এক ডজন নেতার দৌড়ঝাঁপে আছেন বিতর্কিতরাও

যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শেষ

বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাহুল হোসেন সাচ্চু

ঠিকানা রিপোর্ট : কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নিউইয়র্কে উৎসবমুখর পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শেষ হয়েছে। কাউন্সিল শেষে তাৎক্ষণিক কমিটি না হলেও সম্মেলনের উদ্বোধক ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাহুল হোসেন সাচ্চু ঘোষণা দিয়েছেন, ‘আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা থেকে কমিটি আসবে।’ তবে সেই কমিটিতে কারা থাকছেন সে সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ঝাঁপে প্রায় এক ডজন নেতা রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিতর্কিত নেতাও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের উডসাইডের গুলশান টেরেসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি ঢাকা থেকে সম্মেলনে ভার্চুয়াল বক্তব্য দেন। একইভাবে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. মোহাম্মদ আলী মানিক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আইরিন পারভীন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল আলম ভূঁইয়া জুয়েল, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সমন্বয়কারী হিন্দাল কাদির বাপ্পা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক মহিউদ্দিন দেওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য সচিব শেখ আতিকুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. ওহিদুজ্জামান লিটন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন রাকিব ও মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী পিনু।
যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নূরুজ্জামান সরদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুবল দেবনাথের সঞ্চালনায় সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
ঢাকা থেকে দেওয়া ভার্চুয়াল বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। যারা বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার করছে তারাই এখন পিছিয়ে পড়ছে।
তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এখন আমাদের লক্ষ্য উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
এদিকে সম্মেলন শেষে কারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। তবে এই দৌড়ে সভাপতি পদে ছয়জনের নাম জোরালোভাবে সামনে এসেছে। তারা হলেন- স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সাখাওয়াত বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাফিকুর রহমান তুরান, এইচ এম ইকবাল, সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, বাছির আহমেদ ও সুবল দেবনাথ।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা হেলাল আহমেদ ও সাইফুল ইসলাম। তবে সভাপতি পদের দৌড়ে এগিয়ে থাকা সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া সমানভাবে সাধারণ সম্পাদক পদেও দৌড়াচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত কে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হন তা নির্ভর করছে কেন্দ্রের ওপর। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মত জায়গায় যোগ্যদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দেখতে চায় কেন্দ্র। সে লক্ষ্যে চলছে শেষ মুহূর্তের যাচাই-বাছাই।
আরো বেশ কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে। সব মিলিয়ে প্রায় এক ডজন নেতা প্রতিদিন দৌড়ঝাঁপ করছেন এবং নানাভাবে যোগাযোগ করছেন কেন্দ্রের সঙ্গে।
এদিকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিতর্কিত নেতা-কর্মীর নামও এসেছে। সাধারণ নেতা-কর্মীরা যোগ্যতা অনুযায়ী ত্যাগীদের মধ্যে ধেকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রের কাছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা-কর্মী বলেছেন, অনেকে প্রবাসে গায়ের জোর দেখিয়ে নেতা হতে চান। তাদের কারো কারো আচরণ উচ্ছৃঙ্খল। এসব নেতাদের কেউ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবেন বলে মত দেন সাধারণ নেতা-কর্মীরা।
অনেকে বলছেন, কমিটি গঠনকে সামনে রেখে নতুন মুখের দেখা মিলছে। তারা ত্যাগী নেতা-কর্মী নন। বরং তারা মুলত দুধের মাছি। কেন্দ্র তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা করছি।