ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়োগ না দেওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি অফিস ভাঙচুর

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : ছাত্রলীগের এক নেতাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নিয়োগ না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উপাচার্যের দপ্তরে ভাঙচুর করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ‘একাকার’ গ্রুপের নেতাকর্মীরা ৩০ জানুয়ারি সোমবার বিকেল পাঁচটার পর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান।

ভাঙচুরের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান যাতায়াত মাধ্যম শাটল ট্রেন আটকে রাখেন ছাত্রলীগের একাকার গ্রুপের নেতাকর্মীরা। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শাটল ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ আগে চাবি ছিনতাই করেন তারা। নয়টি বগিতে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরগামী এই শাটল আটকে দেওয়ায় বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সিন্ডিকেটের ৫৪১তম সভা ছিল। সভায় বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগসহ বিভিন্ন অ্যাজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে দুপুর থেকেই ছাত্রলীগ কর্মীদের ভিসি অফিসের অপেক্ষা কক্ষে অবস্থান করতে দেখা যায়। চারটার দিকে সভা শেষ হলে তারা ভিসির দপ্তরের যান এবং উচ্ছৃঙ্খলা শুরু করেন।

ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ উপগ্রুপ একাকারের নেতা রাইয়ান আহমেদ। তিনি ওশানোগ্রাফি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী এবং মেরিন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক প্রার্থী ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তার নিয়োগ না হওয়ায় মূলত এই ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে চবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল বলেন, সিন্ডিকেটে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদেরকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের চাইতে বেশি যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের রিসেন্ট কমিটির সদস্য রাইয়ান আহমেদকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

আমাদের দাবি রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িতদের শিক্ষক পদ থেকে বাদ দিতে হবে এবং ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী রাইয়ান আহমেদকে মেরিন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।

কার্যালয়ে ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিন আখতার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শাটল ট্রেন অবরোধের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। তাদের সাথে আমরা কথা বলার চেষ্টা করছি।

চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘আমি জেনেছি ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ভাঙচুর করেছে এবং শাটল ট্রেন আটকে রেখেছে। কেন করেছে এটি আমি খোঁজ নিয়ে সাংগঠনিকভাবে বিবেচনা করব।’

এ ছাড়া চবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ভার্সিটি এক্সপ্রেস গ্রুপের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় জানান, এ বিষয়ে সরাসরি জড়িত না থাকলেও তার মৌন সম্মতি আছে।

শাটল ট্রেন আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে আমরা জেনেছি শাটলের চালক থেকে ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে চাবি ছিনিয়ে নিয়েছে কিছু ছেলে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঠিকানা/এনআই