চালু হচ্ছে স্মার্ট পদ্ধতির সুদহার

নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশ ব্যাংক স্মার্ট নামে নতুন সুদহার পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে। শর্ট টার্ম সাম্বলি এবারেজ রেট বা স্মার্ট নামের সুদহার আগামী অর্থবছরের শুরুতে অর্থাৎ জুলাই থেকেই কার্যকর হবে। বর্তমানে চলতি ব্যাংকঋণের ৯ শতাংশ সুদহার জুলাই থেকে তুলে নিয়ে নতুন ব্যবস্থা চালু হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকাররা এ ব্যবস্থা প্রবর্তনের পক্ষে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের ওপরই নতুন নামে প্রস্তাবিত সুদহার কার্যকর করার বিষয়টি নির্ভর করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য নীতিগতভাবে ব্যাংকারদের এ প্রস্তাবের পক্ষে। বাংলাদেশ ব্যাংক অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
জানা যায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণদানের শর্ত অনুযায়ীই সুদহার-সংক্রান্ত সংশোধিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আইএমএফ সুদহার নির্দিষ্ট না করে করিডর প্রথা চালু করে তা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার শর্ত দিয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদের হারের সঙ্গে ৩ শতাংশ যোগ করে যে সুদ হয়, তা নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। এতে ঋণের সুদ ১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার প্রায় ৭ শতাংশ। এর সাড়ে ৩ শতাংশ যুক্ত করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা হলো আমদানি মূল্য পরীক্ষা করে ডলার বরাদ্দ করা। বরাবর আমদানি মূল্য পরীক্ষা করা হতো না। আমদানিকারক, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পণ্যের যে মূল্য উল্লেখ করতেন, সেই মূল্যেই বৈদেশিক মুদ্রা বরাদ্দ করা হতো। তাদের প্রদত্ত রেট কখনোই যাচাই করা হতো না। আমদানিকারকদের তাদের ইচ্ছামতো ক্রয়মূল্য উল্লেখ করে ঋণপত্র খোলার অবারিত সুযোগ ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কখনোই ব্যবসায়ীদের প্রদত্ত আমদানি মূল্য যাচাই করার তাগিদ বোধ করেনি। ব্যবসায়ী, আমদানিকারকদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টদের গভীর যোগসাজশেই এটা সম্ভব হচ্ছে। বিদেশে বাংলাদেশ হাইকমিশন, মিশনগুলো সহজেই পণ্যের প্রকৃত মূল্য যাচাই করতে পারে। তাদেরকে এ কাজে নিয়োজিত করা হয়নি কখনোই। প্রকৃত আমদানি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যের এলসি খোলার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা বিপুল অঙ্কের অর্থ বৈধ প্রক্রিয়ায়ই বিদেশে পাচার করতে পারছেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে। যেসব পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে, তার সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে কি না কোনো সময়ই তা পরীক্ষা করে দেখা হয় না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে রহস্যময় ভূমিকা পালন করে আসছে। রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল অর্থ পাচার করার প্রক্রিয়া রোধ করা জরুরি হলেও তা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো মাথাব্যথাই ছিল না। এই প্রথম কিছুটা হলেও তাদের তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে।