জাতিসংঘের অধিবেশন নিয়ে কতিপয় প্রশ্ন

লাবলু কাজী

১ জানুয়ারি ১৯৪২ সালে এফ,ডি, আর দ্বারা ঘোষিত এবং ২৪ অক্তোবর ১৯৪৫ সালে আলোর মুখ দেখে এ বিশ্বসংস্থা জাতিসংঘ । সমগ্র বিশ্ব থেকে হুমকির অবসান, বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুৃত্ব ,অন্য দেশের সাথে সহযোগিতার হাত বাড়ানো, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দেশ-বিদেশের সমস্যা সমাধানে জোরালো ভূমিকা রাখা ইত্যাদি লক্ষ এবং উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের পথযাত্রা শুরু হয়েছিল । এই ম্যান্ডেট নিয়ে ইউ, এন, ওর সৃষ্টি হলেও তা কতটুকু সফলকাম হয়েছে- ভাবুকেরা ভেবে হতাশ হয়। ভেটো পাওয়ার পরাশক্তিধরদের ডিকটেটর প্রথার বিলীন এখানও হয়নি । কাজেই সমস্যার সমাধান নেই, নাম আছে কাম নেই । সাধারণ অধিবেসন বসে, যায় আবার আসে দুনিয়ার নির্যাতিত মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়না । এখনও প্যালেসষ্টাইন পরাধীন ও শোষিত, সিরিয়ায় এখনও শিশু, বৃদ্বরা মরছে প্রতিদিন । বিষাক্ত গ্যাস বোমা ছোড়ছে আসাদ থামানোর কেউ নেই। রোহিঙ্গারা এখনও নিজ দেশে এখনও ফিরতে পারেনি। ক্ষুধা মুক্তি হয়নি আফ্রিকায় । তাহলে এর প্রয়োজন কি?
ব্যবসায়িক কাজে আজ আমি ম্যানহাটানে গিয়েছিলাম এবং সারা বিশ্ব জুড়ে ব্যবসার রাজধানীর রঙ এবং গন্ধের যেন নূতন সাজে পেলাম । কারণটা হয়তো বা ইউএনওতে অংশগ্রহণকারী ভিআইপির ভিড়, নূতন সাজ সজ্জা। ৭৩ তম সাধারণ পরিষদে রাষ্ট্রপতি ট্রাম ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে চিন্তা করছিলাম। এখানে আমেরিকায় আপনি প্রেসিডেন্টকে মিস্টার হিসাবে ডাকতে পারেন লাইক মিস্টার ট্রাম বা জনাব রাষ্ট্রপতি অন্যান্য দেশে আপনাকে রয়াল হাইনেস / ইউর মেজেস্টি ইত্যাদি আহ্বান জানাতে হবে। বাংলাদেশে একজন রাষ্ট্রপতির নামে ডাকলে সম্ভবতঃ আপনাকে শাস্তি হিসাবে জেলে যেতে হবে। প্যারিস, বার্লিন, ফ্রাঙ্কফুট, ভিয়েনা, সিডনি, দিল্লি, কাঠমুন্ডুর আগে আমি অনেক দেশ অনেক বার ভ্রমণ করেছি। কিন্তু একটি মজার ব্যাপার আমি বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট শহর ভৈরব বেশী পছন্দ করেছি, এটি মেঘণা নদী জুড়ে এবং আমি সত্যিই উপভোগ করেছি । প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা যেতে পারে কিভাবে আমি এই বড় শহরে এতদিন ধরে বসবাস করছি, সহজ উত্তর আমি জানি না?
জ্যাকসন হাইটস থেকে শুরু করে ম্যানহাটান যেতে হবে আমাকে। ব্রডওয়ে / সিটি হল যেতে হবে ১১ টি স্টেশন পার করতে হবে এবং ভাড়া ২.৫০ ডলার এবং আমাকে দুটি ভিন্ন ট্রেন ই এবং # ৬ সাবওয়ে ট্রেন নিতে হবে। সাবওয়ে স্যান্ডউইচ দোকান এবং মেট্রোপলিটান রেলওয়ে সিস্টেমটিকে সাবওয়ে হিসাবে বলা হয়। অনেকে মিশিয়ে ফেলে। পার্কিং খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন, কাজেই বেশিরভাগ লোকেরা এখানে কাজ করার জন্য পাতাল রেলটি ব্যবহার করে । ভিড় প্রচুর মেট্রো কার্ড আগে কেটে রাখলে সুবিধা । তবে সুবিধাজনক হওয়ায় বেশিরভাগ সময় আমি ম্যানহাটন ব্যতীত অন্যান্য স্থানে নিজ গাড়ি ব্যবহার করি। গাড়ি চালানোর মজাই আলাদা যদি সেটা স্পোর্টস কার আর হাই ওয়ে হয় । আমি মাঝে মাঝে লং ড্রাইভে যাই এটা বড়ই উপভোগ্য ও অনেক কিছু দেখা যায় জানা যায়।
