সাক্ষৎকারে ড. আকবর আলী খান
আলী আদনান : ‘অযৌক্তিক’ কোটা পদ্ধতির দৌরাত্ম্যে বিপন্ন হতে বসেছে দেশের বিপুলসংখ্যক মেধাবীর স্বপ্নের ভবিষ্যৎ। সরকারি বিভিন্ন চাকরিতে যোগ্যতার মানদ-ে এগিয়ে থেকেও কোটার মারপ্যাঁচে ছিটকে পড়ছে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরা। আর সেখানে কোটার কল্যাণে স্থান করে নিচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরা, ক্ষেত্রবিশেষে সুযোগ নিচ্ছে মেধাহীনরাও। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোটা পূরণ না হওয়ায় বছরের পর বছর শূন্যই থেকে যাচ্ছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদ। এখানেও স্থান নেই মেধা তালিকার ওপরের সারিতে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের। বছরের পর বছর এ ব্যবস্থা চালু থাকায় বঞ্চিত হচ্ছে মেধাবীরা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরি, বিশেষ করে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা প্রচলিত। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী কোটায় ১০, জেলা কোটা ১০, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য পাঁচ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে এক শতাংশ কোটা। বাদবাকি ৪৪ শতাংশ আসনের জন্য লড়াই করছে সংখ্যাগুরু বিপুল সংখ্যক মেধাবী। সংখ্যাগুরু সাধারণ চাকরিপ্রার্থী এবং সংখ্যালঘু কোটাধারীদের মধ্যে এতো বড় বৈষম্য সম্ভবত পৃথিবীর দ্বিতীয় আর কোনো দেশে নেই!
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কোটা পদ্ধতি বরাদ্দ দেয়া হয় সাধারণত অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেয়ার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রে কোটাধারীদের আগেই একটি নম্বর দেয়া হয়। এরপর ওপেন পরীক্ষায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয় কোটাধারীদের। আর ভারতে কোটা আছে, তবে তা উপার্জনের ভিত্তিতে। উচ্চ আয়ের মানুষরা কোটা পায় না। এক্ষেত্রে তারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকেও ছাড় দেয় না। একবার যে কোটার সুবিধা পাবে, সে আর কখনও কোটার সুবিধা পাবে না। অথচ বাংলাদেশে একই পরিবার থেকে একাধিক ব্যক্তি এমন কি বংশ পরম্পরায় এ সুবিধা ভোগ করে আসছে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা সুবিধা পায়, সে চাকরিতে ঢোকার ক্ষেত্রেও পাচ্ছে।
বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার ওপর ২০০৮ সালে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন একটি গবেষণা করে। গবেষণাটি করেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলী খান এবং সাবেক সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ। ৬১ পৃষ্ঠার ওই গবেষণা প্রতিবেদনে ১৯৮৭ সাল থেকে পরবর্তী ১০ বছরে ধীরে ধীরে কোটা কমিয়ে দশম বছরে তা বিলুপ্ত করার পক্ষে সুপারিশ করা হয়। ওই সুপারিশ অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালের পর দেশের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকার কথা নয়। তবে এখনও পর্যন্ত ওই প্রতিবেদন বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেই। এমতাবস্থায় বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা কী অনন্তকাল চলবে, নাকি এর সংস্কার জরুরি এবং এর ভবিষ্যত পরিণতি কীÑ জানতে কথা হয় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও কোটা সংস্কার নিয়ে তৎকালীন গবেষণা টিমের প্রধান ড. আকবর আলী খানের সাথে।
তিনি বলেন, কোনো দেশেই অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু রাখার নিয়ম নেই। মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পুরষ্কার হিসেবে কোটা দেয়ার কোনো বিধান কিন্তু সংবিধানে নেই। বর্তমানে আমরা যদি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও তাদের নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা সুবিধা রাখতে চাই, তাহলে অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবেই রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এছাড়া বাংলাদেশ থেকে এই মুহূর্তে কোটা ব্যবস্থা তুলে দেয়া উচিত। বিদ্যমান কোটার কারণে দেশের মেধাবীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নানাভাবে। কোটা বন্ধ হলে অনেক মেধাবী চাকরি পাবে।
তার কথায় উঠে এসেছে প্রশ্নফাঁস, পরীক্ষা পদ্ধতির গলদ ও চাকরির বয়সসীমাও।
প্রশ্ন : ১৯৮৭ সালে আপনারা গবেষণা করেছিলেন তাতে ১০ বছর পর (১৯৯৭ সালে) কোটা প্রথা পুরোপুরি বিলুপ্তির সুপারিশ ছিলো। ওই গবেষণার তিন দশক পরও তা কার্যকর হয়নি। বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?
