এম এ সালাম
জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ‘মাদার অব হিউমিনিটি’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রে আগমনকে আমরা সাদর সম্ভাষণ জানাই। অভিনন্দন জানাই।
এই সেই জাতিসংঘ, যেখানে দাঁড়িয়ে আজ থেকে ৪৩ বছর আগে বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সারা বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে সর্বপ্রথম বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন।
যেহেতু ২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের মহান ভাষা দিবস, তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দিবসটিকে জাতিসংঘ ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঐক্যমতের সরকার প্রতিষ্ঠার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে আগমন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের সেই অধিবেশনে জননেত্রী শেখ হাসিনা পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। সেই সাথে অনুন্নত দেশগুলোর প্রতি অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করার জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। ইতিমধ্যে তিনি গোটা বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকেন, যার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কো জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ‘শান্তি পুরস্কারে’ ভূষিত করে। আর সে পুরস্কারটি তিনি গ্রহণ করেন ড. হেনরী কিসিঞ্জারের হাত থেকে, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ জন্মের বিরোধিতা করেছিলেন এবং বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে ব্যঙ্গ করেছিলেন। এটি ছিল প্রকৃতির এক নির্মম প্রতিশোধ। এ কারণে এ পুরস্কারটি বাঙালি জাতির জন্য অনেক বেশি গৌরবের।
এর কিছুকাল পর জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তিটি সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়। নেলসন ম্যান্ডেলা, প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী জন মেজর সবাই এর ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, জন মেজর সে সময় আক্ষেপ করে বলেছিলেন- এমন একটি চুক্তি যদি গ্রেট বৃটেন আইরিশদের সঙ্গে করতে সক্ষম হতো, তাহলে এটি হতো তার জন্য এক বিরাট সন্তুষ্টির বিষয়।
ঐ সময়ে ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি চুক্তি সম্পাদন ছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার আর এক প্রশংসনীয় কৃতিত্ব। এ চুক্তিটি যে খুব সহজে হয়েছে, এমনটা ভাববার অবকাশ নেই। এ প্রসঙ্গে একদিন গণভবনে তিনি আমায় বলেছেন যে, এ চুক্তির সময়ে তাঁর ভারত সফরের সপ্তাহ খানেক আগে, আমাদের তখনকার সময়ের পররাষ্ট্র সচিব ফারুখ সোবহানের নেতৃত্বে একটি টিম ভারতে প্রেরণ করা হয়। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ২দিন আগে ফারুখ সোবহান টেলিফোনে তাঁকে এ মুহূর্তে ভারত সফরে না যাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ তিনি জানান- ভারত মাত্র পাঁচ হাজার কিউসেক পানি দিতে সম্মত হয়েছে, কাজেই সে চুক্তি হবে না। জবাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফারুখ সোবহানকে সেখানে থাকার নির্দেশ দিলেন এবং তিনি এও বলে দিলেন- তিনি ভারত সফরে যাবেন এবং চুক্তিও হবে।
এই বলে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী দেব গৌড়াকে ফোন করে বললেন, আপনারা বড় দেশ, আর আমরা ছোট দেশ। আপনারা পানি দেবেন না এবং যুদ্ধ করে আমরা তা আদায়ও করতে পারবো না। কিন্তু আমার সাথে আমাদের জনগণ রয়েছে, তাই আমি চাইলে দেশের অর্ধেক মানুষ নিয়ে আগামীকাল আপনাদের বর্ডারে গিয়ে সমাবেশ করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী দেব গৌড়া তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে নির্ধারিত দিনে ভারত সফরের জন্য পুণরায় আমন্ত্রণ জানালেন। অপরদিকে পররাষ্টমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদও শ্রী জ্যোতিবসু এবং ইন্ধর কুমার গুজরালের সঙ্গে কথা বললেন। সত্যি সত্যি জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় পঁচিশ হাজার কিউসেক পানির নিশ্চয়তায় ভারতের সাথে পানি বন্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয় শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানালো।
জাতিসংঘের মিলেনিয়াম সামিট ছিল ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। সেই সামিটে যোগ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মিলেনিয়াম ডেভলাপমেন্ট গোল নির্ধারণে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। সেই সামিটে টেরোরিজমের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ববাসীকে একযোগে কাজ করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান জননেত্রী শেখ হাসিনা।
এরপরের বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জননেত্রী শেখ হাসিনা গোটা বিশ্বময় পিছিয়ে থাকা শিশুদের কল্যাণার্থে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তাঁর ভাষণের উল্লেখযোগ্য দিক ছিল No Child left behind.
জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের বেদনাবিধূর স্মৃতি আজও আমার মনে ভেসে ওঠে। সেদিনের অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতিসংঘের প্রথম বাংলায় ভাষণ যখন বড় পর্দায় প্রদর্শন করা হয়, তখন উপস্থিত কেউই কান্না সংবরণ করতে না পেরে হাতের তালু দিয়ে মুখ চেপে ধরে নিজেদেরকে সংবরণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও অশ্রু সংবরণে ব্যর্থ হন। সেদিন অশ্রুসজল দেখেছিলাম সেক্রেটারি জেনারেল কফি আনানকেও।
সেই অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নারী অধিকার এবং নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন। বাংলাদেশে নারীদের ক্ষমতায়নসহ নারী অধিকার নিশ্চিত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াস বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়।
যে কারণে RANDOLPH MANNOR কলেজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে PEARL S BUCK-এ ভূষিত করে। সেই অনুষ্ঠানে লিঞ্চবার্গের মেয়র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন- Sheikh Hasina I like to learn from you, how you accomodate women in your administration.’
ইতিমধ্যে BOSTON UNIVERSITY I BROWN UNIVERSITY জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানায় কী নোট স্পিকার হিসেবে। আর সেখানে মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কানাডার Kim Campbell. Global Peace-এর উপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনে Kim Campbell বলেছিলেন- Sheikh Hasina you are the example of yourself and you are the CHAMPION OF PEACE
জাতিসংঘের আরেকটি অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নারী অধিকার এবং নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করে গর্ভবর্তী মায়ের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ শিশু মৃত্যুর হার কমাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গর্ভবতী মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমাতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছে। যে কারণে জাতিসংঘের অধীনস্থ South Co-operation Award Comittee শেখ হাসিনাকে ÔSOUTH SOUTH AWARD-এ ভূষিত করে।
এরই মধ্যে ঈষরসধঃব ঈযধহমব-এর ভয়াবহতা গোটা বিশ্বময় মারাত্মক আকার ধারণ করে। জননেত্রী শেখ হাসিনা চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং পরবর্তী বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে উত্থাপণ করেন। সুস্থ পরিবেশ বহাল রেখে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করার জন্য গোটা বিশ্বকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিবেশ রক্ষায় সম্ভব সব রকমের উদ্যোগ গ্রহণ করে অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়।
বিশ্ব সম্প্রদায় পরিবেশ রক্ষায় শেখ হাসিনার জোরালো প্রচেষ্টায় মুগ্ধ হয়ে পরের বছর জাতিসংঘের অধিবেশনে তাঁকে ‘ঈঐঅগচওঙঘ ঙঋ ঞঐঊ ঊঅজঞঐ’ সম্মানে ভূষিত করে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতিসংঘ সদর দফতরে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ মিশন বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, বিশেষ অতিথি ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল বান কি মুন। সেদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা তথা জঙ্গিবাদ নিরসনে বিশ্ববাসীকে এক কাতারে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেছিলেন, স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যতীত আমরা কেউই মানসম্মত উন্নয়ন অর্জন করতে পারব না। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে বিশ্বের যে কোন দেশে শান্তি বিঘ্নিত হলে তা গোটা মানবজাতির জন্য হুমকি স্বরূপ। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের অনমনীয় নীতির কথাও তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে তুলে ধরেন। মিলেনিয়াম ডেভলাপমেন্ট গোল অর্জনের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে ১৫ বছরের জন্য একটি ভারসাম্যমূলক কর্মসূচি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন- বাঙালি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী জাতি। তিনি সামাজিক ন্যায়বিচার, দারিদ্র্য, ক্ষুধা, আগ্রাসন ও বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তাঁর অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের উন্নয়ন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের সেনা সদস্য এবং বংলাদেশের অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
