ঠিকানা রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সিটি, স্টেট এবং কাউন্টিতে নির্বাচিত বাংলাদেশি আমেরিকানদের মধ্যে জোট গঠনের মাধ্যমে প্রিয় মাতৃভূমির কল্যাণে কাজের সুযোগ তৈরী করা সম্ভব। একইসাথে কমিউনিটির সামগ্রিক উন্নয়নের প্রত্যাশা পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া যাবে। গত ২০ নভেম্বর রোববার নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় ‘মিট এ্যান্ড গ্রিট’ অনুষ্ঠানে এ অভিমত পোষণ করেন মধ্যবর্তী নির্বাচনে কানেকটিকাট থেকে ডেমোক্র্যাট স্টেট সিনেটর হিসেবে বিজয়ী বাংলাদেশি আমেরিকান মো. মাসুদুর রহমান।
নবনির্বাচিত এই সিনেটরের সম্মানে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাবের সভাপতি মোর্শেদ আলম।
অনুষ্ঠানে সিনেটর মাসুদ বলেন, ‘আমার এ বিজয়, ব্যক্তি মাসুদুরের নয়, এ বিজয় যুক্তরাষ্ট্রে সকল প্রবাসী বাংলাদেশির বিজয়। এবং আমার এ বিজয় নিয়ে থেমে থাকলে চলবে না। আরো অনেক শেখ রহমান, আবুল খান, নাবিলাহ ইসলাম, শাহানা হানিফ সৃষ্টি করতে হবে। সকলকে সবকিছুর উর্ধ্বে উঠে মার্কিন রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রচনা করতে হবে।’

আসছে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে মেয়াদ শুরু হবে সিনেটর মো. মাসুদুর রহমানের। সে আলোকে তিনি বলেন, আমার মা দুটি বিষয় আমাকে শিখিয়েছেন। প্রথমটি হচ্ছে, কঠোর পরিশ্রম করবে বড়কিছু হবার জন্যে। এবং দ্বিতীয়ত: কখনোই নিজের ভূমিকা/প্রত্যাশার কথা ভুলবে না। যদি ভুলে যাও তাহলে কখনোই কামিয়াব হতে পারবে না। এ দুটি বিষয়কে আমি সবসময় হৃদয়ে ধারণ করে আসছি। এজন্যেই কানেকটিকাট স্টেট সিনেট নির্বাচনে আমি প্রথম বার দলীয় মনোনয়ন পেয়েও ৬১% ভোটে রিপাবলিকান প্রার্থীকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছি। এটি একটি রেকর্ড ডেমক্র্যাটিক পার্টির ইতিহাসে।
উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে মাসুদুর রহমান ছাড়াও জর্জিয়ায় স্টেট সিনেটর হিসেবে নাবিলাহ ইসলাম নামক আরেকজন বাংলাদেশি আমেরিকান জয়ী হয়েছেন। একই নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ী হয়েছেন সিনেটর শেখ রহমান (জর্জিয়া) এবং স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ আবুল খান (রিপাবলিকান)।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু বলেন, বাংলাদেশি আমেরিকান মাসুদুর রহমান কানেকটিকাট স্টেটে নির্বাচিত হওয়ায় আমি দারুণ আনন্দিত। আজ থেকে ২০ বছর আগে মোর্শেদ আলম যে পথের সূচনা করেছিলেন সেই পথে আমিও স্টেট সিনেটর নির্বাচিত হয়েছি। মাসুদুর রহমানও সেই পথের অনুসারী হিসেবে কানেকটিকাটের স্টেট সিনেটে নির্বাচিত হলেন।
নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার ডেভিড ওয়েপ্রিন কানেকটিকাট স্টেটে নব-নির্বাচিত স্টেট সিনেটর মাসুদুর রহমানকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশি আমেরিকানদের আরো অধিকহারে মূলধারার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার অনুরোধ জানান।
নিউইয়র্কের পার্শ্ববর্তী কানেকটিকাট স্টেট থেকে এই প্রথম নির্বাচিত হয়েছেন মাসুদুর রহমান। তাঁর এ বিজয়কে বরণকল্পে আয়োজিত এ সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটের লিরয় কমরি, প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান, পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মান, ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার মাজেদা এ. উদ্দিন ও মোজাফফর হোসেন, ডেমোক্রেটিক ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট শেখ আখতার-উল ইসলাম, শহীদ সন্তান ফাহিম রেজা নূর, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির সংগঠক সৈয়দ রাব্বি, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আল আমিন রাসেল, রূপসী চাঁদপুর ফাউন্ডেশনের সাবেক সভাপতি আমিন খান জাকির ও ফখরুল ইসলাম মাসুম, ডা. মাসুদুল হাসান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খান।

কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহনাফ আলমের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উইমেন্স ফোরামের নির্বাহী উপদেস্টা হুসনে আরা, সিটি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর শাহাদাত হোসেন, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার শাহরিয়ার রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহনাজ আলম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মজিবর রহমান, পেনসিলভিনিয়া থেকে আগত ডাক্তার কাঞ্চন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আমিন মেহেদি বাবু ও জামিলা উদ্দিন।