ঠিকানা অনলাইন : খুলনায় বাস ধর্মঘটের পাশাপাশি শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী লঞ্চ ধর্মঘট। ২১ অক্টোবর শুক্রবার সকাল থেকে ১০ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ওই ধর্মঘট শুরু করেছে লঞ্চ শ্রমিক ইউনিয়ন। এর ফলে খুলনা থেকে দাকোপ, কয়রা ও সাতক্ষীরায় যাতায়াতের সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাসের পাশাপাশি লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর খুলনা থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে না। তবে মালবাহীসহ অন্যান্য লঞ্চ ও নৌযান চলাচল করছে।
বাংলাদেশ লঞ্চ শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, লঞ্চশ্রমিকদের বেতন বাড়ানো, ভৈরব থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত নদের খনন, ভারতগামী জাহাজের ল্যান্ডিং পাস দেওয়ার দাবিসহ ১০ দফা দাবিতে ধর্মঘট পালন করছেন যাত্রীবাহী লঞ্চের শ্রমিকরা। দেলোয়ার বলেন, প্রতিদিন খুলনা থেকে পাঁচটি লঞ্চ দাকোপ, কয়রা, সাতক্ষীরার দিকে যায়। শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর খুলনা থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে না। তবে মালবাহীসহ অন্যান্য লঞ্চ ও নৌযান চলাচল করছে।
বিএনপির সমাবেশের আগে লঞ্চ ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. দেলোয়ার বলেন, অনেক আগেই ওই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য মালিক ও নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন না করায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু করেছেন শ্রমিকরা। এর সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
আগামীকাল শনিবার খুলনা নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিভাগীয় গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এর আগের দিন শুক্রবার সকাল থেকে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছে জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি। সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ধর্মঘটের কারণ হিসেবে নছিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইকসহ সব অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবির কথা বলা হলেও বিএনপি বলছে, তাদের গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই এ ধর্মঘট।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, কোনো প্রতিবন্ধকতাই নেতাকর্মীদের আটকাতে পারবে না। প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে মানুষ সমাবেশে যোগ দেবে। ইতিমধ্যেই খুলনায় নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। তারা পুলিশি ঝামেলা এড়াতে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি, আবার কেউ কেউ হোটেলে অবস্থান করছেন। খুলনার এই সমাবেশ হবে স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ।
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুদরতই-আমির এজাজ খান বলেন, খুলনার বিভিন্ন উপজেলা এবং বিভাগের অন্যান্য ৯টি জেলা থেকে গণসমাবেশে নেতাকর্মীদের আসা বাধাগ্রস্ত করতেই পরিকল্পিতভাবে বাস-লঞ্চ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজাজ বলেন, সে জন্য ১০ জেলার নেতাকর্মীদের বিকল্পভাবে সমাবেশে আসতে আহ্বান জানানো হয়েছে। সকল বাধা-বিপত্তি ঠেলে বিভাগের আশপাশের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার থেকেই খুলনা অভিমুখে যাত্রা করেছেন।
বাস-লঞ্চ বন্ধের ঘোষণায় অনেক স্থান থেকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা গণসমাবেশের আগেই খুলনা শহরে আসতে শুরু করেছেন। যদিও বিএনপির নেতাদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা জানান, বিএনপি পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ আহ্বান করেছে। এটা প্রতিহত করতে হবে বা বাধা দিতে হবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। বাস-লঞ্চ বন্ধ করেছে মালিক সমিতি। এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।
ঠিকানা/এনআই