আমি যখন আমার স্টেশনে যেয়ে পৌঁছাই তখন এক ভদ্রমহিলা ও তার ১০ বছরের মেয়ে আমায় জার্মানি ভাষায় জিজ্ঞেস করে কিভাবে আপ টাউন হারলিম যাওয়া যায় । আমি অল্প জার্মানি জানি তা উজাড় করে দিয়ে এবং সাইন ব্যবহার করে বুঝাতে চাইলাম কিভাবে যাওয়া যায় । কতটকু বুঝেছে ওই জানে । ওকে আরো বলেছি নীচে নেমে প্লাটফর্মে গ্রিন বোতাম টিপলে কাষ্টমার সার্ভিস ওকে আরো সাহায্য করতে পারবে । সে গদগদ হয়ে আমায় বার বার ধন্যবাদ দিতে লাগলো । আমি জানি ভাষা না জানা থাকলে ভ্রমণে অনেক অসুবিধা হয়। আমার প্যারিস যেয়ে সে অভিজ্ঞতা হয়েছে । অসুবিধা আরো প্রকট হয় যদি ইংরেজি জেনেও নিজ ভাষার গৌরবে অন্য ভাষা না বলায় সাহায্য না করা । এটা অনেকের জন্য ভাল টিপস হতে পারে ।
আমার আজকের ভিজিট ম্যানহাটনে উকিলের কাছে যাওয়া রিয়েল এস্টেট ব্যাপারে যেটা আমি করি এবং পরিবার সাপোর্ট করি । আমার এপোয়েন্টমেন্ট ছিল দশটায় আমি পাঁচ মিনিট আগে আমি যেয়ে হাজির হই। এদেশের মানুষেরা কাজ পাগলা এবং কঠিন পরিশ্রম করতে জানে । যার জন্য অনেক ভিন্ন দেশীর বসবাস হওয়া সত্ত্বেও মিলেমিশে উন্নতির সোপানে উঠছে । আমার সাথে এক ঘন্টা আলাপ করলেন সমস্যা নিয়ে ও প্রয়োজনীয় উপদেশ দিলেন । ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপের পর আমার একটা কথা মনে হলো এরা কত আন্তরিক ও সাহায্যপ্রবণ । এদেশের তিনটি জিনিস এখনও বিশ্ব সেরা জাস্টিস ফর অল, হাইয়ার এডুকেশন সিষ্টাম ও উন্নত চিকিৎসা সেবা । এরজন্য কষ্ট দুঃখে এখনও আছি অনেক দিন।
আসার সময় নূতন বানানো ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার দেখে এলাম। বিধ্বস্থ এই ল্যান্ডমার্ক কত তাড়াতাড়ি বানিয়ে ফেললো । কত প্রাউড এরা তাদের অর্জনে না দেখলে বুঝা যাবেনা। ওয়াল স্ট্রীট পাশে কত বিদেশী বিনিয়োগ করছে যার ভ্যালু বেড়েই চলছে । আমি আরেকটু হেঁটে ওয়েস্ট সাইটে গেলাম। এলিস আইল্যান্ডে মশাল হাতে দাঁড়িয়ে আছে লেডি লিবার্টি । ফ্রান্সের দেওয়া এঈ গিফট আমরা কত আদরে জিইয়ে রেখেছি, দেখাচ্ছে আগতদের বিকন অফ হোপ !
” ই” ট্রেন ধরে আমি জাকসন হাইটস ফিরে এলাম । উপরে উঠে সেই পরিচিত জন নজরে এলো । পাশে ৭৩ স্ট্রীটের সেই পরিচিত দোকান পাট । খামার বাড়ি, হাটবাজার, ইত্যাদি, অবসর আরো কত কত নাম না জানা ব্যবসা । গর্ব আসে বাঙালিরা ভাল করছে ব্যবসায় । হাট বাজারে ঢুকে এক কাপ গরম কফি আর একটা সমচা নিলাম । গরম কফির ধোয়ায় ভেসে উঠলো চোখের সামনে আজকের নিউ ইয়র্ক শেখ হাসিনা আসছেন যেখানেই তিনি সেখানেই প্রতিরোধ । কালা ব্যাচ ধারণ । ভাবতে অবাক লাগে যখন দেখি অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এলে নাগরিকরা কত শ্রদ্বায় সম্মিলিতভাবে তাঁকে সম্মান দেখায় । হায়রে অভাগা দেশ , হায়রে আমরা মানুষ ! দোকানের সামনে রঙ-বেরঙের কাঠের বেরিয়ার লেখা পুলিশ লাইন ডু নট ক্রশ সারি সারি লাগানো । একজনকে জিজ্ঞেস করায় বললেন আজ শেখ হাসিনা আসছেন নাগরিক রিসেপসনে হাঙ্গামা হতে পারে ভয়ে এ ব্যবস্থা ।
উঠে এক ব্লক পরে নিজ বাসায় এলাম । নাবিকের ছেলে এ আমি ভালই তো আছি জীবন চলে যাচ্ছে । হাউস তখনি হোম হয় যখন তথায় শান্তি থাকে আমার তা আছে ইনশাল্লাহ…..! নিউ ইয়র্ক।
৯/২৩/২০১৮