উত্তর : দেখুন, কোটা ব্যাবস্থায় কিছু লোক লাভবান হয়। যারা লাভবান হয়, তারা অবশ্যই কোটা ব্যবস্থা অটুট রাখার চেষ্টা করবে, এটাই স্বাভাবিক। এ জন্যই স্বাধীনতার চার দশক পরও কোটা ব্যাবস্থায় কোনো পরিবর্তন আসেনি, উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার হয়নি। আমিও এতে আশ্চর্য্য হইনি।
প্রশ্ন : বলা হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা যেহেতু কোটার সুবিধা পাচ্ছেন, তাই কোটাপ্রথা বাতিল করলে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হবে। আপনি কী মনে করেন?
উত্তর : এটা সম্মান-অসম্মানের প্রশ্ন নয়। কোটা সম্পর্কে সংবিধানে সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সামনে নিয়ে আসার জন্য কোটা করা যেতে পারে। সেই চিন্তা থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা পদ্ধতি প্রচলন করা হয়। কারণ, যখন মুক্তিযুদ্ধ চলছিলো তখন মুক্তিযোদ্ধারা পড়ালেখা করতে পারেননি, তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। সেই বিবেচনায় তখন মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন এক ধরণের অনগ্রসর জনগোষ্ঠী। সেজন্য তাদের কোটা সুবিধা দেয়া হয়েছিলো।
মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পুরষ্কার হিসেবে কোটা দেয়ার কোনো বিধান কিন্তু সংবিধানে নেই। বর্তমান সংবিধানে কোনো জনগোষ্ঠীকে পুরষ্কৃত করার কোনো বিধান নেই। বর্তমানে আমরা যদি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা সুবিধা রাখতে চাই, তাহলে অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে রাখতে হবে। যারা যুদ্ধে আহত হয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, আয়ের কোনো ভালো উৎস নেই, যারা সরকারের সাহায্যের উপর নির্ভরশীলÑ এ ধরণের মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু রাখা যেতে পারে। কিন্তু এর বাইরে যারা আছেন, যেসব মুক্তিযোদ্ধার অবস্থা স্বচ্ছল, তাদেরকে কোটা সুবিধা দিলে তা পুরস্কার হিসেবে সামিল হবে। এ বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা রাখা যেতে পারে। কিন্তু এ কোটার যৌক্তিকতা আমাদের বুঝতে হবে।
প্রশ্ন : আদিবাসী বা প্রতিবন্ধীদের কী অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করবেন?
উত্তর : আদিবাসীদের জন্য কোটা থাকতে পারে। প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা থাকা বাধ্যতামূলক নয়। যদি সম্ভব হয়, তাহলে এ কোটা দিতে বলা হয়েছে। এটাকে আরেকটু সংস্কার করা যেতে পারে। কোটা থাকে, কিন্তু পৃথিবীর কোথাও এটা চিরস্থায়ী ব্যাবস্থা না। নির্দিষ্ট সময় পর পর্যালোচনা করে দেখতে হয়, কোটা ঠিকমতো কাজ করছে কি না। যেমন ধরুন, আমাদের জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য আসন বরাদ্দ আছে। কিন্তু সেটা অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়। নির্দিষ্ট মেয়াদে দশ, পনের বা বিশ বছর মেয়াদে কোটা করা হয়। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে পুণর্বিবেচনা করে দরকার মনে করলে সেটাকে চালু রাখা যেতে পারে।
প্রশ্ন : দেশে ২৫৮ ধরণের কোটা চালু আছে। এতোগুলো কোটার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না?
উত্তর : আমাদের দেশে যে কোটা ব্যবস্থা চালু আছে তা প্রবর্তন করা হয়েছিলো ১৯৭২ সালে। কিন্তু গত ছেচল্লিশ বছরে কোটা ব্যাবস্থার কোন মূল্যায়ন করা হয়নি। মূল্যায়ন করা উচিত। মূল্যায়নের পরে যদি মনে হয়, কোটা চালু রাখা উচিত, তাহলে কোটা চালু রাখা যেতে পারে। আমাদের দেশে আরেকটি বড় সমস্যা রয়েছে। তা হলো এখানে ২৫৮ ধরণের কোটা চালু আছে। এতো কোটা পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রে নাই। এটা হয়েছে আমাদের বোকামির জন্য। বঙ্গবন্ধু যখন কোটা ব্যাবস্থা চালু করেন, তখন দেশে মাত্র সতেরটি জেলা ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জেলা কোটা ও মেধা কোটা মিলেয়ে তখন মাত্র পঁয়ত্রিশটি কোটার অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো। এখন সতেরটি জেলা হয়ে গেছে চৌষট্টি জেলা। সেখানে নতুন করে যোগ হয়েছে আদিবাসী কোটা ও নারী কোটা। সব মিলিয়ে এখন ২৫৮ টি কোটা চালানো প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব? সরকার যদি এখন ৪৬০টি উপজেলাকে জেলা ঘোষণা কওে, তাহলে কী আমরা ৪৬০টি জেলাকেই কোটা সুবিধা দেবো? এটা একটা ভুল হয়ে গেছে। এটাকে সংশোধন করা দরকার বলে মনে করি।
প্রশ্ন : বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা প্রশ্নফাঁস। এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী বলে মনে করছেন?
