ওয়াদা করেন ফের নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন : প্রধানমন্ত্রী

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের রোষানল থেকে দেশ এবং জনগণকে বাঁচাতে নৌকায় ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা আপনাদের দোয়া, সহযোগিতা ও ভোট চাই; যাতে যুদ্ধাপরাধী ও খুনিরা আবার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

৪ নভেম্বর রোববার চট্টগ্রাম নগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি বিকাল ৩টা ৪৬ মিনিটে বক্তব্য শুরু করে টানা প্রায় এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন। এর আগে মঞ্চে উপস্থিত হয়ে উপস্থিত সবার প্রতি হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় বিভিন্ন উন্নয়নে প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

তার বক্তব্যের শুরুতে সকলকে সালাম দিয়ে চট্টগ্রামের ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে বলেন, ‘অনেরা ক্যান আছন? বেয়াজ্ঞুন গম আছন নি? তোয়ারার লাই আঁরতে পেট পুরের।’ এরপর তিনি চট্টগ্রামের প্রয়াত নেতাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

এরপর তিনি তার মূল বক্তব্যে ফিরে গিয়ে বলেন, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম লালদীঘির মাঠের জনসভায় নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৩০ জনকে হত্যা করা হয় এবং হামলা ও হত্যার সাথে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া সম্পৃক্ততা ছিল বলে উল্লেখ করেন। চট্টগ্রামের বহু হিন্দু বৌদ্ধ বিভিন্ন ধর্মালম্বীরা খালেদা জিয়ার হত্যা ও লাশ ঘুমের শিকার হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিগত দিনে দেশের উন্নয়ন করেছি, আপনারা সুযোগ দিলে আগামীতে আরও উন্নয়ন করব। তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই – আগামী নির্বাচনেও আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। দেবেন কি না? আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন।

সরকারপ্রধানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে উপস্থিত জনতা সমস্বরে চিৎকার করে ‘ভোট দেব’ বলে ওয়াদা করেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের জবাবে সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি রিজার্ভসহ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়েও কথা বলেন। পাশাপাশি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর চলা অন্যায়-নির্যাতন, বিএনপি-জামায়াতের ‘নানা অপকর্মের’ ফিরিস্তি তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ছিল ইতিহাস বিকৃতি আর হত্যা-ক্যুর ষড়যন্ত্র। হাজার হাজার সেনা-বিমানবাহিনীর অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে। একের পর এক ক্যু হয়েছে আর সারা রাত কারফিউ – এই ছিল তখনকার অবস্থা। আর এই হত্যাকাণ্ডে ছিল খুনি জিয়া-মোশতাক। বিচার চাওয়ার অধিকার আমার ছিল না। মা-বাবা-ভাই হারিয়েও বিচার চাইতে পারব না! তার পরও সবকিছু মাথায় নিয়ে ফিরে এসেছি বাংলার জনগণের কাছে। একটাই কারণ – এই জাতির জন্য আমার বাবা সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমার একটাই লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েই বারবার ক্ষমতায় এসেছি। আর ক্ষমতায় এসেছি বলেই এত উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছে। যেখান থেকে বিনা পয়সায় ৩০ ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন। আর বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় থাকতে কী দিয়েছিল? দিয়েছে অস্ত্র-খুন-হত্যা। শুধু রক্ত আর হত্যা ছাড়া বিএনপি তো কিছুই দিতে পারেনি দেশের মানুষকে। আর নিজেরা লুটপাট করেছে। নিজেরা মানুষের অর্থ পাচার করেছে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। নিজেদের উন্নয়ন করেছে।

ঠিকানা/এনআই