
ঠিকানা রিপোর্ট : কুইন্সের ইস্ট এলমহার্স্টের আবু হুরায়রা মসজিদের নতুন ভবন উদ্বোধন করলেন মেয়র এরিক অ্যাডামস। ১৮ মার্চ শনিবার দুপুরে মসজিদের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনকালে মুসল্লিদের আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ। এসময় নিউইয়র্কের কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ম্যালিন্ডা কার্টজ, অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমারসহ কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মেয়র এরিক অ্যাডামসকে মসজিদ আবু হুরায়রার ট্রাস্টি,পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এবং ডেমোক্র্যাট দলের ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী স্বাগত জানান। এসময় মেয়র অ্যাডামসকে একটি টুপি পরিয়ে দেন এবং প্রত্যেক অতিথির হাতে এক কপি করে পবিত্র কোরআন শরিফ উঠিয়ে দেন। মুসল্লিরা নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিতে থাকেন।
মেয়র এরিক অ্যাডামস ফিতা কেটে মসজিদের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় মসজিদ কমিটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এ রৌফ রশিদ, সেক্রেটারি নবী হোসেইন, মতয়াল্লি মোহাম্মদ জুবেদুর রহমান জুবের, সিটি মেয়র অফিসের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মকর্তা মীর বাশার,কানাডার বিশিষ্ট স্কলার মাওলানা মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন আল-জাহারী, দারুস সালাম মসজিদেও খতিব মাওলানা আব্দুল মুকিত, আবু হুরায়রা মসজিদের খতিব মোহাম্মদ ফায়েক উদ্দিন, কমিউনিটি সংগঠক শমশের আলী, বশীর উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন নাজমুস সাকিব।
সিটি মেয়র অ্যাডামস তার বক্তৃতায় বলেন, পবিত্র কোরানের মর্মবাণী আমাদের অনুসরণ করে সমাজের কাজে এর প্রয়োগ করতে হবে।মেয়র বলেন, আমি নিউইয়র্কের প্রথম মেয়র যে শুধু কোন মসজিদই উদ্বোধন করছি না। আমিই প্রথম মেয়র যে টুপি পরে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি। তিনি বলেন, শুধু ধর্মের প্রতি নিবেদিত হলেই আল্লাহকে পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, আমরা যা করার তা করছি না। যুব সম্প্রদায় সহিংসতায় লিপ্ত হচ্ছে, গুলাগুলি করছে। এসবের অবসানে ধর্মের বাণী বুকে ধারণ করে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। মেয়র অ্যাডামস, নিউইয়র্ক সিটির স্কুলে হালাল খাবার পরিবেশন করার জন্য তার উদ্যোগের কথা জানান। উপস্থিত জনতা মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে মেয়র অ্যাডামসকে স্বাগত জানাতে দেখা যায়।

নতুন ভবনের উদ্বোধনী সভায় কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সমাজে বিদ্বেষের কোন স্থান নেই। বহু জনমিশ্রণের দেশে মুসলমানরা একটি শক্তশালী জনগোষ্ঠী বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিম ব্যান্ড পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কংগ্রেসে প্রথম আইন প্রস্থান উত্থাপনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। গ্রেস ম্যাং বলেন, জ্যাকসন হাইটসের আবু হুরায়রা মসজিদ শুধু একটি ধর্মীয় উপসানালয়ই নয়, এটি আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটি স্থাপনা।

ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি ম্যালিন্ডা কার্টেজ বলেন, নিউইয়র্কের কুইন্সে বাংলাদেশিরা জনসমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি বাংলাদেশিদের কারণে মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয় এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস কুইনসে ব্যাপকভাবে পালন করা হবে বলে জানান।

নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিতে নির্বাচিত প্রথম দক্ষিণ এশীয় অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমার বলেন, তিনি প্রতিদিন দক্ষিণ এশীয়দের জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। আসছে রমজানে মসজিদে খেজুর ও পানি সরবরাহ করতে তিনি উপস্থিত থাকবেন বলে জানান। জেনিফার রাজকুমার বলেন, তাঁর উদ্যোগেই আসছে ২৬ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে স্টেট আইনসভায় প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানো হবে।এছাড়া বক্তব্য রাখেন মসজিদ কমিটির সভাপতি এ রউফ রশিদ, সেক্রেটারি নবী হোসেন,অ্যটর্নী মঈন চৌধুরী, মোহাম্মেদ তজমুল আলী, মোহাম্মদ জুবের, মোহাম্মদ শ্হা আলম,আব্দুল খালিক,জাহেদ মোবারক,মোহাম্মদ মহি উদ্দিন,মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান প্রমুখ।
ভবন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান গৌরাঙ্গ কুণ্ড বলেন, আবু হুরায়রা মসজিদের নির্মাণ কাজে যুক্ত থাকতে পারাটা তার ব্যবসায়ী ও পেশাগত জীবনের মাইলফলক। তার প্রতি আস্থা রাখার জন্য তিনি মসজিদ কতৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।