কী হচ্ছে ৩ নভেম্বর রাতে?

নাসরীন আহমেদ : মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচনে এবার লড়াই হাড্ডাহাড্ডিই হচ্ছে – এমন ধারণাই এখন বেশির ভাগ মানুষের। এ ধারণা থেকেই ৩ নভেম্বরের নির্বাচনী রাত উত্তেজনায় পরিপূর্ণ থাকবে বলে মনে করছি।

আগের বছরগুলোর মতো এবার ওই রাতেই জানা যাবে না কে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। তবে নির্বাচনী ফলাফলের কয়েকটি বিষয়ে তীক্ষ্ন নজর রাখলেই বোঝা যাবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী কর্ণধার কে হচ্ছেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফ্লোরিডার ফলাফল। বড় রকমের অস্বাভাবিকতা না ঘটলে ভোটের রাতেই ১৬টি রাজ্যের ভোটের মোটামুটি ফলাফল আমরা জানতে পারব।

যুক্তরাষ্ট্রে মোট ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ১১৯। এর মধ্যে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন পাবেন ৫৯টি ইলেকটোরাল ভোট এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাবেন ৬০টি ভোট।

ফলাফলের ধারণামতে, রিপাবলিকান পার্টি জয়ী হবে আইডাহো (৪), মোন্তানা (৩), ইয়োমিং (৩), নেব্রাস্কা (৫), মিজৌরি (১০), আর্কানসাস (৬), সাউথ ক্যারোলিনা (৯), টেনেসি (১১) এবং আলাবামা (৯) রাজ্যে। যার মোট ইলেকটোরাল কলেজ ভোটসংখ্যা ৬০।

অপরদিকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি বিজয়ী হবে হাওয়াই (৪), কলোরাডো (৯), ভারমন্ট (৩), নর্থ হ্যাম্পশায়ার (৪), ডেলওয়ার (৩), ওরিগন (৭) এবং ফ্লোরিডা (২৯) রাজ্যে ।

একমাত্র ফ্লোরিডা ছাড়া উল্লিখিত রাজ্যগুলো ঐতিহ্যগতভাবে ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পর্টির নিজ নিজ দলের ঘাঁটি বলে পরিচিত। ফ্লোরিডা মাঝে মাঝে উলটপালট হয়। কিন্তু এ বছর ডেমোক্র্যাট দলের জন্য নিরাপদই এ রাজ্য। ফ্লোরিডার কিউবিয়ানরা ট্রাম্পের অন্ধভক্ত। তাদের ভোটেই গতবার জিতেছিলেন ট্রাম্প। এবার জিতলেও গুরুত্ব পাবে সেই ভোট। যদি ফ্লোরিডায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জিতে যান, তাহলে বাইডেন শিবিরকে দুশ্চিন্তায় পড়তে হবে ভোটের রাতে। যদিও হোয়াইট হাউস জেতার আরও সুযোগ থাকবে বাইডেনের হাতে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সাথে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভোট হচ্ছে। সিনেট (কাস টু) এবং হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের এই নির্বাচন নিয়ে অবশ্য তেমন মাতামাতি নেই।
হাউসে এরই মধ্যে ডেমোক্রেটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং ৯৯ ভাগ নিশ্চিত যে তারা সেটা ধরে রাখতে পারবে। এই ধারণা থেকেই মার্কিনিরা মনে করছেন, ডেমোক্র্যাটরা এবার তাদের নেতৃত্ব আগের চেয়ে শক্তিশালীভাবে ধরে রাখতে পারবে।

সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা। সেই অবস্থান তারা ধরে রাখতে পারবে কি না সেটাই বড় প্রশ্ন। কারণ এবার সিনেটে অন্তত ৬-৭ টি আসন উলটপালট হতে পারে। আর সিনেট দখলে নিতে ডেমোক্র্যাটদের লাগে মাত্র ৪টি আসন। যদি ডেমোক্র্যাটরা হাউসের মতো সিনেটও দখল নিতে পারে, তাহলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হয়েও খুব বেশি সুবিধা করতে পারবেন না। শুধু প্রেসিডেন্সি জিতলেই হবে না। ড্রাইভিং সিটে থাকতে হলে হাউস এবং সিনেটেও জিততে হবে তার দলকে। হাউস বা সিনেটের যেকোনো একটিতে বিজয়ী হওয়া তো বাধ্যতামূলক।

এবার নির্বাচনকে মার্কিনিরা খুব সিরিয়াসলি নিয়েছে। এর আগের নির্বাচনগুলোতে কালো ও হিস্পানিকদের খুব কমই ভোট দিতে দেখা গেছে। কিন্তু এবার প্রচারণার সময় থেকেই ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে তারা। অর্থাৎ তাদের ভোট বেশি পড়বে।

বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, তাদের ভোটেই হয়তো নির্ধারিত হবে এবার যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। তবে এবারের ভোটের রাতে টানটান উত্তেজনা থাকছে না। কারণ, ফলাফল জানতে কমপক্ষে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতে পারে।

ঠিকানা/এনআই