কুমিল্লায় বিএনপির গাড়িবহরে আ.লীগের হামলা, আহত ৫৪

গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় আহত বিএনপির নেতাকর্মী। ছবি : সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : নোয়াখালীতে বিএনপির পূর্বঘোষিত পদযাত্রায় অংশ নিতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা থেকে যাচ্ছিলেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী। পথিমধ্যে কুমিল্লার লাকসামে জনসন বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

১৪ জুলাই শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের কয়েক মিনিট আগে এ ঘটনা ঘটে। জাতীয়তাবাদী কৃষক দল, শ্রমিক দল, তাঁতীদল, মৎস্যজীবী দল ও জাসাসের উদ্যোগে নোয়াখালীতে পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মহিউদ্দিন বলেন, তারা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের নির্দেশে প্রায় ৬৫টি গাড়ি নিয়ে নোয়াখালীতে বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কুমিল্লার লাকসামে জনসন বাজার এলাকায় লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউনুস ভূঁইয়ার নেতৃত্বে গাড়িবহরে ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদেরকে লাঠিসোঁটা এবং দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়। এতে ৫৪ নেতাকর্মী আহত এবং ৩০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

তিনি বলেন, মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের গুরুতর আহত নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন মোল্লা মজিবুল হক, মো. নায়েব আলী, অ্যাডভোকেট নাছির আহমেদ, মো. ফারুক আহমেদ বাদশা, বশিরুল ইসলাম মোল্লা, নাছির উদ্দিন, হেদায়েত হোসেন, কবির হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, সালাউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। তারা সবাই মুমূর্ষু অবস্থায় কুমিল্লা আকন্দ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ছাড়া আরও প্রায় ৪৪ জনের বেশি বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

অন্য আহত নেতাকর্মীরা হলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম মাসুম, মাসুদ, আল আমিন, বিএনপির মকবুল হোসেন, আরিফুল ইসলাম, শ্রমিক দলের জাকারিয়া কামাল, মোস্তফা, যুবদলের জাকির, আলামিন, মনির হোসেন, আমিন মিয়া, দেলোয়ার, বাদশা, হুমায়ুন কবির, সবুর খান, সোহাগ, ডা. আলী, মেহেদী হাসান, জহিরুল ইসলাম, আব্দুল করিম, মোতালেব, আক্তারুজ্জামান, ইকবাল হোসেন, রেহান উদ্দিন, আবুল হাশেম, তরিকুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, মানিক মিয়া, আব্দুস ছাত্তার বাবু, দুলাল মিয়া, জাকির হোসেন, শাহ পরান, মো. ইসমাইল, জাহাঙ্গীর, মোস্তফা, মাহাবুব, উজ্জ্বল, সোবহান, শরিফুল ইসলাম, ইব্রাহিম, বাহাদুর, এনামুল, জালাল ও আবু বক্কর।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আহত মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মজিবুল হক বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা ব্যাহত করতে এ হামলা চালানো হয়েছে। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নজির আহম্মেদ ভূঁইয়া বলেন, পদযাত্রায় অংশ নিতে গিয়ে লাকসামে আমার গাড়িসহ ৩০-৩৫টি গাড়ি ভাঙচুর করে শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করেছে আ.লীগের নেতাকর্মীরা, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনিও এ সরকারের পদত্যাগের দাবি জানান।

তবে হামলার ঘটনা অস্বীকার করে লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউনুস ভুঁইয়া বলেন, বিএনপির পদযাত্রা এবং তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

এ বিষয়ে লাকসাম থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাটি শুনেছি। এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠিকানা/এনআই