কমিউনিটির সেবা করে ব্রঙ্কসেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই

ঠিকানার মুখোমুখি আব্দুস শহীদ

নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: আব্দুস শাহিদ ব্রঙ্কসের বাংলাদেশী জনপ্রিয় মুখ। জড়িত বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি মূল ধারার রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। চেষ্টা করছেন মূলধারার সঙ্গে নিজেকে আরও সম্পৃক্ত করতে, সেই সঙ্গে আগামী প্রজন্মকে মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে। ১৯৭৬ সালে সুনামগঞ্জ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এরপর কেটে গেছে ৪৩ বছর। তিন যুগের বেশি সময় ধরে তিনি এই দেশে রয়েছে। প্রথমে তার দাদা আব্দুল তাহির ১৯২৩ সালে এই দেশে এসেছিলেন। এরপর তার বাবা, মামা এসেছেন। পরবর্তীতে তিনিও এসেছেন। এখানে আসার পর কয়েকবছর ম্যানহাটানে ছিলেন। এরপর আস্তানা গেড়েছিলেন জ্যামাইকায়। সেখান থেকে ১৯৮৫ সালে চলে যান বঙ্কেসে। এখনও পর্যন্ত সেখানেই আছেন। মৃত্যুর শেষ দিনটি পর্যন্ত সেখানেই থাকতে চান। এখানে আসার পর এই দেশে নাগরিকত্ব নিয়েছেন। কিন্তু ২০১৬ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন নতুন করে। এখন তিনি দুই দেশেরই নাগরিক। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নতুন করে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, আমার ও আমার এলাকাবাসীর ইচ্ছে আমি যাতে পৌরসভার নির্বাচন করি। পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২/৩ বছর পর। সেই হিসাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছি। তিনি কথায় কথায় বলেন, এই দেশে আসার পর চেষ্টা করেছি নিজের পেশার পাশাপাশি দেশের মানুষের ও কমিউনিটির মানুষের জন্য কিছু করার। কতখানি পেরেছি সেটা বিচার করবে মানুষ। তবে হাল ছাড়িনি এখনও করে যাচ্ছি আগামী দিনেও করে যাবো। পাশাপাশি এখন আমার ইচ্ছে নিজের এলাকার মানুষের জন্য আরও বড় পরিসরে কাজ করার। তাই একটি ফাউন্ডেশন গঠন করেছেন সেখান থেকে কাজ করছেন। বিনামূল্যে খাবার, চাল, টিউবওয়েল বিতরণ করা ছাড়াও দরিদ্র পরিবারের জন্য আমাদের এলাকায় একটি করে ঘর করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে ইচ্ছে আছে পারিবারিক কলহের ও পরিবারের মধ্যে ভায়োলেন্সের শিকার হয় এমন নির্যাতিতদের জন্য কাজ করার। এই কাজটি তিনি আমেরিকার নিউইয়র্কে ও বাংলাদেশের সুনামগঞ্জেও করতে চাইছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে আব্দুস শাহিদ এসেছিলেন ঠিকানার লং আইল্যান্ড সিটির অফিসে। সেখানে এক সাক্ষাৎকার দেন। বলেছেন অনেক কথা। তার সাফল্যের পেছনের কথা।

আব্দুস শাহিদ আমেরিকান বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ইন্ক এর সভাপতি, পার্কচেস্টার জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, এর আগে ট্রেজারার, ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এখন প্রেসিডেন্ট পদে আসীন, ব্রঙ্কসের বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি। ২০০৩-২০০৮ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন। বাংলাদেশ আমেরিকান ডেমক্রেটিক সোসাইটির ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট। ২০০৮-২০১৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। আমেরিকান বাংলাদেশী ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ইউএসএ ইন্ক এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। নিউইয়র্ক সিটি নেটবরো এডভাইজার বোর্ডের ডিস্ট্রিক্ট- ১০ এর ভাইস চেয়ারম্যান। ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে এখন অবধি আছেন। এর আগে সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ আমেরিকান লায়নস ক্লাবের পরিচালক পদে আসীন আছেন। কমিউিনিটি বোর্ড-৯ এর পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন ২০০৬ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত।

