ঠিকানা ডেস্ক : দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিএনপির ‘গণতন্ত্রের মা’ উপাধি দেয়া জাতির সঙ্গে তামাশা বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মনে করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম হওয়া উচিত ‘খুনির মা’ বা ‘চোরের মা’।
২০১৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় করা গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান জড়িত ছিলেন অভিযোগ করে খালেদা জিয়ার ‘খুনির মা’ নাম হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
আবার বিএনপি নেত্রীর দুই ছেলে তারেক রহমান রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর বিদেশে পাচার করা টাকা যুক্তরাষ্ট্র এবং সিঙ্গাপুরে ধরা পড়া, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করার কথা তুলে ধরে খালেদা জিয়ার উপাধি ‘চোরের মা’ হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
গত ১৫ মে গণভবনে গ্রেনেড হামলা মামলায় নিহতদের স্বজন এবং আহতদের মধ্যে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছাড়াও জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা-নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিষয়ে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই হত্যার সাথে জিয়াউর রহমান যে জড়িত ছিল, তাতে তো কোনো সন্দেহ নাই। খুনি ফারুক, রশিদরাই বিবিসিতে বলেছে।’
‘এই পরিবারটা কেবল খুনখারাবিই করতে পারে। আর কিছু জানে না। আর এখন তো এতিমখানার জন্য টাকা এসেছে, তাও আবার চুরি করে খেয়ে বসে আছে।’
গণতন্ত্রের মা হলো কিভাবে?
খালেদা জিয়াকে কিভাবে ‘গণতন্ত্রের মা’ উপাধি দেয়া হলো, সে প্রশ্নও রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১০ বছর ধরে মামলা চলেছে। বিএনপির আইনজীবীরা এটা প্রমাণ করতে পারে নাই যে এতিমের টাকা খালেদা জিয়া মেরে দেয় নাই বা এই টাকা আত্মসাৎ করে নাই।’
“১০ বছর ধরে একটা মামলা চলা সোজা কথা না। তারপর তার শাস্তি হয়েছে। যে গ্রেনেড হামলা করায়, মানুষ খুন করে, এতিমের টাকা মেরে খায়, তার নাম আবার তারা বলে ‘গণতন্ত্রের মা’। সে তো ‘খুনির মা’, বলতে হয়, ‘চোরের মা’।”
গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদ- দেয়ার এক মাস পর, ১০ মার্চ, খুলনার এক জনসভায় খালেদা জিয়াকে ‘গণতন্ত্রের মা’ উপাধি দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
প্রধানমন্ত্রী এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “যে খুন করে, এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে, তাকে বানিয়েছে ‘গণতন্ত্রের মা’। গণতন্ত্র হলো কিভাবে?”
“যে (খালেদা জিয়া) ভোট চুরিতে এক্সপার্ট, মানুষ খুনে এক্সপার্ট, দুর্নীতিতে, এক্সপার্ট কালো টাকা সাদা করে, সে আবার ‘গণতন্ত্রের মা’ হয়। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে তামাশা করা ছাড়া এটা আর কিছুই না।”
এ সময় ৯৬ সালে বিএনপির একদলীয় নির্বাচনের পর আন্দোলনের মুখে খালেদা জিয়ার ক্ষমতা ছাড়ার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি যে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থেকে খুব বড়াই করছিল দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলাম। কিন্তু আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে জনগণ। জনগণের ভোট চুরি জনগণ মেনে নেয়নি। তার ফলে তাকে সে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। ৩০ মার্চ সে পদত্যাগ করে।’