
ঠিকানা অনলাইন : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। তাদের বহনকারী গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। ১৮ মে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরীর টঙ্গীর ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব গোপালপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম টঙ্গী পূর্ব থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন। হামলায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, প্রার্থী জায়েদা খাতুনের ক্যামেরাম্যান সুলতান মিয়া ও আশরাফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন আহত হন বলে জানা গেছে।
সন্ধ্যায় মেয়র প্রার্থীর গাড়িচালক শায়ের মাহমুদ শুভ বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি অভিযোগ দেন। এতে রবিউল ইসলাম পাইলট, খান সুমনসহ ১৫-২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিকেলে টঙ্গীর ৪৪ নম্বর পূর্ব গোপালপুর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে গেলে ‘জয় বাংলা’ ও ‘নৌকার স্লোগান’ দিয়ে একদল সশস্ত্র ক্যাডার প্রথমে মেয়র প্রার্থী এবং তার মা জায়েদা খাতুন ও তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে হামলাকারীরা মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বহনকারী গাড়ি ও অপর একটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত টঙ্গী পূর্ব থানায় নিয়ে যায়।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একজন সত্তর বছরের নারীর ওপর আজমতউল্লার ক্যাডাররা হামলা করেছে। তার সন্ত্রাসী অস্ত্রধারী বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে আমার গাড়ি এবং আমার মায়ের ওপর প্রথমে ইট মেরেছে। তারা আমার মাকে হত্যার জন্য নীলনকশা করেছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনও তাদের ভয়ে কিছু করছে না। এটা ভোটের কোনো পরিবেশ হতে পারে না। আমাদের যারা সাপোর্ট করে, তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অথবা ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তারা যেন আমাদের টেবিল ঘড়ি মার্কার ভোটটা না করে। এভাবে প্রশাসনের কাজ হতে পারে না।
তিনি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনারাও তো কোনো মায়ের সন্তান। একজন মায়ের ওপর যখন আঘাত এল, তখন আপনাদের কী করা উচিত!
তিনি পুলিশকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা জনগণের টাকায় বেতন নেন। আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে শহরের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। তিনি প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানান।
জাহাঙ্গীর বলেন, আমার ৭০ বছরের মায়ের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। আমাদের ভোটটা করতে দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক ও দেশের অভিভাবক, ওনাকে সত্যটা জানান। উনি সত্যটা জেনেশুনে, বুঝে গাজীপুরে ভোট করুক। সবাই যদি অন্ধ হয়ে থাকে, তাহলে ভোটের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন হলে আপনারা ঘোষণা দিয়ে দিন।
তিনি বলেন, আমার মাকে হত্যা করার জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। আমি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ও তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম থানায় এসেছিলেন। তারা থানায় একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এভাবে হামলা করা ঠিক হয়নি। আমাদের কাছে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। প্রার্থী থানায় অভিযোগ দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী কেউ এলে থানায় মামলা নেওয়া হবে।
ঠিকানা/এনআই