আব্দুস শাহিদ এই দেশে আসা প্রসঙ্গে বলেন, পরিবারের সুবাদেই এই দেশে এসেছিলাম তখন আমার বয়স ১৭ বছর। এখানে আসার পর প্রথমে স্কুলে ভর্তি হই। স্কুল পাস করার পর ১৯৭৬-১৯৭৮ এই দুই বছর হান্টার কলেজে পড়েছি। সেখান থেকেই কাজে যোগ দেই। ম্যানাটানে একটি হোটেলে কাজ করতাম। ১৯৭৬ থেকে ৮০ পর্যন্ত সেখানেই ছিলাম। ১৯৮০-৮৫ জ্যামাইকায় ছিলাম। পরে ১৯৮৫ সালে ব্রঙ্কসে চলে যাই। আমি বাসা বদল করলেও চাকরি বদল করিনি। যে হোটেলে প্রথম ঢুকেছিলাম সেখানে কাজ করেছি ২০ বছর। একটি দূর্ঘটনার পর আমি চাকুরি থেকে অবসর নেই। অবসরে যাওয়ার পর পরিবারের জন্য আর কমিউনিটির জন্য কাজ করছি। কমিউনিটির মানুষের সেবা করে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই ব্রঙ্কসেই।
তিনি বলেন, আমরা যখন ব্রঙ্কসে গেলাম সেখানে একটি মসজিদ ছিল ডাউন টাউনে। আমি ’৮৬ সালে এক বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেতে গেলাম। নাম আব্দুল মজিদ খান। সেখানে মসজিদ না থাকায় তারাবীহ নামাজ পড়তে পারলাম না। তাই আমরা আলোচনা করলাম একটি মসজিদ কীভাবে করা যায়। বন্ধুরা মিলে তিনদিন তিনটি বৈঠক করলাম। এরপর একটি কমিটি করা হলো। সেই হিসাবে আমরা ১৯৮৭ সালে পার্কচেস্টার জামে মসজিদ প্রথম শুরু করি। এটা আমরা করেছিলাম বেসমেন্টে। এরপর ১৯৮৯ সালের দিকে আমরা পুরাপুরি কাজ শুরু করি। পরে আমাদের মসজিদের কাজ আমরা বড় পরিসরে নিজস্ব জায়গায় শুরু করতে সক্ষম হই। প্রথমে আমি মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলাম। এরপর ২০০২ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট হই। পরে ২০০৩ সালে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এখনও পর্যন্ত একই পদে দায়িত্বে আছি।

আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এখানে যাতে আমাদের দেশের এবং এদেশের মুসলমানরাও নামাজ আদায় করতে পারে। তিনি বলেন, এই দেশটি হচ্ছে একটি লিবারেল দেশ। এখানে যে যে যার যার ধর্ম পালন করবে, সেখানে কারো কোন কিছু বলার নেই। ধর্মীয় বিভেদও নেই। তাই বলবো বাংলাদেশের চেয়েও এখানে ধর্মীয় বিভেদ ও গ্রুপিং কম। এটা এখানকার ইতিবাচক একটি দিক।
ছোটবেলায় এই দেশে আসার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭৬ সালে যখন আসি তখন এত বাংলাদেশী ছিল না। হাতে গণা কিছু। দেশে ফোন করা সহজ ছিল না। একটি চিঠি পাঠালে এর উত্তর পেতে পেতে ২৫/২৬ দিন লাগতো। সময় আর শেষ হতো না। অনেক কষ্ট হতো দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। এইভাবে আস্তে আস্তে সময় পাড় হতে থাকে। দিন যেতে যেতে বাংলাদেশীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাদের সঙ্গে সঙ্গে দোকানপাট, মার্কেট, গ্রোসারী, ফার্মেসীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে। এখন এমন অবস্থা হয়েছে মনেই হয় না নিজের দেশে নেই। কারণ এখন যখন তখন মন চাইলে বাংলাদেশে যোগাযোগ করা যায়। ভিডিও কলে কথা বলা যায়। দেশের খাবার