ঠিকানা রিপোর্ট: দীর্ঘ ১০ বছরের অব্যাহত সংগ্রাম এবং বহু কাঠ-খড় পোড়ানোর পর অবশেষে আইনে পরিণত হল চাইল্ড ভিকটিমস অ্যাক্ট ( শিশু-কিশোর নির্যাতন শিকার আইন)। গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমো লোয়ার ম্যানহাটনে আইনটিতে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নিউ ইয়র্কের সেক্সুয়াল অ্যাবিউজদের ( যৌন নির্যাতনের শিকারদের) আইনগত কিছুটা বাড়তি সুযোগ দিয়েছেন বলে ১৭ ফেব্রুয়ারি জানা যায়।
স্বাক্ষরিত আইন অনুসারে বিলম্বে হলেও কৈশোরে যৌন হয়রানি, নির্যাতন বা উত্যক্ততের শিকাররা নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অভিযোগ দায়ের এবং ক্ষতিপূরণসহ ন্যায় বিচারের দাবিতে মামলা রুজু করতে পারবেন। ক্যুমো বলেন, এর ফলে নির্যাতিতদের ন্যায় বিচার লাভের পথ সুগম হয়েছে এবং দীর্ঘকাল ধরে অজানা অপরাধীদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে। মূলত সংবিধিবদ্ধ আইনের জটিলতার কারণে দীর্ঘকাল ধরে জাতীয় পর্যায়ে উত্যক্তকারীদের সঠিকভাবে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সে সকল ফাঁকফোকর আর থাকবে না এবং দীর্ঘকাল পরে হলেও প্রকৃত উত্যক্তকারীদের আইনের আওতায় আনা যাবে।
নতুন আইনের ফলে যৌন নির্যাতনের শিকাররা ৫৫ বছরে পা দেয়া পর্যন্ত সিভিল ল স্যুট দাখিল করতে এবং সাবেক ২৩ বছর বয়সের স্থলে ২৮ বছর বয়স পর্যন্ত ক্রিমিনাল চার্জের আবেদন জানাতে পারবে। তাছাড়া নতুন আইন অনুসারে ব্যক্তিগত ক্ষতিপূরণ দাবি করে নির্যাতনের শিকাররা নির্যাতকদের আদালতে হাজির করাতে পারবে এবং অন্য নির্যাতিতরাও ১ বছর সময়ের মধ্যে নির্যাতকদের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ দায়েরের সুযোগ পাবে।
রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে এবং ক্যাথলিক চার্চগুলোর তীব্র বিরোধিতার মুখে এ সকল পদক্ষেপ ১ দশকেরও বেশি সময় সাফল্যের মুখ দেখেনি। ক্যাথলিক চার্চগুলোর পক্ষ থেকে যুক্তি দেখানো হয়েছিল যে পদক্ষেপগুলো কার্যকর হলে নির্যাতিতদের দাবি মেটাতে গিয়ে অধিকাংশ গির্জা লালবাতি জ্বালাতে বাধ্য হবে। যাহোক, ডেমক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত সিনেটে বিলটি পাশ হওয়ার পর নির্যাতিতরা উদ্বাহু বাড়িয়ে একে স্বাগত জানিয়েছিল। সেক্স অ্যাবিউজ সারভাইভার ক্যাথরিন রব বলেন, এতদিন পর নিউ ইয়র্ক বেঠিক পথ থেকে সঠিক পথে এসেছে। এখন থেকে ছেলেমেয়েরা অধিকতর নিরাপধ হবে কারণ নির্যাতিতদের ন্যায় বিচার লাভের পথ সুগম হয়েছে।
বড় ভাইয়ের হাতে নির্যাতিত হওয়ার পর রব শেষ পর্যন্ত আইনজীবী এবং ভিকটিম এডভোকেট হয়েছেন এবং বিলটি পাশ করানোর জন্য দীর্ঘকাল ধরে আলবেনীতে সংগ্রাম চালিয়ে আসছিলেন। বিলটির প্রধান স্পন্সর ছিলেন সিনেটর ব্রাড হলিম্যান এবং অ্যাসেম্বলীঔম্যান লিন্ডা রোসেনথাল এবং তাদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন ডজনাধিক এডভোকেট। রোসেনথাল ডেমক্র্যাটিক দলীয় সহগামী আইনপ্রণেতাদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এর ফলে নির্যাতিতরা আইনের আশ্রয় নেয়ার উৎসাহ বোধ করবেন।