এসপি সুভাষের দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক

ফরিদপুর : অবৈধভাবে অর্জিত প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা রাখার মামলায় ফরিদপুরের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রিনা চৌধুরীরবিরুদ্ধে

অভিযোগপত্র (চার্জশিট) প্রস্তুত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ ছাড়াও বাড়িসহ তার নামে-বেনামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।

ওয়ান ব্যাংকের তিনটি শাখায় ১৯টি এফডিআরে ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকা জমা রাখেন সুভাষ ও তার স্ত্রী। কিন্তু তাদের আয়কর বিবরণীতে তথ্যটি না থাকায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর রাজধানীর বংশাল থানায় মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ। মামলাটির তদন্তও করেন তিনি। এরপর এসপি সুভাষকে ফরিদপুর থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। পরে তাকে আর কোথাও পদায়ন করা হয়নি। বর্তমানে দুজনই এ মামলায় জামিনে আছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্তে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা অবৈধভাবে আয়ের প্রমাণ মিলেছে। চার্জশিট প্রস্তুত হয়েছে। শিগগিরই তা কমিশন বৈঠকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অনুমোদনের পর তা বিচারিক আদালতে দাখিল করা হবে।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ২০১৩ সালের ২৬ মে থেকে ২০১৭ সালের ২২ মে পর্যন্ত সময়কালে সুভাষ দম্পতির হিসাব নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তিনি পুলিশ বিভাগে চাকরিকালে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ স্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে ওয়ান ব্যাংকের ১৯টি এফডিআরে জমা রাখেন। ঢাকার বংশাল শাখায় ছয়টি, এলিফ্যান্ট রোডে একটি এবং যশোরের ১২টি এফডিআর হিসাবে স্থিতি ছিল ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকা; যা সুদ যোগ হয়ে আরও বেড়েছে। কিন্তু এফডিআরগুলোর স্থিতি ও তা অর্জনের উৎস ২০১৬-১৭ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি। একই সময়ে এসপি সুভাষের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে একটি বাড়ির মালিক হওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে তার স্ত্রী ও দুই ছেলে রাহুল সাহা ও সৌমিত্র সাহার ব্যাপারে তদন্ত এবং বাড়িটির মালিকানা যাচাইয়ে ঢাকা ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে এখনো অনুসন্ধান চলছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, কুষ্টিয়া ও যশোরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালনের পর এসপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ঝালকাঠিতে যোগ দেন সুভাষ চন্দ্র সাহা। এরপর তিনি ফরিদপুরে যোগ দেন। সাবেক এক পুলিশপ্রধানের ঘনিষ্ঠ এই কর্মকর্তার বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার রাধানগর গ্রামে।