বাবুগঞ্জ : বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্য লাকুটিয়া জমিদারবাড়ি। রাজা রায়চন্দ্র রায় কর্তৃক উনিশ শতকে নির্মিত বাড়িটি বরিশাল বিভাগের অন্যতম পুরনো জমিদারবাড়ি। অযতœ-অবহেলায় পড়ে থেকে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে ব্রিটিশ আমলের ওই নান্দনিক স্থাপনায়।
আদিপুরুষ রূপচন্দ্র রায়ের হাত ধরেই প্রতিষ্ঠা পায় লাকুটিয়া জমিদার বংশ। ১৬০০-১৭০০ সালের পর রূপচন্দ্রের পুত্র রাজচন্দ্র রায় এই জমিদারির পত্তন করেন। ওই বাড়িটি ভেঙে নতুন ভবন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বাড়িটির লিজগ্রহীতা সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএডিসি কর্তৃপক্ষ। এতে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাড়ির মূল ভবনের চার দিকের দেয়াল খসে পড়ছে। সিঁড়ি ভেঙে পড়ায় দোতলায় ওঠার উপায় নেই। এ অবস্থাতেও বাড়িটির অপূর্ব নির্মাণশৈলী পর্যটক টানছে। প্রতিদিন নানা বয়সের মানুষ বাড়িটি দেখতে ভিড় করে।
লাকুটিয়া জমিদারবাড়িটি নির্মাণ করা হয় মূল্যবান ইট-পাথর আর সুড়কির গাঁথুনিতে। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো বাড়িটির আশপাশে রয়েছে বিনোদনের মাঠ, দীঘি, মঠসহ নানা স্থাপনা। এখানকার সবচেয়ে সুন্দর স্থাপনা অক্ষত কিছু মন্দির।
বরিশাল শহর থেকে উত্তরদিকে বেশখানিকটা দূরেই লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি। এক সময় বাড়িটি সাংস্কৃতিক কর্মকারে পীঠস্থান হিসেবে ব্যাপক পরিচিত ছিল। ওই জমিদার পরিবারের সদস্যদের খ্যাতি ছিল প্রজাকল্যাণ ও বিবিধ জনহিতকর কার্যক্রমে। এরই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন বরিশাল শহরে নির্মিত হয়েছিলরাজচন্দ্র কলেজ। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের মতো ব্যক্তিত্ব ওই কলেজে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন।
স্থানীয় আব্দুল জব্বার ও প্রিন্স তালুকদার জানান, পাকিস্তান আমলে ওই এলাকায়পুষ্পরানী বিদ্যালয় নির্মিত হয়। তবে এর কোনো ঐতিহাসিক তথ্য তাদের কাছে নেই। এখন জমিদার নেই, জমিদারিও নেই। জমিদারের শেষ উত্তরাধিকারী দেবেন রায় চৌধুরী সপরিবারে কলকাতা চলে যান। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।