দাবারও সব কিছুই পাওয়া যায়। এখন বলা চলে বাংলাদেশের মতোই জীবন। এখন বাংলাদেশও অনেক উন্নত হয়েছে। সেখানেও এখানকার মতো অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কিছু কিছু বিষয়ে সমস্যা আছে। সেগুলো যদি বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠতে পারে ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব উন্নয়ন হচ্ছে সে সব উন্নয়ন ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে আস্তে আস্তে বাংলাদেশও আগামী কয়েকবছরের মধ্যে সিঙ্গাপুরের মতো হয়ে যাবে। সেই দিন বেশি দূরে না। আসলে বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে খুব ভাল লাগছে। এই কিছুদিন আগে আমি দেশে গিয়ে আসলাম। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। সেখানে যাওয়ার পর খুব ভাল লেগেছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ভীষনভাবে চোখে পড়ার মতো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা ভাবতেই ভীষন ভাল লাগে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কেও বাংলাদেশীদের উন্নয়ন ও অগ্রগতি হচ্ছে। আমাদের কমিউনিটি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাড়ছে। আর এই সব অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মানুষেরা যোগ দিচ্ছে। আমাদের এত বড় কমিউনিটি এই দেশের রাজনৈতিক নেতাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। ফলে তারাও আমাদের গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। এখন যে কোন নির্বাচন হলে বাংলাদেশী কমিউনিটিকে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়া হয়। মনে করা হয় আমাদের ভোট তাদের বিজয়ের জন্য একটি ফ্যাক্টর। এই কারণে তারা কমিউনিটির মানুষের কাছে আসেন , কথা বলেন ও তারা আমাদের ভোট চান। আমরাও তাদেরকে যতখানি সম্ভব সহযোগিতা করছি। এই সহযোগিতা দ্বিপাক্ষিক। তারা আমাদের জন্যও করছেন। বাংলাদেশীরা এই দেশের বিভিন্ন ধরণের সেবা নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী আস্তে আস্তে আমাদের বাংলাদেশীরা এই দেশে মূল ধারার সাথে সম্পৃক্ত হবে ও ইলেকট্রোরাল অফিসিয়াল নিযুক্ত হবে। সেটা হতে পারলে আমাদের আরও গুরুত্ব পাবে। আমরা এখানকার ইলেকটোরাল অফিসিয়ালদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে যাচ্ছি। ব্রঙ্কসে আমাকে ও এম এন মজমুদারকেও তারা যথেষ্ট সম্মান করেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান।
তিনি বলেন, আমি কাজ করতে করতে এক সময় মনে করলাম মূলধারার সঙ্গে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হলে নিজের কিছু করতে হবে। এরপর আমরা গঠন করলাম ‘বাংলাদেশ আমেরিকান ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক সোসাইটি’ । এটা করার পর অনেকটা আলোড়ন তৈরি হয়। মজুমদার ভাই করেছেন ‘কমিউনিটি কাউন্সিল’। আমাদের কমিউনিটি একটিভ আছে।
আমেরিকান বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা করি ২০১৬ সালে। এই সংগঠন থেকে ১৫০০ কম্বল, ৫০০ ব্যাগ চাল প্রতিটি ২০ পাউন্ড করে, ১২টি পানির পাম্প, ঘর করে দেওয়া হয়েছে ২টা। ঘর করা হয়েছে জন্নাথপুরে পারার গাঁও। নবিগঞ্জে আরও একটি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই সংগঠনে ৪০০-৫০০ সদস্য রয়েছে। এরমধ্যে নয়জন কমিটির সদস্য। আমরাই ফাইন্যান্স করছি।