ইউনেস্কো মহাপরিচালক এরিনা বোকোভা সেদিন বলেছিলেন- ৪০ বছর আগে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের ইতিহাসে সবচেয়ে জোরালো ভাষণ দিয়েছিলেন।
সেখানে উপস্থিত সব কূটনীতিক জননেত্রী শেখ হাসিনার গ্লোবাল পীস কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন সেদিন।
এদিকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মিলেনিয়াম ডেভলাপমেন্ট গোল বাস্তবায়নে বিশেষ অগ্রগতি সাধন করে। বিশ্বব্যাপী মিলেনিয়াম ডেভলাপমেন্ট গোল বাস্তবায়নের উপর তিনি অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে বলতে গেলে তদারকী করছিলেন। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী অগ্রগতির সমস্ত তথ্য নিয়ে পরের বছরের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অর্থাৎ ২০১৬ সালে, তিনি Sustainable Development গোল নির্ধারণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
এরই মধ্যে বিশ্বশান্তি, নারীর ক্ষমতায়ন এবং গার্লস Education-এ ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য ইউনেস্কা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে PEACE TREE এওয়ার্ডে ভূষিত করে।
ইদানিংকালের সবচেয়ে উদ্বেগজন ঘটনা বাংলাদেশকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদেরকে আশ্রয় দেন মানবতাবাদী নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। মায়ের মমতা নিয়ে তিনি তাদের পাশে দাঁড়ান। টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছি তিনি যখন ৮০ বছরের বৃদ্ধাকে বুকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন, বৃদ্ধা তখন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছিলেন মাগো তুমি আমাদেরকে আশ্রয় দিয়েছ। মহান আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন। রোহিঙ্গাদের প্রতি তাঁর সহানুভূতি এবং মাতৃসুলভ ভূমিকার কারণে আজ তিনি বিশ্ববাসীর কাছে MOTHER OF HUMINITY.যা বাঙালি জাতিকে গৌরবান্বিত করেছে।
এ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন ২০১৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে। অবিলম্বে মিয়ানমারে গণহত্যা বন্ধ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। জাতিসংঘে তিনি তাঁর ভাষণে সুস্পষ্টভাবে বলেছিলেন- They must leave Safely with Honour and Dignity.
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমুদ্র বিজয় থেকে মহাকাশে উন্নয়নের সব ক্ষেত্রেই আজ বাংলাদেশের সাফল্য বিদ্যমান। অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ আজ বিশ্ববাসীর কাছে উদাহরণ।
এসব কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর অনেক বেশি আশাবাদী। কারণ শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি এখন বিশ্ব নেতা। তাই জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জননেত্রী শেখ হাসিনা কী বলেন, সে নিয়ে আগ্রহ বেশি এখন বিশ্ববাসীর। একদিকে বাংলাদেশের কাঁধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারসাম্যহীন বক্তব্য এবং পদক্ষেপ গোটা বিশ্ব রাজনীতিকে অস্থির করে তুলেছে। যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ, যার প্রভাব আন্তর্জাতিক অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশ্ববাসীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ PARIS CLIMATE ACCORD-এ যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কেটে ফেলেছেন।
এসব কারণে জাতিসংঘের এবারকার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের দিকে চেয়ে আছে গোটা বিশ্ব। এবারকার অধিবেশনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন, নারী অধিকার, শিশু শ্রম, ক্লাইমেট চেইঞ্জের ভয়াবহতাসহ জঙ্গিবাদ মুক্ত নিরাপদ আবাসযোগ্য বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাবেন, এমন প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।
লেখক : যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।