ঠিকানা রিপোর্ট : প্রতিষ্ঠার ২৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন উত্তর আমেরিকা ইনক আয়োজন করেছিল অ্যালামনাই নাইট। এ উপলক্ষে ২৯ অক্টোবর শনিবার নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিংয়ের শেরাটন হোটেলে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক, প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে অ্যালামনাই নাইট পরিণত হয় এক মিলনমেলায়।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গ রাজ্য থেকেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের অতীত স্মৃতি রোমন্থন, কুশল বিনিময়, অনুভূতি প্রকাশে উচ্ছ্বাসমুখর আনন্দঘন এক অন্যরকম আবহ তৈরী হয়। বিভিন্ন মুখরোচক খাবার দিয়ে শুরুর সময় শেরাটন হোটেলের টেরেসে মউর দোয়ান, চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেন, নিবিড় কুঞ্জ এই আর্ট ওয়ার্কগুলো সবাইকে স্মৃতি জাগানিয়া সবুজ ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। শিল্পী মৃদুল আহমেদ তাঁর কন্ঠে ফেলে আসা দিনের গান পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধ করেন।
মূল মঞ্চে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে সভাপতি সাবিনা শারমিন নিহার অ্যালামনাই নাইটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানের আহবায়ক ও সংগঠনের সাবেক সভাপতি পারভেজ কাজী সংগঠনের কর্মকর্তাদের মঞ্চে ডেকে পরিচয় করিয়ে দেন। বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. আমির মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ এ. জাহেদ, অনুষ্ঠানের আহবায়ক ও সংগঠনের সাবেক সভাপতি পারভেজ কাজী, সাবেক সভাপতি ও প্রধান সমম্বয়কারী মো. রেজাউল করিম সগীর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রতন চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব কামাল হোসেন মিঠু ও সায়ান নিবিড় শারমিন।
অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর সম্মিলিতভাবে অ্যালামনাই সঙ্গীত পরিবেশন করেন অ্যালামনাইয়ের সদস্যরা। এই পর্বটির পরিচালনা এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন গানটির রচয়িতা, সুরকার তাজুল ইমাম । এরপর উদ্বোধনী সঙ্গীত-এর রচয়িতা এবং সুরকার, চিত্রশিল্পী, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইমামকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি আবদুল আজিজ নঈমী।
অনুষ্ঠানে অ্যালামনাই পরিবার ও আমন্ত্রিত শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকলে গভীর মুগ্ধতায় উপভোগ করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন মার্জিয়া সুলতান, ফাহমিদা ইয়াসমিন অ্যানী, রুদ্রনীল দাশ রুপাই, সুপ্রিয়া চৌধুরী, ফরহাদ খান।
কলারাডো থেকে আগত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র কাজী শাহাদাত জুয়েল সুইট সিক্সটিন-এর পক্ষ থেকে শাটল ট্রেনের বিভিন্ন পরিবেশনার মাধ্যমে সবাইকে মুগ্ধ করেন।
অ্যানি ফেরদৌসের কোরিওগ্রাফিতে নৃত্যে অংশ নেন বিপা’র একদল শিশু শিল্পী, আদৃকা সেন, নামিয়া আমিন। কবিতা আবৃত্তি করেন মুন জেবিন হাই। এছাড়াও সঙ্গীত পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধ করেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী তাজুল ইমাম, বাদশা বুলবুল ও হৈমন্তী রক্ষিত মান।
‘মাটি ব্যান্ড’ মিউজিশিয়ান দল, তবলাবাদক পিনুসেন দাশ, মন্দিরাতে শিল্পী শহীদ উদ্দীন তাঁদের দক্ষ বাজনায় পুরো বলরুমকে সরগরম করে রাখেন।
সায়ান নিবিড় শারমিনের তৈরী আমাদের সুন্দর ক্যাম্পাস-এ বিভিন্ন দৃশ্য ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বিভিন্ন কার্যক্রমের ছবি নিয়ে স্লাইড শো দর্শক শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগায়।
অনুষ্ঠানে রেজিস্ট্র্রেশনের দায়িত্ব পালন করেন মীর কাদের রাসেল, ফারহানা আকতার, মহিউদ্দীন মোহাম্মদ আলমগীর, মাকসুদা খানম, মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম।
আপ্যায়ন ও সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন অধ্যাপক এ কে আখতার হোসেন, আবুল কাসেম, অধ্যাপক গোলাম মোহাম্মদ মুহিত, অনুপ দাশ, সৌমেন্দ্র কুমার নন্দী, অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুল মাওলা, মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির, ইকবাল মোহাম্মদ, গণেশ চন্দ্র ভৌমিক, মুহাম্মদ এয়াকুবউদ্দিন চৌধুরী, কল্লোল মজুমদার, সলিল কুমার চৌধুরী, কাজী শহিদুল ইসলাম লিটন, ফরিদা শিরিন খান, কল্লোল দাশগুপ্ত।
অ্যালামনাই নাইট উপলক্ষে ‘ধুলোট’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়। মধ্যরাতে অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্মৃতি নিয়ে সকলে বাড়ি ফেরেন।