২৩ জানুয়ারি বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান করি। ৬’শ মানুষকে চাল দিয়েছি। ২০ পাউন্ড চাল ছিল এক একটি প্যাকেটে। যাদেরকে দেওয়া হয়েছে তাদেরকে নির্বাচিত করার বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন, আমাদের উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে স্থানীয় প্রতিনিধি ও লোকাল লোকজনের কাছ থেকে তালিকা নেই। ২০১৬,২০১৭,২০১৮ ও ২০১৯ এই কয় বছর ধরে আমরা ধারাবাহিকভাবে দিয়ে আসছি। আগামীতেও এটা অব্যাহত রাখবো। সেই সঙ্গে এগুলো আরও বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, ব্রঙ্কসে পরিকল্পনা আছে আমাদের এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে একটি ভাষা শিক্ষা স্কুল করার। বাংলাদেশ থেকে অনেক বয়স্ক ব্যক্তিরা আসেন। তারা এখানে আসার পর ইংরেজীতে কথা বলতে পারেন না। দেশেও তেমন লেখাপড়া ছিল না। ফলে তাদেরকে বেগ পেতে হয়। এই কারণে আমরা চাই তারা এখানে আসার পর আমাদের ইংরেজী শেখার স্কুলে ইংরেজী শিখবে। ফাউন্ডেশনের বয়স এখনও পাঁচ বছর হয়নি। পাঁচ বছর হলে এই ব্যাপারে সিটির কাছ থেকে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাবে। এখন সংগঠনের বয়স তিন বছর হয়েছে। মহিলারা যারা এখানে আছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার। তাদের জন্য সিটি থেকে ফান্ড নেওয়ার চেষ্টা করবো। যাতে করে তাদেরকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। আমরা আগামী বছর থেকে প্রস্তুতি নিবো। যাদের প্রয়োজন আছে এই ধরণের সহায়তার, তাদেরকে চিহ্নিত করবো। আগেভাগে বাজেট দিতে হবে। আর ওই বাজেটের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।


এখানে ডমেস্টিক ভায়োলন্সের চিত্রটা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিত্রটা এখনও হতাশাজনক নয়। তবে বাংলাদেশীদের সংখ্যা এখানে যত বাড়ছে বিভিন্ন ধরণের ঘটনা ততো বাড়ছে। এই কারণে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ডমেস্টিক ভায়োলেন্স কিছু কিছু ঘটছে। তাদের পাশে কমিউনিটির নেতৃবৃন্দকে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, এখানে যারা আসছেন তাদেরকে বলবো আপনারা যত যা কিছুই করেন না। পরিবারের বন্ধন অটুট রাখার চেষ্টা করুন। পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন করবেন না। স্ত্রীকে নির্যাতন করবেন না কিংবা পরিবারের অন্য কোন সদস্যকেও নয়। এই দেশে পরিবারের প্রতি অবহেলা ও কাউকে নির্যাতন করা বড় ধরণের অপরাধ। তাই সবাইকে অনুরোধ করবো পরিবারের শান্তি বজায় রাখুন।
তিনি বলেন, সবার যেমন সতর্ক হওয়া প্রয়োজন আছে সেই সঙ্গে এটাও আছে তা হলো কোন ধরণের ঘটনা ঘটলে সতর্ক হওয়া। কারণ কমিউনিটি বাড়ছে। কেওয়াসও বাড়বে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি ভাঙ্গন ও বিভক্তি সম্পর্কে বলেন, আসলে এটা বড় জরুরি। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটা নেই। এই কারণে দেখা যায় যে সবাই নেতা হতে চায়। সবাইতো নেতা হতে চায়। সবাই নেতা হতে চাইলে হবে না। কাউকে না কাউকে সদস্য থাকতে হবে। যারা যোগ্য তাদেরকে আগে নেতা হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। আসলে এখানে দেখবেন বিভিন্ন সংগঠন ভেঙ্গে ভেঙ্গে একাধিক সংগঠন হয়েছে। আবার অনেক সময় একই জেলা ,উপজেলা ও থানার একাধিক সংগঠন হয়েছে। এটা খুব খারাপ। এতে বিভেদ তৈরি হয়। ঐক্য নষ্ট হয়। এটা যারা করেন তাদের বলবো এই কাজটি থেকে বিরত থেকে সংগঠন করার জন্য। এক নামে একটি সংগঠন থাকাই ভাল। সেটা থাকলে ঐক্যও ভাল থাকে। ঐক্য থাকলে বাংলাদেশী কমিউনিটির লোকজন আরও এগিয়ে যেতে পারতেন। এতদিনে মূলধারায় পৌঁছাতে পারতো বাংলাদেশীরা। এখন যা আছেন আগামীতে লোকজন বাড়বে এতে হয়তো ধাক্কাধাক্কি ও অনৈক্য আরও বাড়বে। কিন্তু সেটা হওয়া ঠিক হবে না। আমি যে কয়টি সংগঠন করেছি এর কোনটাতে ভাঙ্গন ধরেনি।

