মোহাম্মদ এন মজুমদার
নিউইয়র্ক স্টেটসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেকটি স্টেটের নিউইয়র্ক আইনই মোটামুটি প্রায় একই ধরনের চাইল্ড সাপোর্ট বা সন্তানদের ভরণপোষণ এবং আলামনি বা স্বামী-স্ত্রীর ভরণপোষণ সংক্রান্ত আইন রয়েছে। স্টেট ফ্যামেলি ল’ এর আওতাধীন এই আইন বহুল প্রচলিত এবং এর ঊহভড়ৎপবসবহঃ এর জন্য স্থানীয় প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকেন। ফলে, চাইল্ড সাপোর্ট প্রদানে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে ব্যর্থ ব্যক্তিগণ, সরকারি সুযোগ-সুবিধা যেমন : ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য প্রফেসনাল লাইসেন্স, বিশেষ বিক্ষোভ চাকরি ব্যবসা ও বাণিজ্যিক লাইসেন্স বাহক লোন ইত্যাদি পেতে বেগ পেতে হয়। চাইল্ড সাপোর্টের পরিমাণ সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতার আয়ের ওপর নির্ভর করে। এছাড়া পিতা বা মাতার লাইফস্টাইল, জীবনযাত্রার মান সামাজিক অবস্থা ইত্যাদি চাইল্ড সাপোর্ট এবং আলামনির অংক নির্ধারণে সহায়ক হিসাবে কাজ করে। তবে, সাধারণ নিয়ম হচ্ছে সাপোর্ট প্রদানকারী পিতা বা মাতার আয়ের ২৫% একটি সন্তানের ক্ষেত্রে এবং ৩৫% ২টি সন্তানের ক্ষেত্রে নির্ধারণ করা হয়। চাইল্ড সাপোর্ট সন্তানদের বয়স ১৮, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২১ এমনটি ২৪ বছর বয়স পর্যন্ত দিতে হয়। তবে, আলামনি বা স্বামী-স্ত্রীর ভরণপোষণ নির্ভর করে ভরণপোষণ গ্রহণকারী বা প্রত্যাশী স্বামী বা স্ত্রীর বিবাহের বয়স বা কতকাল বিবাহিত, ভরণপোষণ প্রত্যাশি স্বামী বা স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা, বয়স, কর্মক্ষমতা সামাজিক অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনায় আনা হয়। সাধারণত প্রতি তিন বছরের বিবাহিত জীবনের জন্য এক বছরের ভরণপোষণ দেয়া হয়। তবে, ভরণপোষণ গ্রহণকারী স্বামী বা স্ত্রী পুনঃবিবাহের কারণে ওই ভরণপোষণ আইনানুগভাবে আর পান না। এতকাল চাইল্ড সাপোর্ট প্রদানকারী পিতা-মাতা তাদের প্রদেয় অর্থ ট্যাক্স ডিডাকশনের আওতাভুক্ত থাকলেও ২০১১ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট ট্যাক্সের ট্যাক্স কাট ও জব অ্যাক্ট এর আওতায় চাইল্ড সাপোর্ট ও আলামনিকে ট্যাক্সের আওতা বহির্ভূত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ প্রদানকারী যেমন আয়কর মাফ পাবেন না, গ্রহণকারীরাও ট্যাক্স প্রদান করতে হবে না।
চাইল্ড সাপোর্টের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধায় ডিভোর্সের পূর্বেই স্বামী/স্ত্রীকে বিষয়টি স্মরণে রাখতে হবে। এটি যেহেতু একটি দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া চাইল্ড সাপোর্ট চলমান সময়ে চাইল্ড সাপোর্ট চলমান সময়ে চাইল্ড সাপোর্ট প্রদানকারী এবং গ্রহণকারীর আরয় বাড়তে বা কমতে পারে বিধায় সেই ক্ষেত্রে আবার মোডিফিকেশন এবং লোয়ার মোডিফিকিশনের জন্যও আবেদন করা যেতে পারে এবং আয়ের পরিবর্তন হলে চাইল্ড সাপোর্টের পরিমাণও কম-বেশি হতে পারে। বিবাহ বিচ্ছেদ বা ডিভোর্স ফাইল করার পূর্বে এসব খুঁটিনাটি বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝতে হবে। সবার পারিবারিক জীবন সুন্দর ও আনন্দঘন হোক এটাই প্রত্যাশা।
লেখক পরিচিতি : এই প্রবন্ধটির লেখক মোহাম্মদ এন মজুমদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং নিউইয়র্কস্থ টরো ল সেন্টার থেকে আইনে এলএলএম ডিগ্রিধারী, তিনি নিউইয়র্কস্থ একটি ল ফার্মে ১৯৯৯ সাল থেকে কর্মরত আছেন। এ ছাড়াও তিনি নিউইয়র্কের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকা-ের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি ব্রঙ্কস প্লানিং বোর্ড-৯ এর সদস্য ফাস্ট ভাইস চেয়ারম্যান এবং ল্যান্ড এন্ড জোনিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ১৯১০ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। উপরোক্ত লিখাটি লেখকের সুদীর্ঘকালের ল ফার্মে কর্ম অভিজ্ঞতা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের ল স্কুলের শিক্ষা থেকেই লিখা। এটিকে লিগ্যাল এডভাইজ হিসেবে গ্রহণ না করে আপনাদের নিজ নিজ আইনজীবীর সহযোগিতা নিন।