কবিরের কথা

কামরুল হোসেন লিটু :

তার জীবনটা সংগ্রামে ভরপুর।
দুরন্তপনায়ও সে কম না;
কখনো মাছ ধরে-কখনো গাছে চড়ে, ডিঙিনৌকা বায়।
এগুলো ছেলেবেলায় তো করেছে,
আজও এখনো বয়স ৫০-এ পৌঁছেও!

সে একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা।
নব্বইয়ের দশকে দক্ষিণ কোরিয়ায়
তার প্রথম সমর শুরু…
কয়েক বছরের প্রবাসজীবন শেষে
ব্যবসা ও বিয়ের পর সংসার সমুদ্রে…
বাংলাদেশে যা হয়, হাজারো সমস্যা বাকি-বকেয়া
অবশেষে ঋণখেলাপি হয়ে দেউলিয়া।

ওদের একান্নবর্তী পরিবার
তথাপি একাই সে ইঞ্জিন ও ড্রাইভার।
যখন সব পথ বন্ধ হয়ে যায়,
রাহমানুর রহিম তখন নতুন দ্বার খুলে দেয়।
রাব্বুল আল আমিনের রাস্তায়Ñএকদিন সন্ধ্যায়,
পৃথিবীর রাজধানীর বুকে সপরিবারে হাজির,
আমাদের কবির।

ব্যয়বহুল সারা দুনিয়ার লোকে ঠাসা এই কঠিন শহরে
প্রারম্ভিক টলায়মানতা সামলে, দেশের দায় মিটিয়ে,
একটু স্থিতিশীল হতেই কতগুলো বছর চলে যায়
বোকার স্বর্গে তারা, যারা ভাবে সব সুখ আমেরিকায়।

প্রায় তিন মাসের ব্যবধানে ভাই-মা ও পিতাকে হারিয়ে
চরম মানসিক বিপর্যয়ে দিশেহারা, তবু ‘লাইট হাউসের’ মতো দাঁড়িয়ে!
জীবনীশক্তি তার নীলা-দোলা ও শায়লা,
অনুপ্রেরণায় ভালোবাসার অর্ধাঙ্গিনী প্রাণপ্রিয় ‘খাদিজা’।
হাসি-খুশি আড্ডাবাজ আসর মাতিয়ে রাখার মধ্যমণি,
এই ‘কবির’ যার অর্থ ‘মহান এবং ক্ষমতাশালী’।