ঠিকানা অনলাইন : পর্তুগালে ঘুরতে গিয়ে চিকিৎসা না পেয়ে গর্ভবতী পর্যটক নারীর মৃত্যুর জেরে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. মার্তা টেমিডো পদত্যাগ করেছেন। ৩১ আগস্ট বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৪ বছর বয়সী ভারতীয় ওই নারী অসুস্থ হয়ে লিসবন হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানে কোনো চিকিৎসাসেবা পাননি ওই নারী। এমনকি হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান ওই নারী।
চিকিৎসা না পেয়ে গর্ভবতী পর্যটক নারীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন পর্তুগালের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। চলতি গ্রীষ্মে পর্তুগালে চিকিৎসাসেবা-সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এবং এসব ঘটনার জন্য সমালোচকরা পর্তুগালজুড়ে প্রসূতি ইউনিটগুলোতে কর্মী সংকটকে দায়ী করেছেন।
ডা. মার্তা টেমিডো ২০১৮ সাল থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং করোনা মহামারির মধ্যে পর্তুগালের স্বাস্থ্য খাত পরিচালনার কৃতিত্ব তিনি পেয়েছেন। কিন্তু ৩০ আগস্ট মঙ্গলবার পর্তুগালের সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ডা. টেমিডো বুঝতে পেরেছেন যে তার আর এই পদে থাকার কোনো অবস্থা নেই।
পর্তুগালের বার্তা সংস্থা লুসা অনুসারে, পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা বলেছেন, ভারতীয় ওই নারীর মৃত্যুর কারণে ডা. টেমিডো পদত্যাগ করেছেন।
বিবিসি বলছে, পর্তুগালের প্রসূতি ইউনিটগুলোতে তীব্র কর্মী সংকট রয়েছে এবং এই সংকট মোকাবিলা করা নিয়ে পর্তুগিজ সরকার ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীনও হয়ে থাকে। কর্মী সংকটের কারণে ইউরোপের এই দেশটির অনেক প্রসূতি ইউনিট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে থাকে। এমনকি ঝূঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যেই গর্ভবতী নারীদের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালের মধ্যে স্থানান্তরের ঘটনাও ঘটে থাকে।
পর্তুগালের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, লিসবনের সান্তা মারিয়া হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করার সময় গর্ভবতী ওই নারী পর্যটক মারা যান। কারণ এই হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে কোনো জায়গা ফাঁকা ছিল না। সান্তা মারিয়া হাসপাতাল পর্তুগালের মধ্যে বৃহত্তম চিকিৎসাকেন্দ্র।
স্থানীয় আউটলেট আরটিপির সাথে কথা বলার সময় পর্তুগিজ চিকিৎসক সমিতির প্রধান মিগুয়েল গুইমারেস বলেছেন, ডা. টেমিডো পদত্যাগ করেছেন, কারণ বর্তমান সংকট সমাধানের কোনো উপায় আর তার সামনে ছিল না।
ঠিকানা/এনআই