কিশোরগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ-আ.লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে দফায় দফায় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে। এ সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পৌর সদরের সৈয়দগাঁও এবং পৌর বাজারের টিএনটি সড়ক ও মলংশাহ মাজার এলাকা।

সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বিএনপির বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, জ্বালানি তেল, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং ভোলায় পুলিশের গুলিতে দুই কর্মী নিহতের প্রতিবাদে শনিবার সকালে পৌর সদর বাজারের পাটমহালে বিক্ষোভ-সমাবেশ করার কথা ছিল স্থানীয় বিএনপির।

কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী পৌর সদর বাজারে আসতে চাইলে সৈয়দগাঁও চৌরাস্তা এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কামাল উদ্দিন ও আতিকুর রহমান মাসুদের নেতৃত্বে বিএনপির কর্মীরা পৌর সদর বাজারে একই কর্মসূচিতে আসার পথে পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে এ সংঘর্ষ। এ সময় কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেটে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’

পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, ‘সমাবেশের নামে বিএনপির নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পৌর সদর বাজারে নাশকতা করার চেষ্টা করে। এ সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে তাদের প্রতিহত করা হয়।’

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আল আমিন হোসাইন সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির বিক্ষোভ-সমাবেশের কোনো অনুমতি ছিল না। মিছিল নিয়ে আসার পথে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ঠিকানা/এনআই