আমি যখন ব্রঙ্কসে বাংলাদেশ সোসাইটি করি তখন অনেক প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে। আমার সমালোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এতে আমার লোকসান হয়নি। সাময়িকভাবে তারা সমস্যা তৈরি করতে পারলেও তাদের সমালোচনার কারণে আমার পরিচিতি বেড়েছে। আমি চেষ্টা করেছি আরও বেশি করে কাজ করার। আর এই কাজ করতে করতে আজকে যে পরিচিতি পেয়েছি ও সম্মান পাচ্ছি তা কাজের মূল্যায়ণ করেই মানুষ করছে। তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা যদি একে অপরের পেছনে না লেগে বরং সামনের দিকে তাকাই ও যে সামনে যাওয়ার যোগ্য তাকে আরও সামনের দিকে নিয়ে যাই তাহলে ওয়াশিংটনে কংগ্রেসে ও সিনেটে বাংলাদেশী মুখ দেখা যাবে। আমাদের নিজেদেরকে নিজেদের সম্মান ধরে রাখতে হবে।
বাংলাদেশ সোসাইটি সম্পর্কে বলেন, এটা আমাদের আমব্রেলা সংগঠন। এই সংগঠনের বর্তমান অবস্থা যা চলছে তা মোটেই ভাল না। সেখানেও অনৈক্য দেখা দিয়েছে। বিরোধ এতটাই যে সেখানে এখন বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। আদালত সিদ্ধান্ত দিবে এরপর পরবর্তী কার্যক্রম চলবে। আসলে যারা এই বিভেদ তৈরির জন্য দায়ী তারা কিন্তু কাজটা ঠিক করলেন না, এমন একটি সংগঠনের কর্মকান্ডের বিষয়টি আদালতে উঠায় এতে কমিউনিটির বদনাম হলো। সরকারিভাবেও নথিপত্রে এই সংগঠনের দ্বন্দ্ব ও কোন্দলের কথা লেখা হয়ে থাকলো। এগেুলো নজির হিসাবে খারাপ। তবে সমঝোতায় পৌঁছে যাতে এই সংগঠনটি অখন্ডতা অটুট রেখে কাজ করে যেতে পারে সেটাই চাইবো।
মূল ধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার কথা বলছেন তার জন্যতো শিক্ষা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের নতুন প্রজন্মের তরুণ তরুণীরা শিক্ষিত হলেও তারা এই ধরণের কাজে খুব একটা যেতে চাইছে না। এই ব্যাপারে তিনি বলেন, রবিন দিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন নেই। তিনি একটি গীর্জার প্রিস্ট ছিলেন। তার যে ব্যাকগ্রাউন্ড তা দিয়ে আজকে তিনি কোন পর্যায়ে চলে গেছেন। তিনি চাইলে যে কাউকে সহযোগিতা করলে তিনি অনেককেই এগিয়ে নিতে পারেন।
তিনি তার পরিবারের সদস্যদের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমার চার সন্তান। দুইজন ছেলে ও দুইজন মেয়ে। বড় মেয়ে শাহিবা আক্তার শাহিদ রুবেনা কম্পিউটার সিকিউরিটি স্টিটেম ডাইরেক্টর হিসাবে কর্মরত। জামাতা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। বড় ছেলে সুফিয়ান আক্তার শাহিদ রোকন। কলাম্বিয়া ইউনিভারসিটির ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টে কর্মরত। পুত্রবধু ইএল হাসাপালের ডাক্তার। ছোট মেয়ে সাবিহা আক্তার শাহিদ রোহেনা। তিনি টিডি ব্যাংকে কর্মরত। আর ছোট ছেলে সাফওয়ান আক্তার শাহিদ রুপন। সে সিটি কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছে। ছেলে মেয়েরা সবাই যার যার মতো এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের কেউ রাজনীতির সঙ্গে এখনও সম্পৃক্ত নয়। তবে আমি চাই আমার ছোট ছেলেটাকে মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে। তার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। তবে আগ্রহ কম। কিন্তু আশা করি তাকে আগ্রহী করে তুলতে পারবো।
