শিক্ষাও দিয়ে গেছেন। শত্রু বা প্রতিপক্ষ যত শক্তিশালীই হোক, তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ভয়শুন্য চিত্তে কীভাবে রুখে দাঁড়াতে হয়- সে শিক্ষা বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে বিক্ষিপ্তভাবে অর্জন করলেও একেবারে কেবলই বাঙালি শক্তি এক হয়ে অধিকার ছিনিয়ে আনতে হয়, সে শিক্ষা আমরা পেয়েছি এই একুশের কাছ থেকে।
সেই বিচারে একুশ আমাদের শিক্ষকও বটে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে লড়াই, তার শিক্ষা, স্বায়ত্ত্বশাসন আদায়ের শিক্ষা, ভয়ের কাছে, অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার শিক্ষা- এসবই আমাদের একুশের কাছ থেকে অর্জন করা। একুশ আমাদের জেগে উঠার সেই শিক্ষাও দিয়ে গেছে, যে শিক্ষা নিয়ে আমরা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে পারি। ক্ষতি যদি কিছু হয়ও, তবু মিথ্যা পরিহার করে সত্যের পথে অগ্রসর হওয়ার শিক্ষাও আমরা পেয়েছি একুশের কাছ থেকেই।
বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাঙালিদের চিনতে পারেননি, তাঁর অবস্থান থেকে। সাহেবি কালচার এবং ইসলামি পোষাকে অভ্যস্ত মি. জিন্নাহ বাঙালিদের চেনার-বোঝার চেষ্টাও করেননি। তাই বাংলাদেশ সফরে এসে ভেবেই নিয়েছিলেন, সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত পাকিস্তানের আর যেই হোক, ‘ভেতো’ বাঙালিরা কখনো তাঁর সামনে গলা উঁচু করে প্রতিবাদ করতে সাহস পাবে না। তিনি চিনতে খুবই ভুল করেছিলেন যে, বাঙালিরা তাঁর সামনে কেনো, বাঘের সামনে, কামান-বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়েও কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে ভয় পান না। তাইতো দ্বিধাশূন্য চিত্তে বাঙালিরা একমাত্র উর্দুকে জিন্নাহর রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন একটুও সময় না নিয়ে এবং কোনরকম চিন্তা-ভাবনা না করে। সেই থেকে পাকিস্তানি শাসকবর্গের বিরুদ্ধে বাঙালিদের লড়াই-সংগ্রাম শুরু হয়ে গেলো। তারা সব শক্তি, ষড়যন্ত্র নিয়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে রফিক, শফিকসহ বহুজনের জীবন নিয়েও শেষে পরাজয় মেনে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। একুশের মর্যাদা আরও বাড়িয়ে দেয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি। আমাদের একুশ এখন বিশ্বের সকল ভাষার রক্ষাকবচ।
এখানে একটি বিষয় খুবই তাৎপর্যপূর্ণ যে, ভাষার আন্দোলন করতে গিয়ে বাঙালিরা বুঝে নেয় তাদের নিজস্ব শক্তি সম্পর্কে। এই আত্মোপলব্ধি তাদের বিভিন্ন লড়াই-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই শক্তি লালন করে করে আমরা একসময় স্বাধীনতার সংগ্রামে পৌঁছে যাই। এই শক্তিতে বলীয়ান হয়ে স্বাধীনতা অর্জনও করি আমরা বাঙালিরা। এরই মধ্যদিয়ে শুরু হয়ে যায় বাঙালির বিশ্বজয়ের দৌড়। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের ‘থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে/দেখবো এবার জগতটাকে/কেমন করে ঘুরছে মানুষ/যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে…’। এই চেতনায় বাঙালিরা পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ে। বন্দরে বন্দরে গড়ে তোলে ছোট ছোট, খণ্ড খণ্ড লাল সবুজের বাংলাদেশ। একুশে ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এও আমার এক অহংকার।
