চেয়ারম্যানের প্রতারণার ফাঁদে এমপি, প্রশাসনের কর্মকর্তারা

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংসদ সদস্যসহ (এমপি) মোট ৩০০ জনের কাছ থেকে গাড়ি কেনা ও রেন্ট-এ কারের ব্যবসার কথা বলে টাকা নিয়ে আর ফেরত দেননি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সেই টাকা খরচ করে এখন তিনি চেয়ারম্যান।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জাকির হোসেন নামের এই জনপ্রতিনিধিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ।

জাকির কুমিল্লার ২ নং মানিকাচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার কুমিল্লার মেঘনা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে ধরা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে।

২৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ। ডিবির প্রধান বলেন, ‘প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে গাড়ি কেনা ও রেন্ট-এ কারের ব্যবসার কথা বলে টাকা নিয়েছেন এবং তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে তার প্রতারণার কাজ চালিয়ে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘জাকির চেয়ারম্যান প্রতারিতদের কাছ থেকে পুরো টাকা নিয়ে ডাউন পেমেন্টে গাড়ি কিনতেন। আবার ব্যাংক থেকে গাড়ির বিপরীতে কাস্টমারকে না জানিয়ে ব্যাংক লোন সুবিধা নিতেন। দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ৩০০ ভিকটিমের সঙ্গে তিনি এ ধরনের প্রতারণা করে প্রায় হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন এবং এই প্রতারণার টাকা দিয়ে তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করেছেন।’

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মুগদা থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়। মামলাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে তেজগাঁও গোয়েন্দা বিভাগ।

তদন্তে উঠে আসে বন্দর থেকে স্বল্প দামে গাড়ি কিনে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নেন এবং কেনা গাড়ি রেন্ট-এ কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় পরিচালনা করার জন্য চুক্তি করেন জাকির চেয়ারম্যান। তবে একই গাড়ির বিপরীতে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে চুক্তি করেন। একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের গাড়ি একাধিক ব্যক্তির কাছে জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর দিয়ে গাড়ি বিক্রির চুক্তিপত্র করেন জাকির। গাড়িটি নিজেই ভাড়া নিয়ে মাসিক ভাড়া পরিশোধের ভিত্তিতে পরিচালনা করার কথা বলে কিছুদিন ভাড়া পরিশোধও করেন। কিন্তু পরে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন। এ ছাড়া আগের বিক্রি করা গাড়ি কম দামে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়েও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়েছেন। অধিক মুনাফা লাভের আশায় এ ধরনের প্রস্তাবের ফাঁদে পা দিতে সাধারণ মানুষকে পরামর্শও দেন ডিবিপ্রধান।

ঠিকানা/এনআই