তিনি বলেন, ছেলে মেয়েদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমি বিশেষ কোন সময় দিতে পারিনি। আমি ব্যস্ত থাকতাম আর কাজ আর কমিউটিনির সেবা নিয়ে। আমার স্ত্রী আম্বিয়া আক্তার শাহিদ ব্যস্ত থাকতেন তাদেরকে সুযোগ্য নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য। ছেলে মেয়েদের জন্য তাকে কখনো কাজ করতে দেইনি। তিনি করতে চেয়েছিলেন। আমি বলেছি তুমি ওদেরকে মানুষ কর এটাই হবে বড় কাজ। কারণ তুমি কাজ করলে যে অর্থ আয় করবে তা আবার ব্যয় হয়ে যাবে বেবী সিটারকে দিতে। এখানকার ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এমন একটা সময় ছিল এখানে বাংলাদেশীদের মালিকানাধীন দোকানপাঠ ব্যবসা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বেশি ছিল না। আস্তে আস্তে সময় যাচ্ছে। চাহিদা বাড়ছে আর চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আমাদের ওখানে শুরুর দিকে তেমন বাংলাদেশীদের দোকান ছিল না। স্টারলিংয়ে আস্তে আস্তে গড়ে উঠলো দোকানপাঠ। এখন অনেক বেড়েছে। দিন যত যাবে তা বাড়বে। এখন বাংলাদেশীদের দোকনগুলোতে অন্যান্য দেশের মানুষেরাও পণ্য কেনার জন্য ও আসছে। এটা ভাল দিক।
তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশীরা এগিয়ে যাচ্ছে এটা কারো কারো কাছে জেলাসীর কারন। এই কারণে দেখা যায় মাঝে মাঝে হেইট ক্রাইমের মতো ঘটনা ঘটছে। হেইট ক্রাইম বন্ধ করার জন্য সিটির ও পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাও পুরো দমে বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমি মনে করি ছোটখাটো সমস্যা ছাড়া ওভারঅল বাংলাদেশীরা এখানে ভাল আছেন। তবে কোন কোন বাংলাদেশী আছেন যাদের সরকারি সুযোগ সুবিধা হয়তো একটু কষ্ট করে ম্যানেজ করে চললে, না নিলেও চলে । কিন্তু তারা সেটা না করে সরকারি সুবিধা নেন। এরমধ্যে রয়েছে অ্যাফোরডাবেল হাউজিং, মেডিকেয়ার , মেডিকেড, ফুডস্ট্যাম্পসহ বিভিন্ন ধরণের সুবিধা। যারা এই সুবিধাগুলো নেন তারা আসলে যখন নেন তখন বুঝতে পারেন না নিজেরাই নিজেদের কত ক্ষতি করছেন। আগামী দিনে তাদের জন্য কত সুযোগ বন্ধ করে দিচ্ছেন। অথচ তিনি যদি সামান্য কষ্ট বেশি করে তার সমস্যা মেটাতে পারতেন। তিনি যখন তার জন্য ও পরিবারের সদস্যদের জন্য ওই সব সুবিধা নেন তখন তিনি একজন দরিদ্র মানুষ হিসাবে চিহ্নিত হন। তার নামও সেই তালিকায় লেখা হয়। এর ফলে তিনি চাইলেও অনেক কিছু করতে পারেন না। বাড়ি কিনতে পারেন না। কারণ তিনি ট্যাক্সের ফাইল এতো কম আয় দেখিয়েছেন যা দিয়ে তার পক্ষে বাড়ি কেনা সম্ভব নয়। ব্যাংক লোন দিবে না। এই কারণে দেখা যায় কেউ কেউ বেশি টাকা আয় করার পরও কিছু সুবিধার আশায় কম আয় দেখান ও সুবিধা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তী সময়ে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের বাংলাদেশ থেকে আনতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। স্পন্সর দিতে পারেন না। সরকারের খাতায় যে নিজেই চলতে পারেন না, পরিবার চালাতে পারেন না বলে সরকারের সাহায্য নেন। তখন তিনি কিভাবে তার দেশে থাকা পরিবারকে এই দেশে আনবেন ও তাদের খরচ বহন করবেন। এই কারণে অনেকেই বছরের পর বছর গেলেও বাবা, মা, ভাই, বোনদের আনতে পারেন না। সরকারি সুবিধা কখনোই নেইনি বলে পরিবারের সবাইকে এই দেশে আনতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশীরা যেহেতু পরিশ্রমী, এই ক্ষেত্রে তাদের সুনাম আছে,তাই পরিশ্রম করে তারা সংসার পরিচালনা করবেন ও পরিবারের সদস্যদের ভরণ পোষণ ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করবেন। প্রয়োজন না থাকলে সরকারি দরিদ্র শ্রেণীর জন্য নির্ধারিত ও বরাদ্দকৃত বেনিফিট এবং সুবিধাগুলো নিবেন না। ওই সব সুবিধা সরকার করেছে দরিদ্র মানুষের জন্য। বাংলাদেশীরা আমেরিকায় এসে গরীব থাকবেন কেন? আর সেই সব সেবাগুলো রয়েছে থাক। তারা নিবেন কেন? আমি তাই অনুরোধ করবো যাদের না নিলেই চলবে না তাদের ছাড়া কেউ সরকারের ওই সব সুবিধাগুলো নিবেন না। স্বেচ্ছায় যেন কেউ কাজটি না করেন। যারা সাহায্য নিয়ে চলেন তাদের নামের মধ্যে একটা কলঙ্ক লেগে গেল। গরীব বলে তালিকাভুক্ত হলো। এটা আমাদের কমিউনিটির ও দেশের ইমেজের জন্য খারাপ। আর এই সব সুবিধা যদি আমরা না নেই। নিজেরা আতœনির্ভরশীল হই তাহলে কমিউিনিটিতে আমাদের সম্মান আরও বাড়বে। সরকারের কাছেও বাড়বে। সেই সঙ্গে গুরুত্বও বাড়বে।
বাংলাদেশ থেকে অনেকেই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে এই দেশে আসছে, কেউ কেউ অবৈধভাবে আসছে তাদের বিষয়ে বলবো যারা এই দেশে অবৈধ ভাবে আসছেন তারা যাতে আর কাউকে এখানে আসার জন্য উৎসাহিত না করেন। যারা এখানে আসার পর কোন গতি করতে পারছেন না তারা না থাকেন। অনেকেই এখানে আসার পর কোন কিছু করতে না পেরে দেশে ফেরত যাচ্ছেন, এই রকম ঘটনাও আছে। সেই সব ঘটনা সব সময় প্রকাশ পায় না। তাই বলবো বাংলাদেশীদের কেউ যাতে এই দেশে অবৈধভাবে না আসেন। যাদের বাংলাদেশে ভাল ইনকাম আছে, তারা দেশে চেষ্টা করলেই অনেক ভাল কিছু করতো পারবেন। এখানে না এসে দেশে থাকলেই ভাল। অবৈধভাবে যারা আসছেন কিংবা আসতে পরিকল্পনা করছেন, তাদেরকে অনুরোধ করবো না আসতে। আমি উৎসাহিত করবো তরুণ তরুণীদের আসতে। স্টুডেন্টদের আসতে। তারা এখানে আসার পর শিক্ষা নিয়ে দেশে গিয়ে কাজে লাগাতে পারলে দেশের অনেক উন্নতি হবে। সরকারও এমন করতে পারে, দেশের মেধাবী কিছু সংখ্যক ছাত্র ছাত্রীকে এই দেশে স্কলারশিপ দিয়ে পাঠাবেন। যারা কিনা এদেশে এসে শিক্ষা শেষ করে দেশে গিয়ে কাজ করবেন। স্টুডেন্টদের কম সুদে সরকার চাইলে বিদেশে পড়ার জন্য লোনও দিতে পারে। যা তারা এখান থেকে লেখাপড়া শেষ করে যাওয়ার পর দেশে যখন চাকরি করবেন, তখন আস্তে আস্তে পরিশোধ করবেন। এই ভাবে কিছু বিশেষজ্ঞ তৈরি করা জরুরি। বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এরা বড় ভূমিকা রাখতে পারেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে। আমিও দিতে চাই। তাই চিন্তা করেছি এখন পৌরসভার মেয়র পদে যদি আওয়ামী লীগ আমাকে সমর্থন দেয় তাহলে নির্বাচন করবো। এলাকাবাসী অনেকেই চাইছে। আমি যদিও ছোটবেলা ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত হই। তবে সাংগঠনিকভাবে আমি পদ পদবীতে নাই। আগামী দিনে জড়িত হবো। এখানে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত হই না কারণ গ্রুপিং আছে। আমি নিজেকে কোন গ্রুপিংয়ে জড়াতে চাই না। সবার সাথে ভাল সম্পর্ক রাখতে চাই। ঐক্যতে বিশ্বাসী আমি।
এখানে একটি জেলার নামে ও থানার নামে তিনটি চারটি করে সংগঠন। এগুলো দেখতে বোঝা যায় অনৈক্য কত খানি। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। যারা করছেন তাদের প্রতি অনুরোধ করবো এগুলো আপনারা বন্ধ করুন। একতা ফিরিয়ে আনুন।