একুশ শুধু অমাাদের সাহসের উন্মেষ ঘটায়নি। বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিভা বিকাশের দরোজাও খুলে দিয়েছে মায়ের ভাষার অধিকার ছিনিয়ে এনে। তাইতো কবি বলেন, ‘মিটে কি আশা, বিনে বাংলাভাষা’। বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির ধারণা পাল্টে যায় ’৫২’র ভাষা আন্দোলনে সাফল্য অর্জনের পর। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন। স্বাধীনতার পর যেনো বাংলা সাহিত্যচর্চা নতুন গতি পায়। ভাষার জড়তা ঘুঁচিয়ে দেয়। ভাষা সতেজ হয়, সজিব ও সপ্রতিভ হয়। ঘরকুনো বাঙালিরা ঘর ছেড়ে দশ-দিগন্তে বের হয়ে পড়ে। সবুজ পাসপোর্ট পেয়ে বাঙালি পরিচয়ে গড়ে তুলতে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য। এখানকার স্কুল-কলেজে আসন দখল করতে থাকে মেধার পরিচয় দিয়ে। প্রবাস কমিউনিটিতে বিকাশ লাভের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক কিছু করার চিন্তা অনেকের মনে উঁকি দিতে থাকে। ৮০’র দশকের দিকে যখন আজকের মতো পায়ে পায়ে বাঙালির দেখা মিলতো না, মাঝে মাঝে দেখা হলে তারা আনন্দে ভাসতেন। সদ্য দেশ ও স্বজন বিচ্ছিন্ন প্রবাসীরা স্মৃতি কাতরতায় ভুগতেন। সেই কাতরতা কাটাতে প্রবাস ও দেশের মধ্যে একটি বিনিড় সেতুবন্ধ রচনার লক্ষ্যে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন দু-একজন মানুষ প্রবাসীদের হতাশা দূর করতে পত্রিকা প্রকাশের প্রয়াস নেন।
এ রকমই একজন অগ্রসর চিন্তার মানুষ এম এম শাহীন এবং তার চিন্তার ফসল ‘ঠিকানা’। তিনি ‘ঠিকানা’ প্রকাশের দিন হিসেবে বেছে নেন ঐতিহাসিক শহীদ দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি। এও এক তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তার অঙ্গীকার ছিল ঠিকানা পরিচালিত হবে একুশের শিক্ষা ও চেতনায়। প্রবাসেও বাংলাভাষা, শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চাকে প্রবাস-বৈরী পরিবেশেও লালন করার আন্তরিক তাড়না সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখা, আগামী প্রজন্মকে বাংলা ভাষাকে ভুলে যেতে না দেয়ার সহায়তা করায় ঠিকানা যেনো অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে।
একুশের যেমন শিক্ষা কারো রক্তচক্ষুকে ভয় না পেয়ে, কোন পেশীশক্তির কাছে নতজানু না হয়ে সত্যকে সত্য, সাদাকে সাদা বলার সাহস রাখা। ঠিকানার শিক্ষাও সেই পথ ধরে এগিয়ে চলা এবং ৩৩ বছর ধরে আনন্দের সঙ্গে, সাহসের সঙ্গে পথে হেঁটে চলেছে। ঠিকানা কখনো এই পথ থেকে সরে দাঁড়ায়নি। ঠিকানার জন্মের আরো একটি অঙ্গীকার ছিল- কোন দেশবিরোধী, প্রবাস কমিউনিটি বিরোধী শক্তিকে মদদ না দেয়া, তার সঙ্গে আপস না করা। ঠিকানা এই অঙ্গীকারও সবসময় দৃঢ়তার সঙ্গে রক্ষা করে চলে আসছে।
