কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাকে ঘাড়ধাক্কা, কাঠগড়ায় বিমান সংস্থা

ঠিকানা ডেস্ক : তাঁর গায়ে না কি ঝাঁঝালো গন্ধ! সহযাত্রীর এই অভিযোগে বিমানের বিজনেস ক্লাস থেকে এক রকম জোর করেই নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল কুইন ওবিয়ামা নামে এক মহিলাকে। রেয়াত করা হয়নি তাঁর সন্তানদেরও। সে দিন ইকনমি ক্লাসে ছিল বাচ্চারা। কী কারণে অপরাধীর মতো তাদের নেমে যেতে বাধ্য করা হল, বোঝেনি কচি মুখগুলো। বছর দুয়েক আগের এই ঘটনায় ১১ মে শুক্রবার মার্কিন উড়ান সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে হিউস্টনের এক আদালতে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ দায়ের করেছেন নাইজিরিয়ার নাগরিক কুইন। তাঁর অভিযোগ, গায়ের রং কালো বলেই এই হেনস্থা।
ঘটনাটা ২০১৬ সালের। মার্চের শুরুতে ছেলেমেয়েদের নিয়ে কানাডা যাচ্ছিলেন তিনি। ওন্টারিওর এক স্কুলে বাচ্চাদের ভর্তি করানোর কথা ছিল। হাতে সময় কম। তাই যেখানে যেমন টিকিট পেয়েছেন, কিনে ফেলেন কুইন। নাইজিরিয়ার লাগোস থেকে প্রথমে পৌঁছন হিউস্টন। সেখান থেকে বিমানে সান ফ্রান্সিসকো যাওয়ার পথেই ওই ঘটনা।
কুইনের দাবি, সে দিন বিজনেস ক্লাসে নিজের আসনের সামনে পৌঁছে দেখেন, এক ব্যক্তি তাঁর আসন দখল করে আছেন। বার বার বলা সত্ত্বেও কুইনকে তিনি আসন ছাড়তে রাজি হননি। বিষয়টি বিমানকর্মীদের জানালে তাঁরা উল্টে কুইনকে অন্য আসনে বসতে অনুরোধ করেন। বিমান তখনও ছাড়েনি। মালপত্র গুছিয়ে রেখে বিমানের শৌচাগারে গিয়েছিলেন কুইন। ফেরার সময়ে দেখেন, ওই ব্যক্তি পথ আটকে দাঁড়িয়ে। বহু অনুরোধেও তিনি না সরায়, বাধ্য হয়েই পাশ কাটিয়ে আসনে ফেরেন তিনি।
বিরক্ত, অপমানিত কুইন জানতেন না যে হেনস্থার আরও বাকি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিমানকর্মীরা এসে তাঁকে জানান, চালকের নির্দেশ বিমান থেকে কুইনকে নেমে যেতে হবে। কুইনের ওই সহযাত্রীর অভিযোগ, তাঁর গায়ের গন্ধে না কি টেকা যাচ্ছে না। কুইন না নামলে বিমান থেকে তিনি নেমে যাবেন।
লাঞ্ছিত, হতবাক কুইনকে এর পর জোর করেই নামিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ছেলেমেয়েদের স্কুলে ভর্তি করতে তাঁর দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছনো জরুরিÑ এ সব জানিয়েও সে দিন মন গলানো যায়নি বিমানকর্মীদের। হিউস্টন বিমানবন্দরে এ দিন পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরে, অন্য বিমানে তাঁরা ওন্টারিও পৌঁছন। সে দিনের ওই ঘটনায় মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত কুইন ও তাঁর সন্তানেরা যথাসময়ে স্কুলে পৌঁছতে পারেননি। সাক্ষাৎকারের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় অযথা হয়রানির মুখে পড়েন তাঁরা। খরচ হয় অতিরিক্ত।
আদালতে ওই সহযাত্রী এবং উড়ান সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা ঠুকেছেন ওই মহিলা। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ অবশ্য এখনও স্পষ্ট কিছু জানাননি। তাঁরা জানিয়েছেন, বিষয়টি সত্যি হলে আইনি পথেই জবাব দেবেন।