গাছে বেঁধে শরীরে আগুন দেয়া নারীর মৃত্যু, দেবর গ্রেপ্তার

ঠিকানা অনলাইন : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গাছে বেঁধে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ সকাল ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ সুফিয়া বেগম (৫০) মারা যান। এই ঘটনায় অভিযুক্ত তার দেবর লিয়াকত মোল্লাকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ।

১০ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল ১১টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের বাঘঝাপা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ইউসুফ আলী মোল্লার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ সুফিয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, স্বামীর পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দেবর লিয়াকত মোল্লার সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। লিয়াকতও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। তিনি তার সম্পত্তির অংশ বিক্রি করে গ্রাম থেকে চলে গেছেন। কিন্তু এখনও সম্পত্তি দাবি করছেন। মূলত এই নিয়ে দুই ভাইয়ের বিরোধ। এই বিরোধের জেরে এর আগেও লিয়াকত মোল্লা একদিন সুফি বেগমের মাথার চুল কেটে দেন। পরে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সেটি মীমাংসা করেন।

সুফি বেগম আরও বলেন, সকালে লিয়াকত মোল্লা ও আমার আরেক দেবর আব্দুর রহমানের ছেলে সোহেল বাড়িতে আসে। এ সময় আমি বাড়িতে একা ছিলাম।

তারা আমাকে বসতঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে বের করে এবং উঠানের পেয়ারা গাছের সঙ্গে আমার হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে আমার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। আমি চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। তারা আমাকে কাশিয়ানী হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমার সারা শরীর পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীর ভাই আখতার হোসেন বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় লিয়াকতসহ দুই জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো দুই-তিন জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে এই ঘটনায় ওই নারীর দেবর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য লিয়াকত মোল্লাকে (৫০) মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকার কদমতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে কাশিয়ানী থানা পুলিশ।

ওসি ফিরোজ আলম বলেন, এই ঘটনার পরপরই কাশিয়ানী থানা পুলিশ লিয়াকতকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। ঢাকা থেকে লিয়াকতকে রাতেই কাশিয়ানী থানায় আনা হয়েছে। বুধবার তাকে গোপালগঞ্জের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

ঠিকানা/এসআর