নিউইয়র্কে বাঙালি কমিউনিটি তখন সদ্য বিকশিত হচ্ছে। ১৯৯০ সাল থেকে প্রথমে ওপি ওয়ান, পরে ডিভি লটারি পেয়ে হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষভাবে নিউইয়র্কে, বিপুল সংখ্যায় বাঙালি আসতে শুরু করে। তখন তাদের অনেকটাই দিশেহারা অবস্থা! কী করে টিকে থাকবেন, নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করবেন- সেই জীবন সংগ্রামে ব্যস্ত। দিশেহারা, দিকহারা, স্বদেশ কাতরতায় আক্রান্ত মানুষদের পাশে খুব জরুরি ছিল একটি সাহসী, নির্ভীক এবং বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান। যে বা যারা নতুন এই কমিউনিটিকে দিক দেখাতে পারে। সঠিক পথের সন্ধান দিতে পারে। নতুন কমিউনিটির দিশেহারা মানুষদের কর্মসংস্থান, মাথা গোঁজার আশ্রয়, সন্তানদের জন্য ভালো স্কুলের খোঁজ, ব্যবসা-বাণিজ্যের সঠিক পরামর্শ দিয়ে সাফল্যের স্বপ্ন দেখাতে পারে। দেশকেও বুকের ভেতর ধরে রাখার পরিবেশ পাওয়াও ছিল জরুরি।
সেই শূন্যতা মেটাতে ঠিকানা সঠিকভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করে নেয়। কমিউনিটির মানুষ অল্পদিনেই ঠিকানাকে আস্থায় নিয়ে সামনে আশা দেখতে পায়। এবং উভয়ে উভয়ের হাত ধরে পথ চলে আজকের আলোকিত ও সাফল্যের অবস্থানে দু’পক্ষই। তবে পথটা সহজ ছিল না। খুবই দুর্গম ও বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। সেই দুর্গমতাকে সুগম্য করে তুলতে ঠিকানা কর্তৃপক্ষ, কর্মরত সাংবাদিক, কর্মীদলের অবদানও অসীম। এখানে আমি অবশ্যই সাঈদ-উর-রব-এর ভূমিকাকে অকুণ্ঠচিত্তে স্মরণ করবো। জনাব শাহীন যখন এলাকার মানুষের সেবা করতে দেশে চলে যান, তখন তিনি গভীর আস্থায় দায়িত্ব অর্পণ করে যান রব ভাইয়ের উপর। তিনি সর্বোচ্চ সততা, নিষ্ঠা, মেধা দিয়ে ঠিকানার এগিয়ে চলার গতিকে আরো এগিয়ে নিলেন এবং ঠিকানাকে সর্বাধিক জনপ্রিয় করে তুললেন। সবার জন্য ঠিকানাকে অনিবার্য অভ্যাসের অঙ্গ করে তুলতে সাফল্য অর্জনে সক্ষম হলেন। সম্পাদক এবং সিইও হিসেবে জনাব রবের দায়িত্বকাল অবশ্যই উল্লেখযোগ্য সময় বলে গণ্য হবে।
এম এম শাহীন পুনরায় দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর ঠিকানার সাফল্যের সেই ধারা আজও অব্যাহত আছে। এর পেছনে কোন যাদু-মন্ত্র, কোন অলৌকিকতা নেই। আছে কেবল কর্তৃপক্ষ ও কর্মরত সাংবাদিক-কর্মীবাহিনীর একুশের শিক্ষা ধারণ করে পথচলা, সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ মেনে চলা। চলতি হাওয়ায় গা ভাসিয়ে না দিয়ে সত্য ও ন্যায়কে ধারণ করে চলার দুঃসাহসিকতাই ঠিকানার সাফল্যের চাবিকাঠি। ঠিকানার মূল লক্ষ্য কমিউনিটির মানুষ, তাদের নিত্যদিনের সাথী হয়ে চলা। নতুন প্রজন্মকে সাফল্য লাভের পথ দেখানো। বাংলাভাষা-সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস প্রবাস পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়াকে কর্তব্য মনে করা। একুশের জাতক হিসেবে ঠিকানার কাছে এ প্রত্যাশা সবার। ঠিকানা তার দায়িত্ব সঠিকভাবেই মেনে চলেছে গত ৩৩ বছর। চারিদিকে মিথ্যা আর ছলনার এই দুঃসময়ে ঠিকানার কাছে সবার যে প্রত্যাশা- ঠিকানা সবসময় প্রস্তুত সে প্রত্যাশা পূরণের।
