কলকাতায় বাংলাদেশি চলচ্চিত্র উৎসব

কলকাতায় শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চার দিনের এই উৎসব উদ্বোধন করেন নাট্যব্যক্তিত্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়সহ বিশিষ্টজনেরা।
উৎসব আয়োজন করা হয়েছে কলকাতার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নন্দন-২ এবং নন্দন-৩ প্রেক্ষাগৃহে। উৎসবের উদ্বোধনী ছবি ‘কালের পুতুল’ প্রদর্শিত হয় গতকাল বিকেলে। সন্ধ্যায় এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘এই চলচ্চিত্র উৎসব আমাদের দুই দেশকে আরও কাছাকাছি আনবে। সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মধ্য দিয়ে আমাদের দুই বাংলার চলচ্চিত্রশিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করবে। এখন বাংলাদেশেও বিশ্বমানের ছবি তৈরি হচ্ছে। একই ধরনের ছবি হচ্ছে কলকাতায়। তাই দুই বাংলার ছবি যদি একসঙ্গে তৈরি হতো, তবে বাংলা চলচ্চিত্র আজ বিশ্বের বুকে সম্মানের সঙ্গে আসন করে নিতে পারত। তবু আমাদের দুই বাংলার বাংলা চলচ্চিত্রশিল্প এগিয়ে চলেছে। পাল্লা দিচ্ছে বিশ্ব বাজারে।’
মাধবী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের এই উপমহাদেশের চলচ্চিত্রের স্রষ্টা ছিলেন হীরালাল সেন। তিনি ছিলেন ঢাকার মানুষ। তাঁর হাত ধরে আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গনে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা এখনো চলছে। আমাদের দুই বাংলার চলচ্চিত্রশিল্প উন্নত হয়েছে। দুই বাংলায় তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ছবি। বাংলাদেশেও এখন অভূতপূর্ব ছবি নির্মিত হচ্ছে। কলকাতার চলচ্চিত্রপ্রেমীরাও এখন বাংলা ছবির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। বাংলাদেশের ছবি ধীরে ধীরে বাজার করে নিয়েছে কলকাতায়।’
ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, ‘চলচ্চিত্র উৎসব আমাদের সংস্কৃতিকে দৃঢ় করার অন্যতম বাহন। বাংলাদেশের এই চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্য দিয়ে আমাদের দুই দেশের সংস্কৃতির নৈকট্য আরও বাড়বে। আমরা এক দেশ আরেক দেশকে আরও বেশি করে জানতে পারব। চলচ্চিত্রের এই লেনদেনের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হবে। উন্নত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন বিশ্বমানের উন্নত ছবি তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের ছবি আজ অস্কারে মনোনয়ন পাচ্ছে। এবার আমরা যে আটটি ছবি দিয়ে এই উৎসব আয়োজন করেছি, এখানে প্রতিটি ছবির গল্প আলাদা। আশা করি, ছবিগুলো চলচ্চিত্রপ্রেমীদের ভালো লাগবে।’
উৎসব আয়োজন করেছে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চল শাখা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন সংগঠনটির কর্মকর্তা প্রেমেন্দ্র মজুমদার।
চার দিনের এই উৎসবে দেখানো হবে আটটি ছবি। ছবিগুলো হলো ‘কালের পুতুল’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘খাঁচা’, ‘কৃষ্ণপক্ষ’, ‘ড্রেসিং টেবিল’, ‘টু বি কন্টিনিউড’, ‘আলতা বানু’ ও ‘ভয়ংকর সুন্দর’। উৎসবের শেষ দিন দেখানো হবে অরুণ চৌধুরীর ‘আলতা বানু’ এবং অনিমেষ আইচের ‘ভয়ংকর সুন্দর’ ছবি।
কলকাতার পর ভারতের আরও ২০টি শহরে বাংলাদেশের এই চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করা হবে। আয়োজক সংগঠনটির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, ঝাড়খন্ডের জামশেদপুর ও রাঁচি; ওডিশার ভুবনেশ্বর, আসামের গুয়াহাটি ও জোড়হাট, মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, নাগপুর ও পুনে, রাজধানী নতুন দিল্লি, তামিলনাড়ুর চেন্নাই, অন্ধ্র প্রদেশের হায়দরাবাদ এবং বিশাখাপট্টনম, কেরালার তিরুবনন্তপুরম এবং কোচিসহ পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর, শিলিগুড়ি, বর্ধমান ও মেদিনীপুর শহরে এই উৎসব হবে।