উত্তর : এটি এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা। যেটা দরকার, সেটা হলো যারা প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে অন্যরা ভয় পাবে। শাস্তি না দিলে অপরাধীদের স্পর্ধা আরো বেড়ে যাবে। আমি আশা করবো, সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেবেন।
প্রশ্ন : আমরা বিশ্বমানের শিক্ষা কতোটা নিশ্চিত করতে পারছি?
উল্টর : উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা মোটেও মানসম্মত নয়। আবার তাই বলে তাড়াহুড়ো করে ছয়মাস বা এক বছরের মধ্যে এটাকে সংস্কার করতে যাওয়াটাও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। কমপক্ষে পাঁচ থেকে দশ বছর সময় নিয়ে শিক্ষা ব্যাবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা দরকার। সেই সংস্কার কেমন হওয়া দরকার বা কেমন হতে পারে, এখানে স্বল্প পরিসরে সে ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব নয়।
প্রশ্ন : আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনের দাবি উঠছে নানা মহলে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
উত্তর : ইতোমধ্যে আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতিতে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে, তাতে আমাদের কোনো লাভ হয়নি। উল্টো ক্ষতি হয়েছে। তাই পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে পুণর্বিবেচনা দরকার। বিশেষ করে আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে আমরা আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতি তুলনা করে দেখতে পারি, আমরা কোথায় আছি? আমরা যে ধরণের পরীক্ষা পদ্ধতি প্রচলন করেছি, তা সম্পূর্ণ অচল। যেমন ধরুন, নৈর্বক্তিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রশ্ন ও উত্তর দুটিই দিয়ে দেয়া হয়। তারপরও অপশন দেয়া হয় এবং ৬০% নম্বরকে ফার্স্ট ক্লাস নম্বর ধরা হয়। এ ধরণের প্রশ্নে ১০০% নম্বরকে ফার্স্ট ক্লাস নম্বর ধরা উচিত। এভাবে আমরা মেধার উৎকর্ষতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছি। শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত মেধার বিকাশ ঘটানো।
প্রশ্ন : চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলন কতোটা যৌক্তিক বলে মনে করেন?
উত্তর : আমাদের দেশে বেশিরভাগ চাকরি এখন ক্যাডার সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত। ক্যাডার সার্ভিসের প্রার্থীদের ব্যক্তিগত যোগ্যতার ওপর নির্বাচন করা হয়। বিষয়ের উপরে বা তার অধিকারের উপরে নির্বাচন করা হয় না। মনে করা হয়, একজন লোকের যদি নেতৃত্বদানের যোগ্যতা থাকে, তাহলে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে যে কোনো বিভাগ সচল রাখবেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরণের ক্যাডার সার্ভিস নেই। সেখানে রিক্রুটমেন্ট করা হয় পজিশন বেইস্ড। যে কাজটি করানো হবে, সে কাজ সম্পর্কে যিনি সবচেয়ে ভালো ধারণা রাখেন, তাকেই ওই কাজে নিয়োগ দেয়া হয়। পজিশন বেইস্ড রিক্রুটমেন্টে বেশি বয়সেও নিয়োগ দেয়া সম্ভব। কিন্তু ব্যক্তিগত গুণাবলীর ওপর রিক্রুটমেন্ট হলে তাদেরকে অল্প বয়সে নিয়োগ দেয়া উচিত। নয়তো তারা কখনো যোগ্য প্রার্থী হয় না।
তাছাড়া এখনো যারা চাকরি পায়নি, বয়সসীমা বাড়ালেই যে তারা চাকরি পেয়ে যাবে, তা আমি মনে করি না। তবে ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি, বাংলাদেশে ক্যাডার বেইস্ড রিক্রুটমেন্ট ফেল করেছে। এখানে পজিশন বেইস্ড রিক্রুটমেন্ট হওয়া দরকার। পজিশন বেইস্ড রিক্রুটমেন্ট হলে বয়সসীমা বাড়াতে আমি কোনো অসুবিধা দেখি না।