ঠিকানা রিপোর্ট : নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে পা রেখে উপরে তাকালেই নিয়ন আলোর শুভেচ্ছায় সিক্ত হবেন আপনি। একইভাবে ৭৪ স্ট্রিটে গেলে সুন্দর আলোকসজ্জা দেখা যাবে। ডাইভারসিটি প্লাজা যখন তৈরি হয়েছিল, তখন সেখানে মনোরম পরিবেশ ছিল। বলতে গেলে জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটা জৌলুস ভাব ছিল। কিন্তু দিন দিন সে জৌলুস যেন হারাতে বসেছে। একপ্রকার অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে জ্যাকসন হাইটস।
এখন কি সকাল আর বিকাল। জ্যাকসন হাইটসের কোনো রাস্তায়ই স্বাচ্ছন্দে হাটা দায়। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। যেখানে সেখানে পড়ে আছে চায়ের কাপ। নির্দিষ্ট স্থানে ডাস্টবিনও নেই যে কেউ চা খেয়ে কাপটি ফেলবে। পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধা না থাকায় ৭৩ ও ৭৪ স্ট্রিটে গাড়ির ডাবল পার্কিং প্রতিমুহূর্তের ঘটনা। অথচ এই জ্যাকসন হাইটসকেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে ব্যবসায়ীদের একাধিক সংগঠন। আছে একাধিক সামাজিক সংগঠনও। কিন্তু কোনো সংগঠনই তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ এই সংগঠনগুলোই নির্বাচনের আগে জ্যাকসন হাইটস নিয়ে কত না প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, আমরা সিটিকে ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করছি। আমাদের যেসব সুযোগ সুবিধা দেবার কথা, সিটি বরং তা দিচ্ছে না। তারা বলেন, জ্যাকসন হাইটসে কোনো সড়কে একটা ডাস্টবিন নেই। পথচারীরা চা-কফি খেয়ে কাপটি কোথায় ফেলবে? বাধ্য হয়ে তারা রাস্তায় ছুঁড়ে মারে। এলাকায় পার্কিং নেই বললেই চলে। যেসব সড়কে পার্কিং আছে তা সকাল হবার আগেই পূর্ণ হয়ে যায়। বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা দূর-দূরান্ত থেকে এসে জ্যাকসন হাইটসে গাড়ি পার্ক করে ট্রেনে করে ম্যানহাটনে কাজে চলে যান। ফলে পার্কিংয়ের অভাবে অনেকেই যততত্র গাড়ি পার্ক করেন। এজন্য এ এলাকায় বিশৃঙ্খলা লেগেই আছে।
এই এলাকায় নানান কাজে আসা ক্রেতা ও পথচারিদের অভিযোগ, জ্যাকসন হাইটস এলাকা আগে বেশ পরিচ্ছন্ন ছিল। এখন প্রতিটি সড়কে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে। ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে নানান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব দোকানপাটের কোনো বৈধতা থাকার কথা নয়। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই। মাঝে মাঝে মনে হয়, এটা কী আমেরিকার কোনো শহর?
এ ব্যাপারে বাংলাদেশি একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা বলেন, আমরা অনেক কিছু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যে কোনো কাজ করতে হলে সবার সহযোগিতা দরকার। এক্ষেত্রে আমরা কাক্সিক্ষত সহযোগিতা পাচ্ছি না। মানুষের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতাও বাড়ছে। তিনি বলেন, জ্যাকসন হাইটসে অন্য দেশের একটি গ্রোসারি ব্যবসার কোনো নিয়মই মানছে না। তারা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে তাদের পণ্য ফুটপাতে নিয়ে এসেছে। এজন্য পথচারিদের দুর্ভোগ বাড়ছে। এলাকার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।