রাজনৈতিক ডেস্ক : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভাটি রূপ নেয় জনসমুদ্রে। ঢাকা ও এর আশপাশ থেকে আসা দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে জনসভাস্থল প্রকম্পিত হয়ে উঠে। নেতাকর্মীদের মুখে ও হাতে শোভা পাচ্ছিল অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন।
সকাল ১০টার পর থেকেই ঢাকা মহানগর ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থকরা খ- খ- মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করে। বেলা ৩টার মধ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় ভরে উঠে। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত জনসভা রূপ নেয় জনসমুদ্রে। উদ্যান পেরিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মূল ফটকের সামনের অংশ ও মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত সড়কটিতেও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
মঞ্চের টাঙানো ব্যানারে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবির পাশেই বড় অক্ষরে লেখা ছিলÑ ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন’। যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের অনেকের মাথায় ছিল লাল-সবুজের টুপি। জনসভায় নেতাকর্মীরা ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘খালেদা জিয়া এগিয়ে চল, আমরা আছি তোমার সাথে’, ‘শেখ হাসিনার গদিতে আগুন জ্বালাও একসাথে’ নানা সেøাগান দিতে থাকেন। সবশেষ ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছিল বিএনপি। ওই সভায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও বক্তব্য দিয়েছিলেন। কিন্ত গত ৩০ সেপ্টেম্বরের জনসভায় খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি থাকলেও শারীরিকভাবে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। প্রধান অতিথির চেয়ারটি তোয়ালে দিয়ে ঢাকা ছিল।
বেশকিছু দাবি ও কর্মসূচি নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় হাজির হন বিএনপি নেতারা। জনসভা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও শেষ সময়ে অনুমতি পেলেও প্রস্তুতিতে কমতি ছিল না দলটির। সকাল থেকেই গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জসহ আশপাশের জেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জনসভায় যোগ দিতে শুরু করেন। দুপুরের পর লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।
সমাবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যাপক শোডাউন করে। সমর্থকরা তাদের নিজ নিজ নেতার ছবি সংবলিত প্লাকার্ড নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। ময়মনসিংহ থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশে আসেন সম্ভাব্য প্রার্থী আক্তারুজ্জামান বাচ্চু। তিনি বলেন, চেয়ারপারসনের মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বরের জনসভায় নেতাকর্মীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে উপস্থিত হয়েছেন। এই উপস্থিতি প্রমাণ করে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী হচ্ছেন খালেদা জিয়া এবং জনপ্রিয় দল বিএনপি।
সমাববেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সমাবেশস্থল ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সমাবেশস্থলে অবস্থান নেন। যেকোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা ছিল প্রস্তুত।