মূলধারায় নতুন প্রজন্মকে অংশগ্রহণে আগ্রহী করে তুলতেও ঠিকানা ভূমিকা রাখে। দেশ কাতরতায় যারা ভোগেন, ঠিকানা তাদের সামনে প্রতি বুধবার অখণ্ড এক বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরার প্রয়াস নেয়। সংবাদে-ছবিতে, প্রবন্ধে-নিবন্ধে, সম্পাদকীয়-উপসম্পাদকীয়- সবখানে বাংলাদেশ খুঁজে পাওয়া যায়। সংবাদ পরিবেশনে ব্যতিক্রমী প্রয়াসও লক্ষ্যণীয়। জ্ঞান-বৈরিতা পরিহার করে জ্ঞানচর্চার পথকে আরো প্রশস্ত, আরো আলোকিত করে তোলার দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছে ঠিকানা। ঠিকানার সবটাই যে সাফল্যের, সবটাই যে প্রশংসার- সে দাবি অবশ্যই করা যাবে না। সব কাজেই কিছু ঘাটতি থাকে, থাকে কিছু সমালোচনাও। সেই সমালোচনা যতটুকু বাস্তবানুগ ঠিকানা তা সাদরে গ্রহণ করে ভবিষ্যতে নিজেকে আরো গুছিয়ে নেয়ার সুযোগ পায় বলে মনে করে। এতে ঠিকানার শক্তি বৃদ্ধি পায়।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে হোক কিংবা প্রবাসে, সাংবাদিকতা এবং সাংবাদিকদের সম্পর্কে নৈতিবাচক অনেক কথা শুনতে পাওয়া যায়। সবটা সঠিক যেমন নয়, সবটা ঠিক নয়- তাও বলা যাবে না। ‘সাংবাদিকরা কোন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা নয়’- এ কথা বলে নিজেদের সবসময় আত্মপক্ষ সমর্থন যুক্তিগ্রাহ্য হয় না। সাংবাদিকরাও সমাজের দৃষ্টির বাইরে বসবাস করেন না। সাংবাদিকদেরকেও সমাজের দৃষ্টিতে মন্দ কিছু পড়লে, তার জন্য জবাবদিহি করতে হয়। এবং জীবনটাও তাদের কেবল সাংবাদিকতার মধ্যেই সীমিত নয়। তাদের চলাফেলা, কথাবার্তা, আচার-আচরণও সমাজ লক্ষ করে থাকে। অনেক সাংবাদিকেরই এই কাজগুলো সমাজ ভালোভাবে নিতে পারে না। আমাদের সবারই একটা কথা মনে রাখা দরকার যে, সাংবাদিকতা ও সাংবাদিকদের দায়িত্ব কেবল সত্য উন্মোচন নয়, গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, পরিবেশ রক্ষার পক্ষেও তাদের অবস্থান কাম্য। কোন কোন সাংবাদিকের কারণে সাংবাদিক সমাজ গোটাই সমালোচনায় পড়বে- এটা নিশ্চয়ই যুক্তিসংগত নয়। সাংবাদিক হিসেবে বিষয়গুলো আমাদের আত্ম-সমালোচনার আলোকে দেখা জরুরি নয় মনে হয়। সাংবাদিক সমাজের আমি নিজেও একজন। তাই আমার কিছু বলা দরকার বলে মনে হওয়ায় বললাম কথাগুলো। কারো খারাপ লাগলে দুঃখিত।
মেঘে মেঘে বেলা অনেক হলো। কলেজের শিক্ষকতা ছেড়ে যখন সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দিলাম, পেছনে তাকালে মনে হয়, এইতো সেদিন! দেখতে দেখতে প্রায় ৪৫ বছর এ পেশায় পথ হাঁটা হয়ে গেলো। এর মধ্যে ঠিকানা পরিবারের সঙ্গে ২৫ বছর। দীর্ঘ পথ। আনন্দ-বেদনা সবকিছু সঙ্গে নিয়েই পথচলা। তবু আনন্দাটাকেই আমার অর্জন বলে মনে করি। ঠিকানার কাছে আমার অনেক ঋণ। অতীতের সহকর্মীদেরও ভালোবাসায়-শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। আমার কৃতজ্ঞতা এম এম শাহীন, সাঈদ-উর-রব, বর্তমান সহকর্মী শহীদুল ইসলাম, নাশরাত আর্শিয়ানা, মুশরাত শাহীন অনুভা, মাসুদুর রহমান, রুহিন হোসেনের প্রতি। একথা আজ দ্বিধাহীন কণ্ঠে উচ্চারণ করতে পারি ‘একুশ আমার অহংকার, ঠিকানা আমার ভালোবাসা।
ঠিকানার ৩৪ বছরে পদার্পণের এই শুভ মুহূর্তে স্মরণ করছি ঠিকানার সব পাঠক, লেখক ও শুভানুধ্যায়ীদের। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ ও সুন্দর থাকুন। গভীর শ্রদ্ধা একুশের শহীদদের প্রতি।
লেখক : প্রধান সম্পাদক, ঠিকানা।