সংগঠনে যুক্ত হওয়ার সময়ে মনে রাখতে হবে যোগ্যতা থাকলে ও চেষ্টা থাকলে নেতা নেত্রী একদিন হবেন। অহেতুক কামড়াকামড়ি করে দ্বন্দ্ব বিবাদ করে কোন লাভ নেই। যার যোগ্যতা আছে তাকে এগুলো করতে হয় না। তাকে মানুষই নেতা বানিয়ে দেন। যাদের যোগ্যতা নেই তারা কামরাকামরি করেন। নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছু বোঝেন না। যে নেতা নিজের স্বার্থের জন্য একটি সংগঠন ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করেন সেই নেতার কাছ থেকে মানুষ কী পাবে! আর সেই নেতা অন্যের জন্য কী করবেন। যে সংগঠনে যে নেতাই সংগঠনকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করবেন তার নেতা হওয়ার দরকার নেই। প্রয়োজনে ওই নেতাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে কিন্তু সংগঠনের অটটু বন্ধন ও অখন্ডতা ধরে রাখতে হবে।
আপনি পেরৗসভার নির্বাচনে অংশ নিতে চান, কী এমন যোগ্যতা আছে যেই জন্য আপনাকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিবে- এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি এলাকার মানুষের সঙ্গে কাজ করছি। তাদের জন্য কাজ করছি। এই কাজ আরও বাড়াতে চাই। পরিকল্পনা মন্ত্রী আমাকে চিনেন জানেন। তিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবন্দও আমাকে চেনেন ও জানেন। তারা সহযোগিতা করবেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন মাঠ পর্যায় থেকে যাদের নাম আসবে তাদেরকে মূল্যায়ন করবেন। আমি বিদেশে থাকলেও আমার আশা মাঠ পর্যায় থেকে আমার নাম কেন্দ্রে পাঠানো হবে পৌরসভা নির্বাচনের জন্য। জগন্নাথপুর উপজেলা আমার এলাকা। সেখানের পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হতে চাই।
তাছাড়া আশার কথা হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এলাকার মন্ত্রী ও এমপিরা এইসব ক্ষেত্রে প্রভাব খাটাতে পারবেন না। এতে করে নতুনদের সুযোগ হবে বলে আমি মনে করি। কারণ তাদের ইনফ্লুয়েন্সের কারণে অনেক সময় যোগ্যরাও বাদ পড়ে যায় । আমি মনে করি আমার সব কিছু বিবেচনা করেই আগামী দিনে পৌরসভা মেয়র পদে নির্বাচন করতে পারবো।
আপনিতো দ্বৈত নাগরিক, সেই ক্ষেত্রে কী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এতে কোন সমস্যা নেই। এমপি ও মন্ত্রী এবং উপদেষ্টা হতে পারেন না দ্বৈত নাগরিকরা। তাদের পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিতে বাঁধা নেই। তাই আমার জন্যও সমস্যা হবে না।
দেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগ সম্পর্কে শহিদ বলেন, সরকারকে বলবো সুযোগ সুবিধা থাকলেও এগুলো নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এ বিষয়ে নিতে। যাতে করে প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ বান্ধব সহজ পথ পান। স্বস্তি নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারেন। কোন ঝামেলা ও বেগ পেতে হবে না।
আগামী প্রজন্মের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মের যারা এই দেশে লেখাপড়া করেছে এবং যারা করছে তাদের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। তারা চাইলে অনেক কিছু করতে পারবে। ওই সব সন্তানকে যদি লেখাপড়ার পাশাপাশি এই দেশের মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা যায়, তৈরি করা যায় তাহলে অনেক ভাল হবে। তাদেরও আগ্রহ থাকতে হবে। কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরও ভূমিকা রয়েছে তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে আসার। বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য সুযোগ দিতে হবে।